Ajker Patrika

সংবিধান পরিবর্তন করতে অক্টোবরে গণভোট অস্ট্রেলিয়ায়

সংবিধান পরিবর্তন করতে অক্টোবরে গণভোট অস্ট্রেলিয়ায়

গণভোটে ‘হ্যা’ জয়ী হলে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে ৫০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সংবিধানে পরিবর্তন আনবে অস্ট্রেলিয়া। 

বুধবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১৪ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ায় গণভোট হবে। ভোটের ফল অনুকূলে থাকলে দেশটিতে আদিবাসীদের জন্য ‘অ্যাবোরিজিনাল অ্যান্ড টোরেস স্ট্রেইট আইল্যান্ডার ভয়েস’ বা ‘দ্য ভয়েস’ নামে নতুন একটি সংসদীয় উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হবে। আইন সম্পর্কে পরামর্শ দিতে আদিবাসীদের জন্য এটি একটি আনুষ্ঠানিক সংস্থা হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই থাকবেন এই পরিষদে। আদিবাসীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলার পাশাপাশি নীতিমালা গ্রহণের ক্ষেত্রে পার্লামেন্টকে তাঁরা উপদেশ-পরামর্শ দেবেন। তবে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তাদের ভোট দেওয়া কিংবা ভেটো দেওয়ার কোনো ক্ষমতা থাকবে না। 

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ যুক্তি দিয়েছেন—উপদেষ্টা পরিষদটি গঠিত হলে দেশটির আদিবাসীদের জীবন উন্নত করা সহজ হবে। 

তবে অস্ট্রেলিয়ায় সাংবিধানিক গণভোট বিরল এবং পাস করাও কঠিন। ইতিপূর্বে ৪৪টি প্রচেষ্টার মধ্যে মাত্র ৮টি সফল হয়েছে। আসন্ন গণভোটের প্রস্তাবনাটি ঘিরেও দেশটিতে সমর্থন ও বিরোধিতা উভয়ই আছে। 

দ্য ভয়েস ইস্যুটিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এটি সংবিধানে ঠাঁই পেলে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে আদিবাসী জনগণের বিশেষ স্থানের স্বীকৃতি মিলবে। সরকারের নীতিতেও তারা অবদান রাখতে পারবে। 

দ্য ভয়েস আসলে কী? 
২০১৭ সালে ‘উলুরু স্টেটমেন্ট ফ্রম দ্য হার্ট’ নামে একটি ঐতিহাসিক নথিতে দ্য ভয়েসের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছিল। আড়াই শতাধিক আদিবাসী নেতা দ্য ভয়েসের খসড়া তৈরি করেছিলেন। 

গত মার্চে গণভোট আয়োজনের পরিকল্পনা ঘোষণা করার সময় প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ দাবি করেন, ভয়েস নিশ্চিত করবে—অস্টেলিয়ানরা এই মহান দ্বীপ মহাদেশটি বিশ্বের প্রাচীনতম অবিচ্ছিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে। 
তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতির জন্মসনদে এটির স্বীকৃতি দেওয়া উচিত এবং এটি নিয়ে গর্বিত হওয়া উচিত।’ 

গণভোট পাস হলে, সংসদের কাছে ভয়েসের গঠন, কার্যাবলি, ক্ষমতা এবং পদ্ধতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে। 

উলুরু নথিতে বলা হয়েছে, আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানরা তাদের জীবন উন্নত করার জন্য কাঠামোগত সমস্যা মোকাবিলা করতে ‘শক্তি হীনতা’ অনুভব করে। 

অস্ট্রেলিয়ায় অ-আদিবাসীদের তুলনায় আদিবাসীদের গড় আয়ু কম, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতেও তারা পিছিয়ে এবং নানা অপরাধে জড়িয়ে তাদের কারাবন্দী হওয়ার ঘটনাও বেশি। 

কীভাবে এসব সমস্যার সমাধান করে তাদের মূলস্রোতে সংযুক্ত করা যায় তা নিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে ঠিকঠাক আলোচনা হচ্ছে না বলে মনে করেন অনেকে। 

উলুরু স্টেটমেন্টে সই করা অধ্যাপক মেগান ডেভিসে বলেন, ‘অ-আদিবাসী লোকজন ওই সব সম্প্রদায়ের জন্য সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যাদের কাছে তারা কখনো যায়নি এবং যাদের (আদিবাসী) সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না।’ 

বিরোধীপক্ষ যা বলছে
বিরোধীরা বলছেন, ইতিমধ্যে আদিবাসী সম্প্রদায়ের অনেক প্রতিনিধি দেশটির পার্লামেন্টে চলে এসেছেন। অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে বর্তমানে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ১১ জন প্রতিনিধি আছেন, যা মোট প্রতিনিধির ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। 

তবে ভয়েসের পক্ষের লোকজন এই যুক্তির পাল্টা হিসেবে বলেছেন, একজন পার্লামেন্টে সদস্য তার নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেন। তাই তাদের পক্ষে পুরো আদিবাসী সম্প্রদায়ের স্বার্থ দেখা সম্ভব নয়। 

ভোটের পর কী হবে? 
আগামী ১৪ অক্টোবরের গণভোটে একটি ব্যালট পেপারে অস্ট্রেলিয়ানরা ‘হ্যা’ অথবা ‘না’ লিখে বাক্সে ফেলবেন। আশা করা হচ্ছে, ওই দিন সন্ধ্যার মধ্যেই গণভোটের ফল প্রকাশ করা হবে। 

ভোটে ‘হ্যা’ বিজয়ী হলে কীভাবে প্রতিনিধি পরিষদ গঠিত হবে তা নিয়ে আলোচনায় বসবে সংসদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত