Ajker Patrika

রামমন্দিরে ‘বড় দান মেরেছে’ পকেটমারেরা

আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ২০: ০৩
রামমন্দিরে ‘বড় দান মেরেছে’ পকেটমারেরা

ভারতের অযোধ্যায় গতকাল সোমবার আলোচিত রামমন্দির উদ্বোধন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মন্দির এলাকায় উপস্থিত হয়েছিলেন হাজার হাজার রামভক্ত। ছিল একদল পকেটমারও। মন্দিরের প্রবেশপথগুলোতে বিপুল জনসমাগমের সুযোগ নিয়েছে তারা। আগত নারী-পুরুষের হাতব্যাগ এবং পকেটই ছিল তাদের টার্গেট। এতে টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান সামগ্রী হারিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন অসংখ্য মানুষ।

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়াও হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সোমবার নবনির্মিত রামমন্দিরে প্রাণ-প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন সকাল ৭টা থেকে মন্দির প্রাঙ্গণ উন্মুক্ত করে দেওয়া হলেও ‘বালক রামের’ প্রতিমূর্তি দেখতে শেষরাত পর্যন্ত প্রবেশপথগুলো দিয়ে দলে দলে মানুষকে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।

মন্দিরের তীর্থযাত্রায় যোগ দিতে কানাডা থেকে এসেছিলেন পূর্ণিমা নামে এক সনাতন ধর্মাবলম্বী। অনেক ঝড়-ঝাপটা অতিক্রম করে তিনি বালক রামের মূর্তি দেখতে সক্ষম হন। তবে সেই আনন্দ উদ্‌যাপনের আগেই আবিষ্কার করেন—তাঁর হাতব্যাগ থেকে থাকা টাকা-পয়সা সব হাওয়া! তিনি দেখতে পান, ব্যাগটি কেউ ব্লেড দিয়ে সূক্ষ্মভাবে কেটে ফেলেছে। আর নিয়ে গেছে, টাকা-পয়সা থেকে শুরু করে মূল্যবান নানা জিনিসপত্র।

কাটা ব্যাগ দেখিয়ে এনডিটিভিকে পূর্ণিমা বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি, বিপুলসংখ্যক মানুষের তীর্থযাত্রাকে সামাল দেওয়ার সামর্থ্য কর্তৃপক্ষের নেই। এ ক্ষেত্রে চোরদেরই তীর্থযাত্রীদের রেহাই দিতে হবে।’

পূর্ণিমা জানান, তিনি খুব সাবধানতার সঙ্গেই ভ্যানিটি ব্যাগটি আগলে রেখেছিলেন। তারপরও চোরেরা তাদের কর্মটি করে ফেলেছে।

শুধু পূর্ণিমাই নন, আহমেদাবাদ থেকে প্রাপ্তি নামে তাঁর এক বন্ধু সঙ্গী হয়েছিলেন। প্রাপ্তির সঙ্গে ছিল একটি পার্শ্ব ব্যাগ। তিনি দেখতে পান, তাঁর পার্শ্ব ব্যাগের চেইনটি খোলা। আর এর ভেতরে থাকা তাঁর আধার কার্ড, এটিএম কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে শুরু করে দরকারি আরও অনেক কাগজপত্র উধাও! এখন তিনি ভয়ে আছেন এই ভেবে যে—এই নথিগুলো অন্যায় কাজে ব্যবহার করতে পারে চোরেরা। প্রাপ্তি বলেন, ‘আমি আমার ব্যাগটিকে খুব সাবধানেই রেখেছিলাম। কীভাবে যে এর চেইন খুলল আর কাগজপত্র নিয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না।’

সোমবার সকাল থেকে শেষরাত পর্যন্ত রাম মন্দিরের প্রবেশপথগুলোতে বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিড় দেখা গেছে।এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন এমন আরও বেশ কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয় এনডিটিভি। স্থানীয়রা ধারণা করছেন, জনসমাগমকে টার্গেট করে অন্য কোনো শহর থেকে অযোধ্যায় এসেছিল একটি অপরাধী চক্র। তারাই এসব চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে।

প্রাপ্তি বলেন, ‘আমরা ১৬ জানুয়ারি থেকে অযোধ্যায় আছি। এই চোরেরা অযোধ্যার নয়। এখানকার অটোচালক, বাসচালক এবং ক্যাবচালকেরা অত্যন্ত সৎ। আমরা তাঁদের কাছে আমাদের লাগেজ রেখে নানা কাজ করেছি, কিন্তু কিছুই খোয়া যায়নি। পকেটমারেরা কেউ এই এলাকার নয়।’

এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান প্রাপ্তি। কারণ মন্দিরকে কেন্দ্র করে এখন অযোধ্যায় প্রায় সময়ই উপচে পড়া মানুষের ভিড় দেখা যাবে।

অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে অযোধ্যায় আসা কল্যাণ নামের এক ব্যক্তিও পকেটমারের শিকার হয়েছিলেন। ভিড়ের মধ্য থেকে তাঁর মানিব্যাগটি চুরি হলে স্থানীয় একটি সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ নথিভুক্ত করেন তিনি। সেই সাইবার ক্যাফের মালিক বিনোদ জানিয়েছেন, শুধু তাঁর দোকানেই কমপক্ষে ২০ জন মানুষ এ ধরনের অভিযোগ নথিভুক্ত করে গেছেন। তাঁদের কারও টাকা খোয়া গেছে, কারও মানিব্যাগ আবার কারও মোবাইল ফোনও। বিনোদ বলেন, একটি চোরের চক্র এখানে এসেছে এবং মানুষদের টার্গেট করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত