Ajker Patrika

ভাগনার বিদ্রোহের সময় মুখ ফসকানো কথা কাল হতে পারে পুতিনের

আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৩, ১১: ৩৩
ভাগনার বিদ্রোহের সময় মুখ ফসকানো কথা কাল হতে পারে পুতিনের

ভাড়াটে ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহ থামানোর জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নানামুখী প্রচেষ্টায় এমন একটি ভুল ছিল, যা তাঁকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসিয়ে দিতে পারে। আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি কথার মধ্য দিয়ে ভাগনার গ্রুপের দ্বারা সংগঠিত সব যুদ্ধাপরাধের দায় রাষ্ট্র ও নিজের ওপর নিয়ে নিয়েছেন পুতিন। বিষয়টি তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মামলা করা সহজ করে তুলেছে। 

এ বিষয়ে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের নেতৃত্বে ভাগনার গ্রুপ যখন বিদ্রোহ ঘোষণা করে, পুতিন তখন বলেছিলেন, ওই ভাড়াটে দলটির যাবতীয় খরচ বহন করে রুশ কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, পুতিন জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের শুধু মে মাসেই রুশ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৮৬ বিলিয়ন রুবল বা এক বিলিয়নেরও বেশি ডলার গ্রহণ করেছে ভাগনার গ্রুপ। 

পুতিনের মুখ থেকে বেরোনো এই কথাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে ভাগনার গ্রুপকে শান্ত করার জন্য হলেও এর মধ্য দিয়ে তিনি অনেক বড় ভুল করেছেন বলে মনে করেন আইনের অধ্যাপক ফিলিপ্পে স্যান্ডস। আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের উৎস অনুসন্ধান বিষয় ‘ইস্ট ওয়েস্ট স্ট্রিট’ বইটি তাঁরই লেখা। 

ফিলিপ্পের মতে, মুখ ফসকে বলা কথার মধ্য দিয়ে রুশ রাষ্ট্রের নেতা হিসেবে ভাগনার গ্রুপের দ্বারা সংগঠিত সব অপরাধের দায় পুতিন নিজের কাঁধে নিয়েছেন। 

২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভাগনার গ্রুপের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ সংগঠনের নানা অভিযোগ জমতে থাকে। জাতিসংঘের তদন্তেও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে এই গ্রুপের সদস্যরা যুদ্ধাপরাধ করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভাগনার গ্রুপের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়গুলো সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন পুতিন। 

২০১৮ সালে সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর মাথাব্যথার কারণ হয়েছিল ভাগনার যোদ্ধারা। সে সময়ও দলটির সঙ্গে কোনো ধরনের সংযোগ থাকার অভিযোগকে নাকচ করেছিল মস্কো। 

অক্সফোর্ডের আইনবিষয়ক অধ্যাপক ড্যাপো আকন্দে মত দিয়েছেন—ওয়াগনারকে অর্থ সরবরাহ করায় এই দলের সব অপকর্মের দায় পুতিন কিংবা রাশিয়ার ওপর বর্তাবে তা নয়। তবে বিষয়টি অনেক বড় একটি মামলার ছোট অংশ হতে পারে। 

যুদ্ধাপরাধের জন্য আধা সামরিক বাহিনীকে দোষী সাব্যস্ত করার নজির থাকলেও এখন পর্যন্ত এর জন্য কোনো রাষ্ট্রকে দায়ী করা হয়নি। ১৯৯৫ সালে বসনিয়ান মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগে একটি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল সার্বিয়ান মিলিশিয়াদের। আর সার্বিয়াকে শুধু গণহত্যা প্রতিরোধে ব্যর্থতার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। 

এ বিষয়ে ফিলিপ্পে স্যান্ডস বলেন, ‘অভিযুক্ত মিলিশিয়াদের সঙ্গে সার্বিয়ান কর্তৃপক্ষের সরাসরি যোগাযোগের বিষয়টি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন আদালত।’ 

তবে পুতিনের মুখ ফসকানো মন্তব্যটি ভবিষ্যতে যুদ্ধাপরাধবিষয়ক মামলায় আদালতের এ ধরনের সীমাবদ্ধতাকে দূর করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুর জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আটক

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন

ডিউটিতে ইনচার্জ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ডিএমপি

বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাবি রেজিস্ট্রারকে অপসারণের আলটিমেটাম

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিল্লিতে বিস্ফোরণ: আটক ২, তিন ঘণ্টা ধরে ঘটনাস্থলে ছিল গাড়িটি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ২৩
দিল্লিতে বিস্ফোরণ: আটক ২, তিন ঘণ্টা ধরে ঘটনাস্থলে ছিল গাড়িটি

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির লালকেল্লার কাছে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, বিস্ফোরণের আগে গাড়িটি অন্তত তিন ঘণ্টা ধরে ঘটনাস্থলে অবস্থান করছিল।

দিল্লি পুলিশের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের নাম সালমান ও দেবেন্দর। দুজনই অতীতে বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হুন্দাই আই-২০ গাড়িটির মালিক ছিলেন। গাড়িটির বিক্রির পুরো ইতিহাস এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে, যাতে সূত্র খুঁজে পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

তদন্তকারীরা এখনো নিশ্চিত করেননি, এটি সন্ত্রাসী হামলা ছিল কি না। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘সব দিক থেকেই তদন্ত চলছে।’

গাড়ির মালিকানা নিয়ে তদন্ত

হরিয়ানার গুরগাঁও পুলিশের মুখপাত্র সন্দীপ কুমার বলেন, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত গাড়িটি প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দা সালমানের নামে নিবন্ধিত ছিল। এটি ২০১৩ সালের সাদা রঙের গাড়ি।

তিনি বলেন, ‘প্রায় দেড় বছর আগে সালমান গাড়িটি দিল্লির ওখলা এলাকার বাসিন্দা দেবেন্দরের কাছে বিক্রি করেন। আমরা সালমানকে দিল্লি পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।’

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, দেবেন্দরকেও আটক করা হয়েছে। উভয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে পরবর্তী বিক্রির ধাপগুলো জানতে এবং পুরো মালিকানা-শৃঙ্খল স্পষ্ট করতে।

গুরগাঁও পুলিশের মুখপাত্র আরও জানান, গাড়িটি পরে অম্বালার কারও কাছেও বিক্রি করা হয়েছিল বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। তবে বিস্তারিত এখনো সংগ্রহ করা হচ্ছে।

সালমানের স্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আর্থিক সমস্যার কারণে তাঁদের পরিবার গাড়িটি বিক্রি করতে বাধ্য হয়। সালমান গুরগাঁওয়ের শান্তিনগরে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে থাকেন।

বিস্ফোরণটি ঘটে রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে, লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে সুবাস মার্গের ট্রাফিক সিগন্যালে। ঘটনাস্থলে মুহূর্তেই আগুন ধরে যায়, আশপাশে থাকা গাড়িগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে। মৃতদেহ ও ধ্বংসাবশেষে ভরে যায় রাস্তাটি। আহত ব্যক্তিদের লোডলি নিয়াজি জয়প্রকাশ (এলএনজেপি) হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘হুন্দাই আই-২০ মডেলের গাড়িটিই বিস্ফোরিত হয়েছে। আমরা সব সম্ভাবনাই বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি। ফলাফল জনগণের সামনে আনা হবে।’

এদিকে প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সাদা রঙের ওই হুন্দাই আই-২০ গাড়িটি বেলা ৩টা ১৯ মিনিটে লালকেল্লার পার্কিং লটে প্রবেশ করে এবং প্রায় তিন ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে বেরিয়ে যায়। গাড়িটির নম্বর ছিল এইচআর ২৬সিই ৭৬৭৪।

একটি ছবিতে দেখা যায়, চালকের হাত জানালার বাইরে রাখা অবস্থায় গাড়িটি পার্কিং লটে ঢুকছে। অন্য একটি ছবিতে দেখা যায়, গাড়িটি রাজধানীর ব্যস্ত রাস্তায় চলাচল করছে।

ফরেনসিক প্রমাণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দিল্লি পুলিশ ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন ইউএপিএ (Unlawful Activities Prevention Act) অনুযায়ী মামলা দায়ের করেছে।

বিস্ফোরণের পর দিল্লি ও আশপাশের রাজ্যগুলো—মুম্বাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, জয়পুর, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, হায়দরাবাদ, উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখন্ডে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আজ দ্বিতীয় ও শেষ দফার ভোট গ্রহণ চলা বিহারেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

একই দিনে রাজধানী থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার ফারিদাবাদে ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়, যা পুরো ঘটনায় নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুর জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আটক

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন

ডিউটিতে ইনচার্জ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ডিএমপি

বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাবি রেজিস্ট্রারকে অপসারণের আলটিমেটাম

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সমলিঙ্গ বিবাহ বৈধ করার রায় বাতিলের আবেদন খারিজ মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২০১৯ সালের অক্টোবরে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের সামনে এলজিবিটিকিউ সমর্থকেরা তাঁদের পতাকা উড়িয়েছিলেন। ছবি: এপির সৌজন্যে
২০১৯ সালের অক্টোবরে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের সামনে এলজিবিটিকিউ সমর্থকেরা তাঁদের পতাকা উড়িয়েছিলেন। ছবি: এপির সৌজন্যে

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট দেশজুড়ে সমলিঙ্গ বিবাহ বৈধ করার রায় বাতিলের একটি আহ্বান নাকচ করে দিয়েছেন। বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার আদালত কোনো মন্তব্য না করেই কেনটাকির সাবেক কোর্ট ক্লার্ক কিম ডেভিসের করা আবেদন খারিজ করে দেন।

‘ওবারফেল বনাম হজেস’ নামে পরিচিত ওই মামলার নথি থেকে জানা যায়, কেনটাকির সাবেক কোর্ট ক্লার্ক কিম ডেভিস ২০১৫ সালে এক সমলিঙ্গ দম্পতির বিবাহের লাইসেন্স দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে ওই দম্পতি মামলা করলে সুপ্রিম কোর্ট কিম ডেভিসকে ৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ ও আইনজীবীর ফি পরিশোধের নির্দেশ দেন। এর পাশাপাশি আদালতের আদেশ অবমাননার দায়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

হিউম্যান রাইটস ক্যাম্পেইনের সভাপতি কেলি রবিনসন আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজ সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছেন, অন্যদের সাংবিধানিক অধিকার অস্বীকার করার পরিণতি ভোগ করতেই হবে।’

২০১৫ সালে কিম ডেভিস দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন কেনটাকির রোয়ান কাউন্টিতে সমলিঙ্গ দম্পতিদের বিবাহ লাইসেন্স দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে। তিনি দাবি করেন, তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে তিনি আদালতের নির্দেশ মানতে পারছেন না।

ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তাঁকে আদালত অবমাননার দায়ে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তাঁর অফিসের অন্য কর্মীরা তাঁর অনুপস্থিতিতে লাইসেন্স দেওয়া শুরু করলে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।

এরপর কেনটাকি রাজ্য একটি আইন পাস করে, যাতে রাজ্যের সব কোর্ট ক্লার্কের নাম বিবাহ লাইসেন্স দেওয়ার কাজ থেকে বাদ দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুর জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আটক

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন

ডিউটিতে ইনচার্জ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ডিএমপি

বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাবি রেজিস্ট্রারকে অপসারণের আলটিমেটাম

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাল কেল্লায় তৃতীয়, ১৯৯৭ সালের পর দিল্লিতে সন্ত্রাসী হামলার ফিরিস্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লা। ছবি: সংগৃহীত
দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লা। ছবি: সংগৃহীত

দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লার কাছে একটি গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় ১৩ জন নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতই বেশি ছিল যে আশপাশের তিন থেকে চারটি গাড়িতেও আগুন ধরে যায়।

এটি ১৯৯৭ সালের পর থেকে লাল কেল্লা এলাকায় ঘটে যাওয়া তৃতীয় বিস্ফোরণ। ভারতের রাজধানী দিল্লি গত দুই দশকে বহুবার ভয়াবহ হামলার শিকার হয়েছে। কখনো জনাকীর্ণ বাজার, কখনো আদালত এলাকা—সব জায়গাতেই ভয় ছড়িয়েছে এসব বিস্ফোরণ।

নিচে দিল্লিতে ১৯৯৭ সালের পর থেকে ঘটে যাওয়া বড় বড় বিস্ফোরণের ঘটনার একটি সময়রেখা তুলে ধরা হলো—

৯ জানুয়ারি ১৯৯৭: দিল্লি পুলিশের সদর দপ্তরের বিপরীতে আইটিও এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে ৫০ জন আহত হয়।

১ অক্টোবর ১৯৯৭: সদর বাজার এলাকায় একটি শোভাযাত্রার কাছে দুটি বিস্ফোরণে ৩০ জন আহত হয়।

১০ অক্টোবর ১৯৯৭: শান্তিবন, কৌরিয়া পুল ও কিংসওয়ে ক্যাম্প এলাকায় তিন দফা বিস্ফোরণে ১ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়।

১৮ অক্টোবর ১৯৯৭: রানীবাগ বাজারে দুই দফা বিস্ফোরণে ১ জন নিহত এবং ২৩ জন আহত হয়।

২৬ অক্টোবর ১৯৯৭: করোলবাগ বাজারে দুই দফা বিস্ফোরণে ১ জন নিহত এবং ৩৪ জন আহত হয়।

৩০ নভেম্বর ১৯৯৭: লাল কেল্লা এলাকার দুই দফা বিস্ফোরণে ৩ জন নিহত এবং ৭০ জন আহত হয়।

৩০ ডিসেম্বর ১৯৯৭: পাঞ্জাবিবাগ এলাকায় একটি বাসে বোমা বিস্ফোরণে ৪ জন নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়।

২৬ জুলাই ১৯৯৮: কাশ্মীরি গেট আইএসবিটিতে (ইন্টার-স্টেট বাস টার্মিনাল) পার্ক করা বাসে বিস্ফোরণে ২ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়।

১৮ জুন ২০০০: লাল কেল্লার কাছে দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণে এক শিশুসহ ২ জন নিহত এবং এক ডজনের বেশি আহত হয়।

২২ মে ২০০৫: দিল্লির দুটি সিনেমা হলে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে ১ জন নিহত এবং ৬০ জন আহত হয়।

২৯ অক্টোবর ২০০৫: দিল্লির সরোজিনী নগর, পাহারগঞ্জ বাজার এবং গোবিন্দপুরীর একটি বাসে তিন দফা বিস্ফোরণে ৫৯ জন নিহত এবং ১০০ জনের বেশি আহত হয়। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন বিদেশিও ছিলেন।

১৪ এপ্রিল ২০০৬: পুরান দিল্লির জামা মসজিদ প্রাঙ্গণে দুটি বিস্ফোরণে ১৪ জন আহত হয়।

১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৮: রাজধানীর কনট প্লেস, করোলবাগের ঘাফফার মার্কেট এবং গ্রেটার কৈলাশ এলাকায় ৪৫ মিনিটের ব্যবধানে পাঁচ দফা ধারাবাহিক বিস্ফোরণে ২৫ জন নিহত এবং ১০০ জনের বেশি আহত হয়।

২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৮: মেহরাউলি ফুল মার্কেটে কম তীব্রতার বিস্ফোরণে ৩ জন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়।

২৫ মে ২০১১: দিল্লি হাইকোর্টের বাইরে গাড়ি পার্কিং এলাকায় ছোট আকারের একটি বিস্ফোরণ ঘটে, তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুর জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আটক

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন

ডিউটিতে ইনচার্জ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ডিএমপি

বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাবি রেজিস্ট্রারকে অপসারণের আলটিমেটাম

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তুমুল হট্টগোলে পাকিস্তানের সংবিধান সংশোধন, সেনাপ্রধান আসিম মুনির আরো ক্ষমতাধর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

তুমুল হট্টগোল, স্লোগান, কাগজ ছোড়া ও ওয়াকআউটের মধ্যে পাকিস্তান সিনেটে সোমবার পাস হয়েছে বিতর্কিত ২৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল। মোট ৯৬ সদস্যবিশিষ্ট উচ্চকক্ষে ৬৪ জন সিনেটর বিলটির পক্ষে ভোট দেন, ফলে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিলটি সহজেই গৃহীত হয়।

এই ভোটে সরকারের জোটসঙ্গীদের পাশাপাশি বিরোধী শিবিরের দুই সদস্য ভিন্নমত দিয়ে সরকারের পক্ষে ভোট দেন, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করে। ভোটাভুটির আগে বিরোধী বেঞ্চে প্রবল বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়; তারা বিলের কপি ছিঁড়ে আইনমন্ত্রীর টেবিলের দিকে ছুড়ে দেন এবং ‘গণতন্ত্র হত্যার প্রতিবাদে’ স্লোগান তুলতে থাকেন।

বিক্ষোভ শেষে বেশিরভাগ বিরোধী সদস্য সিনেট চেম্বার থেকে ওয়াকআউট করেন, ফলে বিলটি পাসে আর কোনো বাধা থাকেনি।

বিলটি সিনেটে উপস্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার, আর অধিবেশন পরিচালনা করেন সিনেট চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ রজা গিলানি। ধারা-ধারাভিত্তিক ভোটের পর প্রোটোকল অনুযায়ী সিনেটের প্রবেশদ্বার বন্ধ রেখে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়।

সংশোধনীর মূল বিষয়গুলো সংক্ষেপে—

‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্স’ নামে নতুন পদ সৃষ্টি হবে, কার্যকর ২০২৫ সালের ২৭ নভেম্বর থেকে।

সেনাপ্রধান একই সঙ্গে ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ পদে দায়িত্ব পালন করবেন।

ফিল্ড মার্শাল, মার্শাল অব দ্য এয়ারফোর্স, অ্যাডমিরাল অব দ্য ফ্লিট উপাধি আজীবন বহাল থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেসের’ সুপারিশে ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডার নিয়োগ দেবেন।

‘ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্ট’ নামে নতুন আদালত গঠন হবে।

আদালতে সব প্রদেশের সমান প্রতিনিধিত্ব থাকবে।

বিচারপতি নিয়োগে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা বাড়বে।

সুপ্রিম কোর্টের কিছু এখতিয়ার নতুন আদালতে স্থানান্তর হবে।

রাষ্ট্রপতি আজীবনের জন্য ফৌজদারি দায়মুক্তি পাবেন।

বিতর্কিত ধারাগুলো ও কমিটির প্রস্তাব

আইন ও বিচারবিষয়ক যৌথ সংসদীয় কমিটির (যা বিরোধী দল বয়কট করে) প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিলটিতে কয়েকটি ছোট সংশোধন আনা হয়। কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর ফারুক এইচ. নাইক জানান, প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী একটি ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত গঠনের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আদালতে সব প্রদেশের সমান প্রতিনিধিত্ব থাকবে এবং ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকেও একজন সদস্য যুক্ত হবেন।

কমিটি অন্যতম সিদ্ধান্ত ছিল, হাইকোর্টে পাঁচ বছর বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তিরাই এ আদালতে মনোনীত হতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্ট থেকে কেউ নিয়োগ পেলে তাঁর জ্যেষ্ঠতা অপরিবর্তিত থাকবে।

বিলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হলো— সংবিধানে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিল্ড মার্শাল পদ অন্তর্ভুক্ত করা। এর ফলে তিন বাহিনীর (সেনা, নৌ ও বিমান) জন্যই আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচ তারকা জেনারেলের পদ সৃষ্টির সাংবিধানিক ভিত্তি তৈরি হলে। সংশোধনীর ফলে সেনাপ্রধান আসিম মুনির সর্বেসর্বা ক্ষমতার অধিকারী হলেন।

পিটিআই থেকে সাইফুল্লাহ আবরোর নাটকীয় পদত্যাগ

বিল পাসের পরপরই পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের সিনেটর সাইফুল্লাহ আবরো নিজের আসন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। ভোট দেওয়ার পর তিনি বলেন, ‘আমি শুধু সৈয়দ জেনারেল আসিম মুনিরের জন্যই ভোট দিয়েছি। তিনি ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ জিতে জাতিকে গর্বিত করেছেন।’

তিনি দাবি করেন, ২৬তম সংশোধনের সময় তাঁর পরিবারের ১০ সদস্য অপহৃত হয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর দল কোনো সহায়তা দেয়নি। পদত্যাগের পর সিনেট চেয়ারম্যান গিলানি বলেন, ‘আমরা আপনাকে আবার সিনেটর করব।’

‘ঐতিহাসিক বিল’ বলে দাবি সরকারের

বিল পাস হওয়ার পর উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার একে ‘ঐতিহাসিক বিল’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘এটি ২০০৬ সালের চার্টার অব ডেমোক্রেসির অসমাপ্ত এজেন্ডা। বিচার বিভাগের ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে সাংবিধানিক আদালত গঠন অত্যন্ত জরুরি ছিল।’

দার আরও বলেন, ‘ফিল্ড মার্শালের পদ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সামরিক নেতৃত্বের কাঠামো এখন আরও স্পষ্ট হলো। এতে বর্তমান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সিনিয়রিটি বা প্রধান বিচারপতির অবস্থানে কোনো প্রভাব পড়বে না।’

বিরোধীদের ক্ষোভ

পিটিআই সিনেটর আলি জাফর গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা এই সংশোধনের বিরোধিতা করব, কারণ কেউই—যে-ই হোক—আইন থেকে দায়মুক্তি পেতে পারে না। যদি কেউ অপরাধ করে, সে প্রেসিডেন্ট হোক বা গভর্নর, তার বিচার হওয়া উচিত।’

তবে তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, ‘বিশ্বজুড়েই রাষ্ট্রপ্রধানরা নির্দিষ্ট পরিমাণ দায়মুক্তি ভোগ করেন। এটি কোনো ব্যতিক্রম নয়।’ তিনি আরও দাবি করেন, এই সংশোধনটি সুশাসন, প্রাদেশিক ভারসাম্য এবং প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে।

সাংবিধানিক আদালতের ক্ষমতা

বিল অনুযায়ী, নবগঠিত সাংবিধানিক আদালতও সুপ্রিম কোর্টের মতো সুয়োমোটো (নিজ উদ্যোগে মামলা নেওয়ার) ক্ষমতা রাখবে, তবে তা প্রয়োগের আগে আদালত যাচাই করবে যে আবেদনটি ন্যায্য ও প্রয়োজনীয় কিনা।

বিচারক বদলির নতুন নিয়ম

এখন থেকে একজন বিচারককে এক হাইকোর্ট থেকে অন্য হাইকোর্টে বদলি করা যাবে শুধুমাত্র জুডিশিয়াল কমিশন অব পাকিস্তানের (জেসিপে) মাধ্যমে, যেখানে নির্বাহী, বিচার বিভাগ, সংসদ ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি থাকবেন।

সাংবিধানিক সংশোধনের প্রেক্ষাপট

একটি সাংবিধানিক সংশোধন পাসের জন্য সিনেটে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন হবে। ৯৬ সদস্যের সিনেটে অন্তত ৬৪ ভোট লাগত, যা সরকার পেয়েছে। বিলটি এখন জাতীয় পরিষদে যাবে, যেখানে সরকারী জোটের মোট ২৩৩ আসন থাকায় এটি পাস হওয়া প্রায় নিশ্চিত।

বিলটি শনিবার মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর সিনেটে উত্থাপন করা হয়। এতে প্রধান দুটি লক্ষ্য ছিল — ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত গঠন এবং ফিল্ড মার্শালের পদকে সংবিধানিক মর্যাদা দেওয়া।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সিদ্ধান্ত

বিলে প্রধানমন্ত্রীকে দায়মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নিজে তা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘একজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে আইনের আদালত ও জনগণের আদালত উভয়ের কাছেই জবাবদিহি থাকতে হবে।’

তিনি জোটসঙ্গীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে দেশের স্বার্থে, প্রাদেশিক সম্প্রীতি ও সুশাসন নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুর জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আটক

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন

ডিউটিতে ইনচার্জ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করল ডিএমপি

বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাবি রেজিস্ট্রারকে অপসারণের আলটিমেটাম

দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহত ১৩, বহু আহত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত