Ajker Patrika

গুহার ভেতরে ৫০০ দিন কেন ছিলেন এই স্প্যানিশ নারী

আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৩: ০০
গুহার ভেতরে ৫০০ দিন কেন ছিলেন এই স্প্যানিশ নারী

প্রায় আড়াই শ ফুট গভীর এক গুহার ভেতরে একটানা ৫০০ দিন ছিলেন স্পেনের এক নারী। তাঁর নাম বিট্রিজ ফ্লামিনি। ৫০ বছর বয়সী এই নারী স্পেনের গ্রানাডার বাইরে এক গুহায় ছিলেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

গিনেস বুক অব রেকর্ডসে নাম লেখানোর উদ্দেশ্যে তাঁর এই গুহাবাস। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেছে, তবু তিনি গুহা থেকে বের হতে চাইছিলেন না। বিট্রিজ ফ্লামিনি একজন পর্বতারোহী এবং অ্যাথলেট। 

চোখে রঙিন চশমা পরা ফ্লামিনি হাসতে হাসতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওরা যখন আমাকে গুহার ভেতর থেকে বের করে নিতে আসে, তখন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। ওদের ডাকাডাকিতে ঘুম থেকে উঠে বললাম, এখনই বের হব? নিশ্চয় না। আমার বইটা এখনো শেষ হয়নি।’

গুহাবাসী ফ্লামিনিকে সহায়তাকারী দল বলেছে, তিনি যখন গুহায় প্রবেশ করেছেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৪৮। গুহার ভেতরেই দুটি জন্মদিন উদ্‌যাপন করেছেন তিনি।

রয়টার্স বলছে, ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর গুহায় প্রবেশ করেছিলেন ফ্লামিনি। তখনো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়নি কিংবা মারা যাননি ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। এরপর গতকাল শুক্রবার তিনি গুহা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হন। তাঁকে স্বাগত জানায় তাঁর সহায়তাকারী দল। 

সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে জানতে চান, গুহার ভেতরে থাকতে কখনো তিনি ভয় পেয়েছিলেন কি না, কিংবা কখনো গুহা ত্যাগ করার কথা ভেবেছিলেন কি না। উত্তরে মৃদু হেসে ফ্লামিনি বলেন, ‘কখনোই না। আমি এখনো বের হতে চাচ্ছিলাম না।’

 গুহার ভেতর বিট্রিজ ফ্লামিনিসেলাই করে, বই পড়ে কেটেছে গুহাবাসী সময়
গুহার ভেতরে ব্যায়াম করে, বই পড়ে, উলের টুপি বুনে সময় কেটেছে বিট্রিজ ফ্লামিনির। তাঁর সহায়তাকারী দল জানিয়েছে, ফ্লামিনির সঙ্গে দুটি গোপ্রো ক্যামেরা, ৬০টি বই এবং প্রায় ১ হাজার লিটার পানি ছিল। 

ফ্লামিনি বলেন, ‘কিছু কঠিন সময়ও আমাকে পার করতে হয়েছে। যেমন গুহায় বেশ মাছি ছিল। মাছির আক্রমণ সহ্য করতে হয়েছে আমাকে। তবে যে স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি গুহাবাসী হয়েছিলাম, তার কাছে এই সমস্যা একবারেই তুচ্ছ।’ 

সহায়তাকারী দল তাঁকে অ্যাভোকাডোস, ডিমসহ নানা ধরনের খাবার পাঠাত বলে জানিয়েছেন ফ্লামিনি। তিনি বলেন, ‘আমি আমার সহায়তাকারী দলকে বলেছিলাম, তারা যেন নিজে থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ না করে। এমনকি আমার পরিবারের লোকজন কিংবা আত্মীয়স্বজন মারা গেলেও যেন যোগাযোগ না করে।’

তবে রয়টার্স বলেছে, গুহায় থাকার সময় ফ্লামিনিকে একদল মনোবিজ্ঞানী, গবেষক, গুহা বিশেষজ্ঞ এবং শারীরিক প্রশিক্ষক সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। একাকী নিঃসঙ্গ গুহার ভেতরে পুরোপুরি সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকার সময় একজন মানুষের দেহ, মন ও মস্তিষ্কে কী ধরনের পরিবর্তন হয়, তা তাঁরা পর্যবেক্ষণ করেছেন। 

ফ্লামিনি বলেছেন, ‘নতুন করে পর্বতারোহণ কিংবা নতুন কোনো গুহায় প্রবেশ প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে আমি নিজেকে চিকিৎসকদের কাছে সঁপে দিতে চাই, যাতে তারা আমার গুহাবাসী সময়ের শারীরিক পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা করতে পারে।’ 

গিনেস বুক অব রেকর্ডসের ওয়েবসাইট বলছে, ২০১০ সালে ২ হাজার ২৫৭ ফুট গভীর খনিতে ৬৯ দিন আটকা ছিলেন চিলি ও বলিভিয়ার ৩৩ জন খনিশ্রমিক। পরে তাঁদের ‘সবচেয়ে বেশি সময় আন্ডারগ্রাউন্ডে বেঁচে থাকা’র পুরস্কার দেওয়া হয়। 

গিনেসের একজন মুখপাত্রকে জিজ্ঞেস করা হয়, স্বেচ্ছায় গুহায় সময় কাটানোর জন্য পৃথক কোনো রেকর্ড আছে কি না এবং সেই রেকর্ড ফ্লামিনি ভেঙেছেন কি না। জবাবে গিনেসের মুখপাত্র নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত