Ajker Patrika

থাইল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল কে, কীভাবে ক্ষমতায় এলেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
থাইল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল। ছবি: সংগৃহীত
থাইল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল। ছবি: সংগৃহীত

৫৮ বছর বয়সী আনুতিন চার্নভিরাকুল থাইল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি অভিজ্ঞ রাজনীতিক ও দক্ষ সমঝোতাকারী হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল। তবে এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় আসতে হবে, তা হয়তো তিনি আশা করেননি।

আনুতিনের দল ভূমজাইথাই (পৌরাণিক অর্থে ‘থাই হয়ে গর্বিত’) পার্লামেন্টে ৫০০ আসনের মধ্যে মাত্র ৬৯টি আসন পেয়েছে। ফলে তাঁকে সরকার চালাতে হলে বড় দুটি দলের যেকোনো একটির সমর্থন অপরিহার্য। তবে থাই নির্মাণ খাতের বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী বিরোধী দলের যথেষ্ট সমর্থন আদায় করেই এ পদে বসছেন।

ভূমজাইথাই মূলত অরাজনৈতিক ও লেনদেননির্ভর দল হিসেবে পরিচিত। অতীতে দলটি কখনো রক্ষণশীল, সামরিক-সমর্থিত গোষ্ঠীর সঙ্গে, আবার কখনো ফেউ থাইয়ের সঙ্গে জোট করেছে।

সম্প্রতি দলটি ফেউ থাই নেতৃত্বাধীন জোট থেকে সরে দাঁড়ায়। প্রকাশ্যে কারণ হিসেবে দেখানো হয় পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের মধ্যে ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপকে। তবে ভেতরে আরও কিছু দ্বন্দ্ব ছিল। এই অবস্থায় আনুতিনের সামনে একমাত্র বিকল্প ছিল প্রগতিশীল ও তরুণ প্রজন্মের দল পিপলস পার্টি; যা বর্তমানে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে এই দুটি দলের মধ্যে জোট গড়া মোটেও সহজ কাজ ছিল না।

কারণ, আনুতিন দৃঢ় রাজতন্ত্রপন্থী। অন্যদিকে পিপলস পার্টির নেতৃত্ব রাজতন্ত্রবিরোধী অবস্থানের কারণে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ হয়েছে। ফলে তাদের কোনো নেতা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য ছিলেন না। এ ছাড়া এই দলের কয়েকজন সংসদ সদস্য লেসে মাজেস্তে (রাজতন্ত্র অবমাননা) আইনেও দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাই অনেকে ভূমজাইথাইয়ের সঙ্গে সমঝোতার বিরোধিতা করেছেন।

এদিকে, পেতংতার্নের বরখাস্তের পর ফেউ থাইয়ে যখন ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়, তখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও অভ্যুত্থানের নেতা প্রায়ুথ চান-ওচাকে আবার দায়িত্বে বসানোর কথা ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু পিপলস পার্টির কাছে এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য ছিল না। অবশেষে পিপলস পার্টি কিছু কঠিন শর্তে আনুতিনকে সমর্থন দিতে রাজি হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চার মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজন এবং সামরিক বাহিনীর খসড়া থেকে সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু করা।

তবে দলটি স্পষ্ট করেছে, তারা কেবল নতুন সরকারের টিকে থাকার জন্য ভোট দেবে, কোনো আইন প্রণয়নের পক্ষে নয়। ফলে আনুতিন শুরুর দিন থেকেই বাঁধা হাত নিয়ে ক্ষমতায় বসেছেন, হাতে আছে মাত্র চার মাস সময়।

আনুতিন ধনী রাজনৈতিক পরিবার থেকে আসা। তাঁর বাবা একাধিক মন্ত্রিত্ব সামলেছেন এবং পারিবারিক নির্মাণ ব্যবসার প্রতিষ্ঠাতা। সেই প্রতিষ্ঠানই নতুন থাইল্যান্ডের নতুন পার্লামেন্ট ভবন নির্মাণ করেছে; যেখানে এবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হলো।

আনুতিন ২০২২ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে থাইল্যান্ডে মারিজুয়ানা আইন শিথিলকরণের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পান। তিনি উড়োজাহাজ চালনায় পারদর্শী। তাঁর নিজের তিনটি বিমান রয়েছে। তবে এবার তাঁর চ্যালেঞ্জ হলো—স্বল্প সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতায় নিমজ্জিত দেশটিকে সংকট থেকে বের করে আনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত