Ajker Patrika

আমার স্বামীর সঙ্গে কী করেছেন, পুতিন জবাব দিন: নাভালনির স্ত্রী

আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯: ০৭
আমার স্বামীর সঙ্গে কী করেছেন, পুতিন জবাব দিন: নাভালনির স্ত্রী

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনি কারাগারে বন্দী অবস্থায় মারা গেছেন। এই মৃত্যুর জন্য পুতিনকে জবাব দিতে হবে—এ কথা বলেছেন নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া। অশ্রুসজল হয়ে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, খুব শিগগির পুতিনের অপশাসনের অবসান ঘটবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে গতকাল শুক্রবার নাভালনির মৃত্যুসংবাদ পান তাঁর স্ত্রী। কান্না সংবরণ করে আবেগতাড়িত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সে (অ্যালেক্সি নাভালনি) এখানেই থাকতে পারত, এই সম্মেলনকক্ষে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সূত্র থেকে যে খবর আমরা পেলাম, তা কীভাবে বিশ্বাস করব জানি না। কারণ, বহু বছর ধরে আমরা পুতিন ও তাঁর সরকারকে বিশ্বাস করতে পারি না। তারা সব সময় মিথ্যা বলে।’

ইউলিয়া নাভালনায়া আরও বলেন, ‘এটা সত্যি যে আমি পুতিনকে চাই। তার পুরো দল এবং তার সমস্ত বন্ধু জানুক যে তারা আমাদের দেশ, আমার পরিবার এবং আমার স্বামীর প্রতি কী করেছে। আমি পুতিনের কাছে জবাব চাই। সেই দিন খুব তাড়াতাড়ি আসবে।’

পুতিনের শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নাভালনায়া। তিনি বলেন, ‘আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, এই কক্ষের এবং সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানাই; আসুন, আমরা পুতিনের ভয়ংকর শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাঁকে পরাজিত করি। আমাদের সঙ্গে যা হয়েছে, তার জন্য পুতিন প্রশাসনের সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করতে হবে।’

রাশিয়ার স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ইয়ামালো-নেনেতেস কারাগারে বন্দী অবস্থায় মারা গেছেন পুতিনের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত অ্যালেক্সি নাভালনি। তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৭ বছর। স্ত্রী ইউলিয়া ও নাভালনির সংসারে আছে এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ের নাম দারিয়া এবং ছেলের নাম জাহার।

রাজনৈতিক জীবনে নাভালনি পুতিনের কট্টর বিরোধী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিশেষ করে রাশিয়ার দুর্নীতি ও শাসনব্যবস্থার কড়া সমালোচক ছিলেন তিনি। রাশিয়ায় তিনি কয়েক যুগ ধরেই বিদ্যমান সরকার ও শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলে আসছিলেন। দেশজুড়ে এ নিয়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন চালিয়েছেন।

নাভালনি ২০১৭ সালে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভের বিলাসবহুল জীবনযাপনের বিষয়টি উন্মোচন করেন। এমনকি বিষয়টি নিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনও গড়ে তোলেন তিনি। পরে ২০১৮ সালে নাভালনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেষ্টা করেন, কিন্তু তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করা হয় ২০১৪ সালের একটি অভিযোগ সামনে এনে।

২০১৪ সালে দায়ের করা একটি অর্থ আত্মসাৎ মামলায় রুশ এই নেতাকে ২০২১ সালের শুরুর দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। দ্রুত বিচারের মাধ্যমে তাঁকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে আদালত অবমাননার অভিযোগে তাঁকে আরও ৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০২১ সালের আগস্টে চরমপন্থার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নাভালনিকে আরও ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত