Ajker Patrika

৬ বছরে প্রথম চীন সফরে যাচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার একনায়ক শাসক কিম জং উন। ছবি: বিবিসি
উত্তর কোরিয়ার একনায়ক শাসক কিম জং উন। ছবি: বিবিসি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তির প্যারেডে যোগ দিতে ছয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো চীন সফরে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। আজ বৃহস্পতিবার, এ তথ্য জানিয়েছে দুই দেশ। বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সালে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতার দায়িত্ব নেওয়ার পর এবারই প্রথম বিশ্বনেতাদের সঙ্গে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন কিম।

আগামী বুধবার, বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে প্যারেড। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তির পাশাপাশি জাপানের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চীনা প্রতিরোধের উদ্‌যাপনেও এই প্যারেডের আয়োজন করা হয়েছে। ওই প্যারেডে কিম জং উন ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ ২৬টি দেশের নেতারা। সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দিতে আসা অন্যান্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ইরান, বেলারুশ, সার্বিয়া, কিউবা, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান এবং মালয়েশিয়ার নেতারা। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পুতিনের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র বা অন্যান্য পশ্চিমা ও ইউরোপীয় দেশগুলোর কোনো নেতা এতে অংশ নেবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, এই কুচকাওয়াজে চীনের কিছু নতুন অস্ত্র প্রদর্শন করা হবে এবং চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং একটি ভাষণ দেবেন।

চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী হং লেই বলেন, ‘চীনের এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতাকে স্বাগত জানাই।’

সবকিছু ঠিক থাকলে, ২০১৯ সালের পর এটিই হবে তার প্রথম চীন সফর। ২০১১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি সি চিনপিং, ভ্লাদিমির পুতিন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে সেসব বৈঠকের সবই দ্বিপক্ষীয় ছিল, কোনো বহুপক্ষীয় অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নেননি। এবারই প্রথম একটি বহুপক্ষীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি। ২০১৮-২০১৯ সালের মধ্যে চীনে সির সঙ্গে চারবার দেখা করেছেন কিম।

চীন দীর্ঘদিন ধরে উত্তর কোরিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার এবং প্রধান সাহায্যকারী দেশ। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য সেনা ও গোলাবারুদ সরবরাহের পরিবর্তে অর্থনৈতিক ও সামরিক সাহায্য নিচ্ছে। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, উত্তর কোরিয়ার জন্য চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ, কারণ রাশিয়া থেকে সীমিত সুবিধা পাওয়া সম্ভব এবং যুদ্ধ শেষ হলে রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতার মাত্রা স্থায়ী না হওয়ার সম্ভাবনাও আছে।

২০২৩ সালে উত্তর কোরিয়ার মোট বিদেশি বাণিজ্যের প্রায় ৯৭ শতাংশই হয়েছে চীনের সঙ্গে, আর রাশিয়ার সঙ্গে মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ।

অনেকে বলছেন, কিমের চীন সফরের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প-কিম আলোচনার একটি যোগসূত্র থাকতে পারে। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বেশ কয়েকবার কিম জং উনের সঙ্গে আলোচনার কথা বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে, উত্তর কোরিয়া বারবার তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র বড় ধরনের ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়, তাহলে উত্তর কোরিয়া আলোচনায় আসতে পারে।

সিউলের ইওহা উইমেন্স ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক লেইফ-এরিক ইসলি বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার শাসনের জন্য চীনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থন অপরিহার্য হলেও, মস্কোর সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের অবৈধ সহযোগিতা বেইজিংয়ের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে।’ ইসলি আরও বলেন, ‘শক্তিশালী অবস্থান থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে পুনরায় যুক্ত হতে কিম এখন সি-এর সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছেন, এবং বেইজিংয়ের কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া সেই চেষ্টারই একটি দৃশ্যমান উপায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে লতিফ সিদ্দিকী অবরুদ্ধ, নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

নির্বাচনের আগে কোনো বৈধ অস্ত্র ফেরত দেবে না সরকার

নির্বাচন জড়িয়ে যাচ্ছে অনৈক্যের জালে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত