Ajker Patrika

পোল্যান্ডের নির্বাচন কেন গুরুত্বপূর্ণ—ফলাফল কী হবে

অনলাইন ডেস্ক
ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী প্রার্থী রাফাল ত্রাশকোভস্কি এবং রক্ষণশীল ইতিহাসবিদ কারোল নাভরোস্কি। ছবি: সংগৃহীত
ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী প্রার্থী রাফাল ত্রাশকোভস্কি এবং রক্ষণশীল ইতিহাসবিদ কারোল নাভরোস্কি। ছবি: সংগৃহীত

পোল্যান্ডে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। এর ফলাফল কী হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। হাড্ডাহাড্ডি এই নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে রাজধানী ওয়ারশ-এর মেয়র ও উদার ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী প্রার্থী রাফাল ত্রাশকোভস্কি এবং রক্ষণশীল ইতিহাসবিদ কারোল নাভরোস্কির মধ্যে। নাভরোস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ আন্দোলন দ্বারা অনুপ্রাণিত।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ভোট শুধুমাত্র পোল্যান্ডের ভবিষ্যৎ দিক নির্ধারণ করবে না, একে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ইউক্রেন, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রও। এই ফলাফলই বলে দেবে পোল্যান্ড ইউরোপীয় মূলধারার সঙ্গেই থাকবে নাকি আরও জাতীয়তাবাদী পথে হাঁটবে।

আজ রোববার যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদারপন্থী ত্রাশকোভস্কি বর্তমান মধ্যপন্থী শাসক জোট ‘সিভিক কোয়ালিশন’-এর প্রার্থী। জনমত জরিপে সামান্য ব্যবধানে তিনি এগিয়ে রয়েছেন। তবে তাঁর এই ‘এগিয়ে থাকা’ এখনো ভুলত্রুটির সীমার মধ্যেই রয়েছে। তিনি ইউরোপ ও আমেরিকা—উভয় পক্ষের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ককে পোল্যান্ডের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন।

অন্যদিকে ‘ল অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি’-এর ডানপন্থী প্রার্থী নাভরোস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেন। গত মে মাসে তিনি হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন।

এদিকে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন অব্যাহত রাখার বিষয়ে দুই প্রার্থীই একমত। তবে ত্রাশকোভস্কি ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ন্যাটো সদস্যপদকে পোল্যান্ডের নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য মনে করেন। আর নাভরোস্কি সম্প্রতি বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের বিষয়টি অনুমোদন দেবেন না। কারণ এতে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

৫৩ বছর বয়সী ত্রাশকোভস্কি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা, গর্ভপাত আইন শিথিল করা, এলজিবিটি দম্পতিদের জন্য সিভিল পার্টনারশিপ চালু করা এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আর ৪২ বছর বয়সী নাভরোস্কি ঐতিহ্যবাহী পোলিশ মূল্যবোধ রক্ষাকারী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করছেন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যাপারে সন্দিহান এবং তাঁর নীতি মার্কিন রক্ষণশীল রাজনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাঁর সমর্থকদের আশঙ্কা, ত্রাশকোভস্কি জয়ী হলে পোল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো ফ্রান্স ও জার্মানির মতো ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলোর নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে।

গত ১৮ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার নির্বাচনে ত্রাশকোভস্কি পেয়েছিলেন ৩১ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট। আর নাভরোস্কি পেয়েছিলেন প্রায় ৩০ শতাংশ ভোট। বাকি ১১ জন প্রার্থী বাদ পড়েছেন।

বর্তমান রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা তাঁর দ্বিতীয় এবং শেষ মেয়াদ শেষ করছেন। ফলে প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্কের মধ্যপন্থী সরকার তাদের নীতিমালা কতটা বাস্তবায়ন করতে পারবে তা নতুন প্রেসিডেন্টই ঠিক করবেন।

পোল্যান্ডে পার্লামেন্টের হাতে মূল ক্ষমতা থাকলেও প্রেসিডেন্ট ভেটো দেওয়ার অধিকার রাখেন—যা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আজ রোববার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ২ টা) ভোটগ্রহণ শেষ হবে। এরপরই প্রাথমিক বুথফেরত জরিপ প্রকাশ হবে। নির্বাচন কমিশন আশা করছে, চূড়ান্ত ফলাফল সোমবার সকাল বা বিকেলের মধ্যেই ঘোষণা করা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত