Ajker Patrika

করোনায় মৃত্যু ঠেকাতে দুর্গম অঞ্চল চষে বেড়াচ্ছেন ভুটানের রাজা 

আপডেট : ২৬ জুন ২০২১, ১৬: ১৭
করোনায় মৃত্যু ঠেকাতে দুর্গম অঞ্চল চষে বেড়াচ্ছেন ভুটানের রাজা 

ঢাকা: মাথায় বেসবলের ক্যাপ এবং পরনে ঐতিহ্যবাহী পোশাক ঘো রোবে আর সঙ্গে রয়েছে একটি ব্যাগ। এ নিয়েই একের পর এক পর্বত চষে বেড়াচ্ছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। তাঁর লক্ষ্য হলো দুর্গম অঞ্চলের জনসচেতনতা বাড়িয়ে ভুটানে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা। পর্বতগুলোর জঙ্গলে রয়েছে সাপসহ অন্যান্য পোকামাকড়ের ঝুঁকি, সেই সঙ্গে রয়েছে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও। এগুলোকে পাশ কাটিয়ে গত ১৪ মাস ধরে দুর্গম অঞ্চলগুলোতে যাচ্ছেন জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সফরে কখনো হেঁটে, কখনো গাড়িতে আবার কখনো ঘোড়ার পিঠে চড়ে দুর্গম অঞ্চলে যান ভুটানের রাজা। এই সফরে বেরিয়ে এই পর্যন্ত বেশ কয়েকবার ভুটানের রাজধানী থিম্পুর একটি হোটেলে কোয়ারেন্টাইনেও থেকেছেন তিনি। 

 রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের এই সফর করোনায় মৃত্যু কমাতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। ভুটানের পাশের দেশ ভারত করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত হলেও দেশটিতে এর প্রকোপ তেমন বাড়েনি।

এ নিয়ে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং রয়টার্সকে বলেন, রাজা মাইলের পর মাইল ভ্রমণ করছে মানুষকে সতর্ক করার জন্য। তাঁর কথাগুলো মানুষ খুব শ্রদ্ধা করে এবং গুরুত্ব সহকারে নেয়। তাঁর এই উপস্থিতি সরকারের নির্দেশনার চেয়ে অনেক শক্তিশালী। 

 শেরিংও প্রায়ই ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভুটানের রাজার সফরসঙ্গী হয়েছেন বলে জানা গেছে। ভুটান সাংবিধানিক রাজতন্ত্রে পরিণত হয় ২০০৮ সালে। তখন ভুটানের রাজা তার সকল ক্ষমতা ত্যাগ করেন। কিন্তু রাজকীয় পরিবারের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখার বিষয়টি এখনো দেশটির সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলে। 

সম্প্রতি ভুটানের রাজা দুর্গম অঞ্চলে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানাতে পাঁচ দিন ধরে পাহাড়ি পথ-জঙ্গলের মধ্য দিয়ে হেঁটে ১৪ হাজার ২৫০ ফুট পথ পাড়ি দিয়েছেন। 

 এ নিয়ে সাক্ষাৎকারের জন্য আবেদন করা হলে ভুটানের রাজার কার্যালয় সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকের পেজে ভুটানের রাজার করোনাকালীন এই ভ্রমণ ও কাজের ছবি পোস্ট করা হয়েছে। 

 রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্গম অঞ্চল থেকে থেকে ফিরে প্রতিবারই থিম্পুতে কোয়ারেন্টাইনে থাকেন দুই সন্তানের জনক ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। ইতিমধ্যে তিনি করোনার ভ্যাকসিনের একটি ডোজ নিয়েছেন। 
 ভুটানের রাজার কার্যালয়ে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, আমাদের রাজার শঙ্কা হলো যদি করোনা মহামারি দাবানলের মতো  আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। 

 ভুটানের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রুই পাওলো দে জেসুস বলেন, রাজা সব ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত এলাকাগুলো সফর করেছেন। সেখানে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে সেগুলোও পর্যবেক্ষণ করছেন।

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বলেছেন, দেশটিতে ভ্যাকসিন নেওয়ার যোগ্য ৯০ শতাংশ মানুষকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। তবে ভ্যাকসিনের সরবরাহ না থাকায় মিক্স ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। 

 আন্তর্জাতিক জরিপকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, ভুটানে এ পর্যন্ত ২ হাজার ১৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় মাত্র একজনের মৃত্যু হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত