Ajker Patrika

ক্ষীণ আশা নিয়ে শুরু হচ্ছে ইরান পরমাণু আলোচনা

ক্ষীণ আশা নিয়ে শুরু হচ্ছে ইরান পরমাণু আলোচনা

প্রায় ছয় মাস পর ছয় বিশ্ব শক্তির সঙ্গে আগামীকাল সোমবার ইরান পরমাণু আলোচনা শুরু হচ্ছে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায়। ২০১৫ সালের জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) বা সংক্ষেপে ইরান পরমাণু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানকে ফেরাতে আজকের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা, কিন্তু তা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ দু দেশের মধ্যে ছাড় দেওয়ার কোনো মানসিকতা দেখা যাচ্ছে না। 

আলোচনা উপলক্ষে গত শনিবারই ভিয়েনাই পৌঁছেছেন ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার (এইওআই) নতুন প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি। চুক্তিতে ফেরার জন্য আগের মতো এদিনও ২০১৭ সাল থেকে আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। 

কিন্তু এ ধরনের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোনো সবুজ সংকেত দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র বা ইইউ। অধিকন্তু গত শুক্রবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধির পথে আরও এগিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে ইরান। 

চুক্তিতে ফেরার জন্য ইরানের তরফে কোনো উদ্যোগ দেখা না গেলে, নিজেরা কঠোর হবে বলে সম্প্রতি বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তা ব্রেট ম্যাকগার্ক দু-এক দিন আগে এক আলোচনায় বলেন, ‘কূটনীতির মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে বিবাদ মেটানো যাবে বলে আমরা এখনো আশাবাদী। কিন্তু আলোচনা ব্যর্থ হলে আমরা বিকল্প চিন্তা করব।

 গত ১৮ নভেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রায় একই সুরে টুইট করেছেন ইরান বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত রব ম্যালি। তিনি লিখেন, অব্যাহতভাবে ইউরেনিয়াম বাড়ানো এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা—এ দুটোর একটি বেছে নিতে হবে ইরানকে। কিন্তু বিকল্প পথ যে কী, তা কখনো স্পষ্ট করেনি বাইডেন প্রশাসন। 

সম্প্রতি কয়েকবার ইরান সফর করেছেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান। অন্য বিষয়ের মধ্যে ইরানের সবচেয়ে বড় পরমাণু স্থাপনা কারাজে আইএইএর ক্যামেরা পুনঃস্থাপনই ছিল তাঁর আলোচনার মূল বিষয়। ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া ও ২০২০ সালে বাগদাদে নিজেদের জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার প্রতিবাদে সেগুলো খুলে ফেলে তেহরান। একবার রাজি হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি নতুন করে শুরুর আগে ক্যামেরাগুলো বসাতো অসম্মতি প্রকাশ করেছে তেহরান। 

পরমাণু ইস্যুতে তেহরান সময়ক্ষেপণ করছে মন্তব্য করে ইউরেশিয়া বিশেষজ্ঞ হেনরি রোম রয়টার্সকে জানান, অবাধ ও নজরদারিবিহীন পরমাণু তৎপরতা পশ্চিমাদের চাপে ফেলবে বলে মনে করছে তেহরান। কিন্তু তা ভুল। তাতে বরং উল্টো ফল হতে পারে। তবে ইরানের বর্তমান পরমাণু দল পিচ্ছিল পথ বেছে নিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 
কারণ মস্কো ও বেইজিংয়ের মতো দুই শক্তিশালী মিত্র রয়েছে তেহরানের, যারা উভয়ে ২০১৫ সালের ইরান পরমাণু চুক্তির সদস্য। এ যদি হয় অবস্থা, তাহলে আজকের বৈঠক ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করেন অধিকাংশ বিশ্লেষক। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত