Ajker Patrika

মানুষের প্রাণ রক্ষায় এখনই পর্যাপ্ত টিকা দরকার: ডব্লিউএইচও

মানুষের প্রাণ রক্ষায় এখনই পর্যাপ্ত টিকা দরকার: ডব্লিউএইচও

ঢাকা: প্রতিদিন বিশ্বে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। মহামারি করোনাভাইরাস থেকে বিশ্ববাসীকে রক্ষা করতে পর্যাপ্ত টিকা প্রয়োজন। শিল্পোন্নত সাতটি দেশ যে টিকা দিচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

শিল্পোন্নত দেশের টিকা বিতরণের চেয়ে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস দ্রুত গতিতে সংক্রমিত হচ্ছে। তাই বিশ্বের সকল মানুষের প্রাণ রক্ষা করতে এখনই পর্যাপ্ত টিকা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ট্রেডোস অধনম গ্যাব্রিয়াস। আজ মঙ্গলবার তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে করোনার ডেলটা ধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী। বিশ্বের ৭৪ দেশে এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ডেলটা ধরন। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ বিভাগের ডিন ডেলটা ধরনের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

লন্ডনের কর্নওয়েলে শিল্পোন্নত সাতটি দেশের ৪৭ তম শীর্ষ শেষ হয়েছে ১৩ই জুন। শীর্ষ সম্মেলনে নেতারা মহামারি করোনাভাইরাসের হাত থেকে বিশ্ব সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে ১০০ কোটি টিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। জি–৭ এর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ট্রেডোস অধনম গ্যাব্রিয়াস। তবে প্রয়োজনের তুলনায় কম টিকা দেওয়া তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে টিকা পেতে যাতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে না হয় সে দিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান গ্যাব্রিয়াস।

তিনি বলেন, ‘এটি প্রকৃতপক্ষে ভালো উদ্যোগ। কিন্তু আমাদের আরও টিকা প্রয়োজন এবং তা খুব দ্রুতই। কারণ টিকা বিতরণের চেয়ে করোনাভাইরাস দ্রুতই বিশ্ব সম্প্রদায়কে সংক্রমিত করছে।’

বিশ্বের সবাইকে টিকার আওতায় আনার জন্য এখনো এক হাজার ১০০ কোটি টিকা প্রয়োজন। জি–৭ এর দান করা টিকার অধিকাংশ কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় বিশ্বে বণ্টন করা হবে যাতে টিকার সুষ্ঠু বিতরণ করা সম্ভব হয়। গাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপারেডনেস ইনোভেশনস (সিইপিআই) কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৩১টি দেশে মাত্র আট কোটি ৭০ লাখ টিকা বিতরণ করেছে।

বিশ্বের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ মানুষ জার্মানিতে আগামী বছর জি–৭ এর সম্মেলনের আগেই টিকার আওতায় আসুক তা চায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গ্যাব্রিয়াস বলেন, 'এই মুহূর্তে আমাদের এক হাজার ১০০ কোটি টিকা প্রয়োজন। জি–৭ ও জি–২০ ভুক্ত উন্নত দেশগুলো আমাদের প্রয়োজনীয় টিকার ব্যবস্থা করবে তা আমি প্রত্যাশা করি।'

তবে করোনা মহামারিতে জি–৭ এর ভূমিকার সমালোচনা করেছেন অক্সফামের সমতা নীতির প্রধান মাক্স লাওসন। তিনি বলেন, ‘জি–৭ বলছে আগামী বছরের মধ্যে পুরো বিশ্বের মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসবে। তবে তাদের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে, তারা ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্টদের পেটেন্ট ও একক বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষায় বেশি মনোযোগী।’

এদিকে করোনার ভারতীয় ধরন ডেলটা বিশ্বের ৭৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের সাবেক কমিশনার স্কট গটলিবের মতে, শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি দুই সপ্তাহে ডেলটা ধরন দ্বিগুণ সংক্রমিত হচ্ছে। করোনা আক্রান্তদের দশ শতাংশ ডেলটা ধরনে সংক্রমিত। যা যুক্তরাজ্যে ৯০ শতাংশ। বিশ্বে ডেলটা ধরনে যত আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে প্রকৃত তথ্য তার চেয়েও ভয়াবহ। মূলত উন্নয়নশীল দেশগুলোর দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থার কারণে ডেলটা ধরন বিশ্বে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ বিভাগের ডিন আলিশা ঝা বলেন, ''ডেল্টার মতো মারাত্মক সংক্রামক আমি আজ অবধি দেখিনি।'

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত