Ajker Patrika

৫৭ বছর আগের অমীমাংসিত খুনের মামলায় ফেঁসে গেলেন এক ব্রিটিশ

অনলাইন ডেস্ক
ছবি: দ্য টাইমস
ছবি: দ্য টাইমস

যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী অমীমাংসিত একটি খুনের মামলার বিচার শেষ হলো আধুনিক ডিএনএ প্রযুক্তির কল্যাণে। ১৯৬৭ সালে লুইসা ডান নামে এক বিধবাকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন রাইল্যান্ড হেডলি নামে ৯২ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। বলা হচ্ছে, যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সম্ভবত রাইল্যান্ডই সবচেয়ে বেশি বয়সে খুনের সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি।

সোমবার দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরের পর বছর ধরে একজন ভদ্র ও বিনয়ী বৃদ্ধ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া রাইল্যান্ড ছিলেন আসলে একজন সিরিয়াল যৌন অপরাধী। ১৯৭০-এর দশকে দুটি ধর্ষণের ঘটনায় তিনি দোষও স্বীকার করেছিলেন এবং আরও ১০টি চুরির ঘটনার জন্য তিনি জবাবদিহি করেছিলেন। যদিও সেই সময় লুইসা ডানের খুনি হিসেবে তাঁকে কেউ সন্দেহও করেনি।

১৯৬৭ সালের ২৮ জুন ব্রিস্টলের নিজ বাড়িতে লুইসা ডানের মৃতদেহ অর্ধনগ্ন অবস্থায় প্রতিবেশীরা খুঁজে পেয়েছিলেন। তদন্তে তাঁর শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেলেও, সেই সময়টিতে সীমিত ফরেনসিক প্রযুক্তি এবং এলোমেলোভাবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহের কারণে অপরাধী ধরা পড়েননি।

তবে ২০২৩ সালে একটি পুনর্বিবেচনায় সংরক্ষিত আলামতের একটি বাক্স থেকে হত্যাকাণ্ডের সময় লুইসার পরনে থাকা নীল স্কার্ট ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়। তবে এতে থাকা শুক্রাণু থেকে পাওয়া ডিএনএ পরীক্ষা করে অপরাধীকে শনাক্ত করা ছিল একটি অসম্ভব কল্পনা। অবশেষে সেই অসম্ভবই সম্ভব হলো। রাইল্যান্ড হেডলির সঙ্গে মিলে যায় নমুনায় থাকা ডিএনএ। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ হেডলিকে শনাক্ত করে এবং ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর তাঁকে সাফোকের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।

বিচারে প্রকাশ পেয়েছে, হেডলি ১৯৫৬ সালে জ্যামাইকার কিংস্টন থেকে ব্রিটেনে এসে জীবন শুরু করেছিলেন। তিনি এক নার্সকে বিয়ে করে তিন সন্তানসহ শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের ছদ্মবেশে ছিলেন। কিন্তু ১৯৭৭ সালে ৮৪ ও ৭৯ বছর বয়সী দুই নারীকে ধর্ষণের দায়ে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। এরপরও প্রতিবেশীদের কাছে তিনি রয়ে গিয়েছিলেন একজন ‘সপ্রতিভ বৃদ্ধ’ হিসেবেই। তাঁদের কেউ কেউ তাঁকে ‘রাইলি’ নামেই চিনতেন।

অবশেষে লুইসা খুনের বিচার চলাকালীন ব্রিস্টলের ক্রাউন আদালতে রাইল্যান্ড হেডলি ছিলেন নিশ্চুপ। ডিএনএ প্রমাণই ছিল প্রসিকিউশনের মূল ভরসা। এক দশক আগে অন্য একটি মামলায় রাইল্যান্ডের ডিএনএ সংরক্ষিত হয়েছিল, যা এই তদন্তে কাজে আসে।

ডিটেকটিভ ইনস্পেক্টর ডেভ মার্চেন্ট বলেন, ‘যদি আমরা এই মামলা আবার না খুলতাম, রাইল্যান্ড তাহলে কখনো বিচারের সম্মুখীন হতেন না। লুইসার জীবিত নাতনি কখনোই উত্তর পেতেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা ভাবছেন সময়ের সঙ্গে সবকিছু ঢাকা পড়ে যায়—তাদের বলি, আমরা আপনাদের জন্যই ফিরছি।’

এই মামলার আগে যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সে খুনের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছিলেন পিটার কিন্ডেল। ৮০ বছর বয়সে তিনি তাঁর প্রতিবেশীকে হত্যার দায়ে দণ্ডিত হন। রাইল্যান্ড হেডলি সেই রেকর্ডও ভেঙে দিয়ে অপরাধ ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় যুক্ত করলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্বে চাকরির বাজারে কম দামি ১২ ডিগ্রি, কদর বাড়ানোর উপায় কী

তোমার অন্যায়ে জেনো এ অন্যায় হয়েছে প্রবল

পোশাক কারখানায় রাতভর নির্যাতনে ইলেকট্রিশিয়ানের মৃত্যু, সহকর্মী গ্রেপ্তার

ভাটারা থেকে নিখোঁজ এইচএসসি পরীক্ষার্থী মাহিরা সাভার থেকে উদ্ধার

চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণ, অভিযোগ শ্রমিক-ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত