আজকের পত্রিকা ডেস্ক

শরীরের ভেতরের অংশ পরীক্ষা করতে দীর্ঘদিন ধরে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে আসছেন চিকিৎসকেরা। এখন এই আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে ক্যানসারের চিকিৎসাও সম্ভব হবে। এই হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে এবার ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, এই নতুন সম্ভাবনার ধারক যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ঝেন সু। বিশের দশকের গোড়ার দিকে ঝেন সু যখন পিএইচডির ছাত্রী ছিলেন, সে সময় এ গবেষণা শুরু করেন তিনি। গবেষণায় সু এমন একটা উপায় খুঁজছিলেন, যার মাধ্যমে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার ছাড়াই রোগাক্রান্ত টিস্যু ধ্বংস ও অপসারণ করতে পারবেন। হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গ অর্থাৎ আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে টিস্যু ভেঙে ফেলার ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। ঝেন সু প্রথমে এ পরীক্ষা চালান শূকরের হৃৎপিণ্ডের ওপর।

সাধারণত আলট্রাসাউন্ড মানুষের শ্রবণযোগ্য হওয়ার কথা নয়, কিন্তু সু তাঁর পরীক্ষায় এত শক্তিশালী অ্যামপ্লিফায়ার ব্যবহার করেছিলেন যে, গবেষণাগারে থাকা অন্য গবেষকেরা শব্দ নিয়ে অভিযোগ দিতে থাকেন। ঝেন সু বলেন, তখন পর্যন্ত কোনো কাজ হচ্ছিল না। তাই তিনি সহকর্মীদের শান্ত করতে আলট্রাসাউন্ড পালসের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন, যা শব্দের মাত্রা মানুষের শ্রবণসীমার বাইরে নিয়ে যাবে।
অপ্রত্যাশিতভাবে প্রতি সেকেন্ডে পালসের সংখ্যা বাড়ানো কেবল সহকর্মীদের বিরক্তিই কমাল না, বরং তিনি যে পদ্ধতিতে চেষ্টা করেছিলেন, তারচেয়ে বেশি কার্যকর প্রমাণিত হলো। তিনি দেখতে পেলেন, আলট্রাসাউন্ড প্রয়োগের এক মিনিটের মধ্যে শূকরের হৃৎপিণ্ডের টিস্যুতে একটি গর্ত তৈরি হলো।
সে সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অধ্যাপক সু বলেন, ‘আমি ভাবলাম, আমি স্বপ্ন দেখছি।’
সুর এই আবিষ্কার ‘হিস্টোট্রিপসি’ নামে পরিচিত। এই আবিষ্কার কয়েক দশক পরে এসে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে উন্নত ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা করছে। অস্ত্রোপচার ছাড়া শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে ক্যানসার রোগীদের শরীর থেকে টিউমার নির্মূলের সুযোগ দিচ্ছে।
হিস্টোট্রিপসি ২০২৩ সালের অক্টোবরে লিভার টিউমারের চিকিৎসার জন্য মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) অনুমোদন পায়। পরের বছর এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকীকরণের জন্য গঠিত কোম্পানি হিস্টোসোনিক্সের অর্থায়নে একটি ছোট গবেষণায় দেখা যায়, পদ্ধতিটি ৯৫ শতাংশ লিভার টিউমারের বিরুদ্ধে প্রযুক্তিগতভাবে সফল। যদিও পেটে ব্যথা থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে, তবুও গবেষণায় দেখা গেছে, জটিলতাগুলো বিরল এবং পদ্ধতিটি তুলনামূলক নিরাপদ।
গত জুন মাসে প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে হিস্টোট্রিপসিকে অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য। ক্লিনিক্যাল চাহিদা পূরণের জন্য দেশটির ইনোভেশন ডিভাইস অ্যাকসেস পাথওয়ের পাইলট পর্বের অধীনে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে (এনএইচএস) চিকিৎসা হিসেবে সহজলভ্য করা হয়।
স্পেনের রামন ই কাজাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ রিসার্চের গবেষক সুলি আর্ল বলেন, মানুষ মনে করে আলট্রাসাউন্ড কেবল ইমেজিং বা শরীরের ভেতরের ছবি তোলার কাজ করে। আর্ল জানান, গবেষণা থেকে উঠে এসেছে, এটি কেবল টিউমারই ধ্বংস করতে পারে না, বরং মেটাস্ট্যাটিক রোগ (শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়া ক্যানসার) নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অন্যান্য ক্যানসার চিকিৎসার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতেও সক্ষম, তা-ও রোগীকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে না নিয়ে।

আলট্রাসাউন্ড যেভাবে কাজ করে
সাধারণ সোনোগ্রামের মতো আলট্রাসাউন্ড হ্যান্ডহেল্ড ট্রান্সডিউসারের মাধ্যমে উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গ পাঠায় এবং প্রতিফলিত তরঙ্গগুলোকে চিত্রে রূপান্তর করে। ক্যানসার চিকিৎসায় আলট্রাসাউন্ড তরঙ্গগুলোকে টিউমারের একটি ছোট অংশের ওপর কেন্দ্রীভূত করা হয় সেটিকে ধ্বংস করার জন্য।
এই পালসগুলো ছোট ছোট মাইক্রোবাবল তৈরি করে, যা কয়েক মাইক্রোসেকেন্ডের মধ্যে প্রসারিত হয় এবং তারপর ভেঙে যায়। এই প্রক্রিয়ায় তারা টিউমারের টিস্যুকেও ভেঙে ফেলে। লিভার ক্যানসারে ট্রান্সডিউসার রোবটিক আর্ম দিয়ে টিউমারের এলাকা চিহ্নিত করে কাজ করা হয়।
অধ্যাপক সু জানান, এ কাজে ব্যবহৃত হিস্টোট্রিপসি ডিভাইসগুলো হয় কালারিং পেনের ডগার সাইজের। পুরো প্রক্রিয়াটি এত ছোট যে, রোগীরা ওই দিনই বাড়ি ফিরতে পারেন। হিস্টোসোনিক্সের তথ্য অনুসারে, বেশির ভাগ প্রক্রিয়া এক থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়।
হিস্টোট্রিপসির সুবিধাগুলো আশা জাগালেও এই চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে এখনো কিছু প্রশ্ন রয়েছে। চিকিৎসার পর আবারও ক্যানসার হতে পারে কি না, এ নিয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি। এদিকে কিছু গবেষক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, হিস্টোট্রিপসির মাধ্যমে টিউমার ভাঙার সময় শরীরের ভেতরে ভেঙে যাওয়ায় তা নতুন ক্যানসার কোষের জন্ম দিতে পারে। আর এগুলো শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে প্রাণীদের ওপর করা গবেষণাগুলোতে এখন পর্যন্ত সে ধরনের আশঙ্কার কোনো প্রমাণ মেলেনি।
গবেষণা বলছে, হিস্টোট্রিপসি সব ধরনের ক্যানসারের জন্য কার্যকর নাও হতে পারে। হাড় আলট্রাসাউন্ডকে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে বাধা দিতে পারে, ফলে নির্দিষ্ট স্থানে থাকা টিউমার ধ্বংস করা সম্ভব নাও হতে পারে। এ ছাড়া ফুসফুসের মতো গ্যাসযুক্ত অঙ্গের ক্ষেত্রে হিস্টোট্রিপসি ব্যবহার বিপজ্জনক হতে পারে, যা আশপাশের স্বাভাবিক টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে হিস্টোসোনিক্স বর্তমানে কিডনি ও প্যানক্রিয়াসের টিউমারের সম্ভাব্য চিকিৎসা হিসেবে হিস্টোট্রিপসি নিয়ে গবেষণা করছে।
তবে ক্যানসার চিকিৎসায় হিস্টোট্রিপসি আলট্রাসাউন্ডের প্রথম ব্যবহার নয়। টিউমারের ওপর প্রয়োগের একটি পুরোনো ও প্রতিষ্ঠিত প্রযুক্তি হাই-ইনটেনসিটি ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড (এইচআইএফইই)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড ক্যানসার ইমিউনোথেরাপি সেন্টারের সহপরিচালক রিচার্ড প্রাইস বলেন, টিউমারের ওপর আলট্রাসাউন্ডের একটি কেন্দ্রীভূত বিস্ফোরণের মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন করা হয়, যা টিস্যুটিকে মূলত ‘রান্না’ করে ফেলে।
প্রাইস আরও বলেন, ‘আপনি যদি একটি ম্যাগনিফাইং গ্লাস হাতে নিয়ে রোদের দিনে একটি শুকনো পাতার ওপর ধরেন, তাহলে কিন্তু পাতাটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া সম্ভব। এইচআইএফইউ মূলত একই কাজ করে, তবে ক্যানসারের টিস্যুর ওপর তাপ তৈরির জন্য এটি শব্দশক্তি ব্যবহার করে।’
অনকোলজি বা ক্যানসার চিকিৎসাবিজ্ঞানে অস্ত্রোপচার ছাড়াই প্রোস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসা করতে সবচেয়ে বেশি পরিচিত চিকিৎসাপদ্ধতি এইচআইএফইউ। ২০২৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রে এটি অস্ত্রোপচারের মতোই কার্যকর হতে পারে। এ ক্ষেত্রে রোগীরা ঘুম থেকে ওঠার পর কিছুটা ব্যথা ও মূত্রসংক্রান্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করতে পারেন, তবে সাধারণত অস্ত্রোপচারের মতো নিবিড় চিকিৎসার তুলনায় আরোগ্য লাভ দ্রুত হয়।
হিস্টোট্রিপসি ও এইচআইএফইউ থেরাপি দুটিই সাধারণত জেনারেল অ্যানেসথেসিয়ার অধীনে করা হয়, যাতে চিকিৎসার সময় রোগীরা নড়াচড়া না করেন এবং এর ফলে আশপাশের অঙ্গ বা টিস্যুর দুর্ঘটনাক্রমে ক্ষতির সম্ভাবনা কমে যায়। তবে হিস্টোট্রিপসিতে আশপাশের সুস্থ টিস্যুর ক্ষতি হতে পারে, এমন তাপ উৎপন্ন হয় না।

তবে এইচআইএফইউ দিয়ে সব ধরনের ক্যানসার চিকিৎসা সম্ভব নয়। যাঁদের প্রোস্টেট ক্যানসার শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে গেছে, তাঁদের ক্ষেত্রে সাধারণত এটি কাজ করে না। তবুও বিভিন্ন দেশের গবেষকেরা এটিকে স্তন ক্যানসারের মতো কিছু কিছু ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহার করে দেখছেন।
গবেষকেরা বলছেন, ক্যানসারের অন্যান্য বিদ্যমান চিকিৎসার সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করলে আলট্রাসাউন্ডের সফলতার মাত্রা বাড়তে পারে।
ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রিচার্ড প্রাইস সতর্ক করে বলেন, আলট্রাসাউন্ড নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো তুলনামূলকভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এ নিয়ে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন।
তবে বর্তমানে ব্যবহৃত আলট্রাসাউন্ড পদ্ধতিগুলো অনকোলজিতে (ক্যানসার চিকিৎসায়) এক নতুন যুগ নিয়ে আসছে। অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি ও রেডিয়েশনের মতো কার্যকর কিন্তু মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত চিকিৎসাগুলোকে প্রতিস্থাপন ও সেগুলোর উন্নতি ঘটানো এর লক্ষ্য।
ঝেন সু বলেন, ক্যানসার খুবই মারাত্মক। কিন্তু যা এটিকে আরও খারাপ করে তোলে, তা হলো ক্যানসারের চিকিৎসা।
সুর মতে, আলট্রাসাউন্ড ক্যানসারের ‘জাদুকরী নিরাময় পদ্ধতি’ নয়। যেকোনো চিকিৎসার মতোই এরও খারাপ দিক ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে যেমন তিনি কয়েক দশক আগে তাঁর গবেষণাগারের সহকর্মীদের বিরক্তিকর শব্দ থেকে বাঁচিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই সু আশা করেন, তাঁর আবিষ্কার ও অন্য বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার আগামী বছরগুলোতে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় কষ্ট থেকে রেহাই দেবে।

শরীরের ভেতরের অংশ পরীক্ষা করতে দীর্ঘদিন ধরে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে আসছেন চিকিৎসকেরা। এখন এই আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে ক্যানসারের চিকিৎসাও সম্ভব হবে। এই হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে এবার ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, এই নতুন সম্ভাবনার ধারক যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ঝেন সু। বিশের দশকের গোড়ার দিকে ঝেন সু যখন পিএইচডির ছাত্রী ছিলেন, সে সময় এ গবেষণা শুরু করেন তিনি। গবেষণায় সু এমন একটা উপায় খুঁজছিলেন, যার মাধ্যমে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার ছাড়াই রোগাক্রান্ত টিস্যু ধ্বংস ও অপসারণ করতে পারবেন। হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গ অর্থাৎ আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে টিস্যু ভেঙে ফেলার ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। ঝেন সু প্রথমে এ পরীক্ষা চালান শূকরের হৃৎপিণ্ডের ওপর।

সাধারণত আলট্রাসাউন্ড মানুষের শ্রবণযোগ্য হওয়ার কথা নয়, কিন্তু সু তাঁর পরীক্ষায় এত শক্তিশালী অ্যামপ্লিফায়ার ব্যবহার করেছিলেন যে, গবেষণাগারে থাকা অন্য গবেষকেরা শব্দ নিয়ে অভিযোগ দিতে থাকেন। ঝেন সু বলেন, তখন পর্যন্ত কোনো কাজ হচ্ছিল না। তাই তিনি সহকর্মীদের শান্ত করতে আলট্রাসাউন্ড পালসের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন, যা শব্দের মাত্রা মানুষের শ্রবণসীমার বাইরে নিয়ে যাবে।
অপ্রত্যাশিতভাবে প্রতি সেকেন্ডে পালসের সংখ্যা বাড়ানো কেবল সহকর্মীদের বিরক্তিই কমাল না, বরং তিনি যে পদ্ধতিতে চেষ্টা করেছিলেন, তারচেয়ে বেশি কার্যকর প্রমাণিত হলো। তিনি দেখতে পেলেন, আলট্রাসাউন্ড প্রয়োগের এক মিনিটের মধ্যে শূকরের হৃৎপিণ্ডের টিস্যুতে একটি গর্ত তৈরি হলো।
সে সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অধ্যাপক সু বলেন, ‘আমি ভাবলাম, আমি স্বপ্ন দেখছি।’
সুর এই আবিষ্কার ‘হিস্টোট্রিপসি’ নামে পরিচিত। এই আবিষ্কার কয়েক দশক পরে এসে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে উন্নত ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা করছে। অস্ত্রোপচার ছাড়া শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে ক্যানসার রোগীদের শরীর থেকে টিউমার নির্মূলের সুযোগ দিচ্ছে।
হিস্টোট্রিপসি ২০২৩ সালের অক্টোবরে লিভার টিউমারের চিকিৎসার জন্য মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) অনুমোদন পায়। পরের বছর এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকীকরণের জন্য গঠিত কোম্পানি হিস্টোসোনিক্সের অর্থায়নে একটি ছোট গবেষণায় দেখা যায়, পদ্ধতিটি ৯৫ শতাংশ লিভার টিউমারের বিরুদ্ধে প্রযুক্তিগতভাবে সফল। যদিও পেটে ব্যথা থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে, তবুও গবেষণায় দেখা গেছে, জটিলতাগুলো বিরল এবং পদ্ধতিটি তুলনামূলক নিরাপদ।
গত জুন মাসে প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে হিস্টোট্রিপসিকে অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য। ক্লিনিক্যাল চাহিদা পূরণের জন্য দেশটির ইনোভেশন ডিভাইস অ্যাকসেস পাথওয়ের পাইলট পর্বের অধীনে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে (এনএইচএস) চিকিৎসা হিসেবে সহজলভ্য করা হয়।
স্পেনের রামন ই কাজাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ রিসার্চের গবেষক সুলি আর্ল বলেন, মানুষ মনে করে আলট্রাসাউন্ড কেবল ইমেজিং বা শরীরের ভেতরের ছবি তোলার কাজ করে। আর্ল জানান, গবেষণা থেকে উঠে এসেছে, এটি কেবল টিউমারই ধ্বংস করতে পারে না, বরং মেটাস্ট্যাটিক রোগ (শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়া ক্যানসার) নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অন্যান্য ক্যানসার চিকিৎসার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতেও সক্ষম, তা-ও রোগীকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে না নিয়ে।

আলট্রাসাউন্ড যেভাবে কাজ করে
সাধারণ সোনোগ্রামের মতো আলট্রাসাউন্ড হ্যান্ডহেল্ড ট্রান্সডিউসারের মাধ্যমে উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গ পাঠায় এবং প্রতিফলিত তরঙ্গগুলোকে চিত্রে রূপান্তর করে। ক্যানসার চিকিৎসায় আলট্রাসাউন্ড তরঙ্গগুলোকে টিউমারের একটি ছোট অংশের ওপর কেন্দ্রীভূত করা হয় সেটিকে ধ্বংস করার জন্য।
এই পালসগুলো ছোট ছোট মাইক্রোবাবল তৈরি করে, যা কয়েক মাইক্রোসেকেন্ডের মধ্যে প্রসারিত হয় এবং তারপর ভেঙে যায়। এই প্রক্রিয়ায় তারা টিউমারের টিস্যুকেও ভেঙে ফেলে। লিভার ক্যানসারে ট্রান্সডিউসার রোবটিক আর্ম দিয়ে টিউমারের এলাকা চিহ্নিত করে কাজ করা হয়।
অধ্যাপক সু জানান, এ কাজে ব্যবহৃত হিস্টোট্রিপসি ডিভাইসগুলো হয় কালারিং পেনের ডগার সাইজের। পুরো প্রক্রিয়াটি এত ছোট যে, রোগীরা ওই দিনই বাড়ি ফিরতে পারেন। হিস্টোসোনিক্সের তথ্য অনুসারে, বেশির ভাগ প্রক্রিয়া এক থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়।
হিস্টোট্রিপসির সুবিধাগুলো আশা জাগালেও এই চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে এখনো কিছু প্রশ্ন রয়েছে। চিকিৎসার পর আবারও ক্যানসার হতে পারে কি না, এ নিয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি। এদিকে কিছু গবেষক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, হিস্টোট্রিপসির মাধ্যমে টিউমার ভাঙার সময় শরীরের ভেতরে ভেঙে যাওয়ায় তা নতুন ক্যানসার কোষের জন্ম দিতে পারে। আর এগুলো শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে প্রাণীদের ওপর করা গবেষণাগুলোতে এখন পর্যন্ত সে ধরনের আশঙ্কার কোনো প্রমাণ মেলেনি।
গবেষণা বলছে, হিস্টোট্রিপসি সব ধরনের ক্যানসারের জন্য কার্যকর নাও হতে পারে। হাড় আলট্রাসাউন্ডকে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে বাধা দিতে পারে, ফলে নির্দিষ্ট স্থানে থাকা টিউমার ধ্বংস করা সম্ভব নাও হতে পারে। এ ছাড়া ফুসফুসের মতো গ্যাসযুক্ত অঙ্গের ক্ষেত্রে হিস্টোট্রিপসি ব্যবহার বিপজ্জনক হতে পারে, যা আশপাশের স্বাভাবিক টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে হিস্টোসোনিক্স বর্তমানে কিডনি ও প্যানক্রিয়াসের টিউমারের সম্ভাব্য চিকিৎসা হিসেবে হিস্টোট্রিপসি নিয়ে গবেষণা করছে।
তবে ক্যানসার চিকিৎসায় হিস্টোট্রিপসি আলট্রাসাউন্ডের প্রথম ব্যবহার নয়। টিউমারের ওপর প্রয়োগের একটি পুরোনো ও প্রতিষ্ঠিত প্রযুক্তি হাই-ইনটেনসিটি ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড (এইচআইএফইই)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড ক্যানসার ইমিউনোথেরাপি সেন্টারের সহপরিচালক রিচার্ড প্রাইস বলেন, টিউমারের ওপর আলট্রাসাউন্ডের একটি কেন্দ্রীভূত বিস্ফোরণের মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন করা হয়, যা টিস্যুটিকে মূলত ‘রান্না’ করে ফেলে।
প্রাইস আরও বলেন, ‘আপনি যদি একটি ম্যাগনিফাইং গ্লাস হাতে নিয়ে রোদের দিনে একটি শুকনো পাতার ওপর ধরেন, তাহলে কিন্তু পাতাটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া সম্ভব। এইচআইএফইউ মূলত একই কাজ করে, তবে ক্যানসারের টিস্যুর ওপর তাপ তৈরির জন্য এটি শব্দশক্তি ব্যবহার করে।’
অনকোলজি বা ক্যানসার চিকিৎসাবিজ্ঞানে অস্ত্রোপচার ছাড়াই প্রোস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসা করতে সবচেয়ে বেশি পরিচিত চিকিৎসাপদ্ধতি এইচআইএফইউ। ২০২৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রে এটি অস্ত্রোপচারের মতোই কার্যকর হতে পারে। এ ক্ষেত্রে রোগীরা ঘুম থেকে ওঠার পর কিছুটা ব্যথা ও মূত্রসংক্রান্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করতে পারেন, তবে সাধারণত অস্ত্রোপচারের মতো নিবিড় চিকিৎসার তুলনায় আরোগ্য লাভ দ্রুত হয়।
হিস্টোট্রিপসি ও এইচআইএফইউ থেরাপি দুটিই সাধারণত জেনারেল অ্যানেসথেসিয়ার অধীনে করা হয়, যাতে চিকিৎসার সময় রোগীরা নড়াচড়া না করেন এবং এর ফলে আশপাশের অঙ্গ বা টিস্যুর দুর্ঘটনাক্রমে ক্ষতির সম্ভাবনা কমে যায়। তবে হিস্টোট্রিপসিতে আশপাশের সুস্থ টিস্যুর ক্ষতি হতে পারে, এমন তাপ উৎপন্ন হয় না।

তবে এইচআইএফইউ দিয়ে সব ধরনের ক্যানসার চিকিৎসা সম্ভব নয়। যাঁদের প্রোস্টেট ক্যানসার শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে গেছে, তাঁদের ক্ষেত্রে সাধারণত এটি কাজ করে না। তবুও বিভিন্ন দেশের গবেষকেরা এটিকে স্তন ক্যানসারের মতো কিছু কিছু ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহার করে দেখছেন।
গবেষকেরা বলছেন, ক্যানসারের অন্যান্য বিদ্যমান চিকিৎসার সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করলে আলট্রাসাউন্ডের সফলতার মাত্রা বাড়তে পারে।
ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রিচার্ড প্রাইস সতর্ক করে বলেন, আলট্রাসাউন্ড নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো তুলনামূলকভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এ নিয়ে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন।
তবে বর্তমানে ব্যবহৃত আলট্রাসাউন্ড পদ্ধতিগুলো অনকোলজিতে (ক্যানসার চিকিৎসায়) এক নতুন যুগ নিয়ে আসছে। অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি ও রেডিয়েশনের মতো কার্যকর কিন্তু মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত চিকিৎসাগুলোকে প্রতিস্থাপন ও সেগুলোর উন্নতি ঘটানো এর লক্ষ্য।
ঝেন সু বলেন, ক্যানসার খুবই মারাত্মক। কিন্তু যা এটিকে আরও খারাপ করে তোলে, তা হলো ক্যানসারের চিকিৎসা।
সুর মতে, আলট্রাসাউন্ড ক্যানসারের ‘জাদুকরী নিরাময় পদ্ধতি’ নয়। যেকোনো চিকিৎসার মতোই এরও খারাপ দিক ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে যেমন তিনি কয়েক দশক আগে তাঁর গবেষণাগারের সহকর্মীদের বিরক্তিকর শব্দ থেকে বাঁচিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই সু আশা করেন, তাঁর আবিষ্কার ও অন্য বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার আগামী বছরগুলোতে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় কষ্ট থেকে রেহাই দেবে।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

শরীরের ভেতরের অংশ পরীক্ষা করতে দীর্ঘদিন ধরে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে আসছেন চিকিৎসকেরা। এখন এই আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে ক্যানসারের চিকিৎসাও সম্ভব হবে। এই হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে এবার ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, এই নতুন সম্ভাবনার ধারক যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ঝেন সু। বিশের দশকের গোড়ার দিকে ঝেন সু যখন পিএইচডির ছাত্রী ছিলেন, সে সময় এ গবেষণা শুরু করেন তিনি। গবেষণায় সু এমন একটা উপায় খুঁজছিলেন, যার মাধ্যমে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার ছাড়াই রোগাক্রান্ত টিস্যু ধ্বংস ও অপসারণ করতে পারবেন। হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গ অর্থাৎ আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে টিস্যু ভেঙে ফেলার ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। ঝেন সু প্রথমে এ পরীক্ষা চালান শূকরের হৃৎপিণ্ডের ওপর।

সাধারণত আলট্রাসাউন্ড মানুষের শ্রবণযোগ্য হওয়ার কথা নয়, কিন্তু সু তাঁর পরীক্ষায় এত শক্তিশালী অ্যামপ্লিফায়ার ব্যবহার করেছিলেন যে, গবেষণাগারে থাকা অন্য গবেষকেরা শব্দ নিয়ে অভিযোগ দিতে থাকেন। ঝেন সু বলেন, তখন পর্যন্ত কোনো কাজ হচ্ছিল না। তাই তিনি সহকর্মীদের শান্ত করতে আলট্রাসাউন্ড পালসের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন, যা শব্দের মাত্রা মানুষের শ্রবণসীমার বাইরে নিয়ে যাবে।
অপ্রত্যাশিতভাবে প্রতি সেকেন্ডে পালসের সংখ্যা বাড়ানো কেবল সহকর্মীদের বিরক্তিই কমাল না, বরং তিনি যে পদ্ধতিতে চেষ্টা করেছিলেন, তারচেয়ে বেশি কার্যকর প্রমাণিত হলো। তিনি দেখতে পেলেন, আলট্রাসাউন্ড প্রয়োগের এক মিনিটের মধ্যে শূকরের হৃৎপিণ্ডের টিস্যুতে একটি গর্ত তৈরি হলো।
সে সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অধ্যাপক সু বলেন, ‘আমি ভাবলাম, আমি স্বপ্ন দেখছি।’
সুর এই আবিষ্কার ‘হিস্টোট্রিপসি’ নামে পরিচিত। এই আবিষ্কার কয়েক দশক পরে এসে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে উন্নত ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা করছে। অস্ত্রোপচার ছাড়া শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে ক্যানসার রোগীদের শরীর থেকে টিউমার নির্মূলের সুযোগ দিচ্ছে।
হিস্টোট্রিপসি ২০২৩ সালের অক্টোবরে লিভার টিউমারের চিকিৎসার জন্য মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) অনুমোদন পায়। পরের বছর এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকীকরণের জন্য গঠিত কোম্পানি হিস্টোসোনিক্সের অর্থায়নে একটি ছোট গবেষণায় দেখা যায়, পদ্ধতিটি ৯৫ শতাংশ লিভার টিউমারের বিরুদ্ধে প্রযুক্তিগতভাবে সফল। যদিও পেটে ব্যথা থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে, তবুও গবেষণায় দেখা গেছে, জটিলতাগুলো বিরল এবং পদ্ধতিটি তুলনামূলক নিরাপদ।
গত জুন মাসে প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে হিস্টোট্রিপসিকে অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য। ক্লিনিক্যাল চাহিদা পূরণের জন্য দেশটির ইনোভেশন ডিভাইস অ্যাকসেস পাথওয়ের পাইলট পর্বের অধীনে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে (এনএইচএস) চিকিৎসা হিসেবে সহজলভ্য করা হয়।
স্পেনের রামন ই কাজাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ রিসার্চের গবেষক সুলি আর্ল বলেন, মানুষ মনে করে আলট্রাসাউন্ড কেবল ইমেজিং বা শরীরের ভেতরের ছবি তোলার কাজ করে। আর্ল জানান, গবেষণা থেকে উঠে এসেছে, এটি কেবল টিউমারই ধ্বংস করতে পারে না, বরং মেটাস্ট্যাটিক রোগ (শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়া ক্যানসার) নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অন্যান্য ক্যানসার চিকিৎসার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতেও সক্ষম, তা-ও রোগীকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে না নিয়ে।

আলট্রাসাউন্ড যেভাবে কাজ করে
সাধারণ সোনোগ্রামের মতো আলট্রাসাউন্ড হ্যান্ডহেল্ড ট্রান্সডিউসারের মাধ্যমে উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গ পাঠায় এবং প্রতিফলিত তরঙ্গগুলোকে চিত্রে রূপান্তর করে। ক্যানসার চিকিৎসায় আলট্রাসাউন্ড তরঙ্গগুলোকে টিউমারের একটি ছোট অংশের ওপর কেন্দ্রীভূত করা হয় সেটিকে ধ্বংস করার জন্য।
এই পালসগুলো ছোট ছোট মাইক্রোবাবল তৈরি করে, যা কয়েক মাইক্রোসেকেন্ডের মধ্যে প্রসারিত হয় এবং তারপর ভেঙে যায়। এই প্রক্রিয়ায় তারা টিউমারের টিস্যুকেও ভেঙে ফেলে। লিভার ক্যানসারে ট্রান্সডিউসার রোবটিক আর্ম দিয়ে টিউমারের এলাকা চিহ্নিত করে কাজ করা হয়।
অধ্যাপক সু জানান, এ কাজে ব্যবহৃত হিস্টোট্রিপসি ডিভাইসগুলো হয় কালারিং পেনের ডগার সাইজের। পুরো প্রক্রিয়াটি এত ছোট যে, রোগীরা ওই দিনই বাড়ি ফিরতে পারেন। হিস্টোসোনিক্সের তথ্য অনুসারে, বেশির ভাগ প্রক্রিয়া এক থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়।
হিস্টোট্রিপসির সুবিধাগুলো আশা জাগালেও এই চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে এখনো কিছু প্রশ্ন রয়েছে। চিকিৎসার পর আবারও ক্যানসার হতে পারে কি না, এ নিয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি। এদিকে কিছু গবেষক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, হিস্টোট্রিপসির মাধ্যমে টিউমার ভাঙার সময় শরীরের ভেতরে ভেঙে যাওয়ায় তা নতুন ক্যানসার কোষের জন্ম দিতে পারে। আর এগুলো শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে প্রাণীদের ওপর করা গবেষণাগুলোতে এখন পর্যন্ত সে ধরনের আশঙ্কার কোনো প্রমাণ মেলেনি।
গবেষণা বলছে, হিস্টোট্রিপসি সব ধরনের ক্যানসারের জন্য কার্যকর নাও হতে পারে। হাড় আলট্রাসাউন্ডকে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে বাধা দিতে পারে, ফলে নির্দিষ্ট স্থানে থাকা টিউমার ধ্বংস করা সম্ভব নাও হতে পারে। এ ছাড়া ফুসফুসের মতো গ্যাসযুক্ত অঙ্গের ক্ষেত্রে হিস্টোট্রিপসি ব্যবহার বিপজ্জনক হতে পারে, যা আশপাশের স্বাভাবিক টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে হিস্টোসোনিক্স বর্তমানে কিডনি ও প্যানক্রিয়াসের টিউমারের সম্ভাব্য চিকিৎসা হিসেবে হিস্টোট্রিপসি নিয়ে গবেষণা করছে।
তবে ক্যানসার চিকিৎসায় হিস্টোট্রিপসি আলট্রাসাউন্ডের প্রথম ব্যবহার নয়। টিউমারের ওপর প্রয়োগের একটি পুরোনো ও প্রতিষ্ঠিত প্রযুক্তি হাই-ইনটেনসিটি ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড (এইচআইএফইই)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড ক্যানসার ইমিউনোথেরাপি সেন্টারের সহপরিচালক রিচার্ড প্রাইস বলেন, টিউমারের ওপর আলট্রাসাউন্ডের একটি কেন্দ্রীভূত বিস্ফোরণের মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন করা হয়, যা টিস্যুটিকে মূলত ‘রান্না’ করে ফেলে।
প্রাইস আরও বলেন, ‘আপনি যদি একটি ম্যাগনিফাইং গ্লাস হাতে নিয়ে রোদের দিনে একটি শুকনো পাতার ওপর ধরেন, তাহলে কিন্তু পাতাটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া সম্ভব। এইচআইএফইউ মূলত একই কাজ করে, তবে ক্যানসারের টিস্যুর ওপর তাপ তৈরির জন্য এটি শব্দশক্তি ব্যবহার করে।’
অনকোলজি বা ক্যানসার চিকিৎসাবিজ্ঞানে অস্ত্রোপচার ছাড়াই প্রোস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসা করতে সবচেয়ে বেশি পরিচিত চিকিৎসাপদ্ধতি এইচআইএফইউ। ২০২৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রে এটি অস্ত্রোপচারের মতোই কার্যকর হতে পারে। এ ক্ষেত্রে রোগীরা ঘুম থেকে ওঠার পর কিছুটা ব্যথা ও মূত্রসংক্রান্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করতে পারেন, তবে সাধারণত অস্ত্রোপচারের মতো নিবিড় চিকিৎসার তুলনায় আরোগ্য লাভ দ্রুত হয়।
হিস্টোট্রিপসি ও এইচআইএফইউ থেরাপি দুটিই সাধারণত জেনারেল অ্যানেসথেসিয়ার অধীনে করা হয়, যাতে চিকিৎসার সময় রোগীরা নড়াচড়া না করেন এবং এর ফলে আশপাশের অঙ্গ বা টিস্যুর দুর্ঘটনাক্রমে ক্ষতির সম্ভাবনা কমে যায়। তবে হিস্টোট্রিপসিতে আশপাশের সুস্থ টিস্যুর ক্ষতি হতে পারে, এমন তাপ উৎপন্ন হয় না।

তবে এইচআইএফইউ দিয়ে সব ধরনের ক্যানসার চিকিৎসা সম্ভব নয়। যাঁদের প্রোস্টেট ক্যানসার শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে গেছে, তাঁদের ক্ষেত্রে সাধারণত এটি কাজ করে না। তবুও বিভিন্ন দেশের গবেষকেরা এটিকে স্তন ক্যানসারের মতো কিছু কিছু ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহার করে দেখছেন।
গবেষকেরা বলছেন, ক্যানসারের অন্যান্য বিদ্যমান চিকিৎসার সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করলে আলট্রাসাউন্ডের সফলতার মাত্রা বাড়তে পারে।
ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রিচার্ড প্রাইস সতর্ক করে বলেন, আলট্রাসাউন্ড নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো তুলনামূলকভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এ নিয়ে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন।
তবে বর্তমানে ব্যবহৃত আলট্রাসাউন্ড পদ্ধতিগুলো অনকোলজিতে (ক্যানসার চিকিৎসায়) এক নতুন যুগ নিয়ে আসছে। অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি ও রেডিয়েশনের মতো কার্যকর কিন্তু মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত চিকিৎসাগুলোকে প্রতিস্থাপন ও সেগুলোর উন্নতি ঘটানো এর লক্ষ্য।
ঝেন সু বলেন, ক্যানসার খুবই মারাত্মক। কিন্তু যা এটিকে আরও খারাপ করে তোলে, তা হলো ক্যানসারের চিকিৎসা।
সুর মতে, আলট্রাসাউন্ড ক্যানসারের ‘জাদুকরী নিরাময় পদ্ধতি’ নয়। যেকোনো চিকিৎসার মতোই এরও খারাপ দিক ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে যেমন তিনি কয়েক দশক আগে তাঁর গবেষণাগারের সহকর্মীদের বিরক্তিকর শব্দ থেকে বাঁচিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই সু আশা করেন, তাঁর আবিষ্কার ও অন্য বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার আগামী বছরগুলোতে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় কষ্ট থেকে রেহাই দেবে।

শরীরের ভেতরের অংশ পরীক্ষা করতে দীর্ঘদিন ধরে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে আসছেন চিকিৎসকেরা। এখন এই আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে ক্যানসারের চিকিৎসাও সম্ভব হবে। এই হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে এবার ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, এই নতুন সম্ভাবনার ধারক যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ঝেন সু। বিশের দশকের গোড়ার দিকে ঝেন সু যখন পিএইচডির ছাত্রী ছিলেন, সে সময় এ গবেষণা শুরু করেন তিনি। গবেষণায় সু এমন একটা উপায় খুঁজছিলেন, যার মাধ্যমে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার ছাড়াই রোগাক্রান্ত টিস্যু ধ্বংস ও অপসারণ করতে পারবেন। হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গ অর্থাৎ আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে টিস্যু ভেঙে ফেলার ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। ঝেন সু প্রথমে এ পরীক্ষা চালান শূকরের হৃৎপিণ্ডের ওপর।

সাধারণত আলট্রাসাউন্ড মানুষের শ্রবণযোগ্য হওয়ার কথা নয়, কিন্তু সু তাঁর পরীক্ষায় এত শক্তিশালী অ্যামপ্লিফায়ার ব্যবহার করেছিলেন যে, গবেষণাগারে থাকা অন্য গবেষকেরা শব্দ নিয়ে অভিযোগ দিতে থাকেন। ঝেন সু বলেন, তখন পর্যন্ত কোনো কাজ হচ্ছিল না। তাই তিনি সহকর্মীদের শান্ত করতে আলট্রাসাউন্ড পালসের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন, যা শব্দের মাত্রা মানুষের শ্রবণসীমার বাইরে নিয়ে যাবে।
অপ্রত্যাশিতভাবে প্রতি সেকেন্ডে পালসের সংখ্যা বাড়ানো কেবল সহকর্মীদের বিরক্তিই কমাল না, বরং তিনি যে পদ্ধতিতে চেষ্টা করেছিলেন, তারচেয়ে বেশি কার্যকর প্রমাণিত হলো। তিনি দেখতে পেলেন, আলট্রাসাউন্ড প্রয়োগের এক মিনিটের মধ্যে শূকরের হৃৎপিণ্ডের টিস্যুতে একটি গর্ত তৈরি হলো।
সে সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অধ্যাপক সু বলেন, ‘আমি ভাবলাম, আমি স্বপ্ন দেখছি।’
সুর এই আবিষ্কার ‘হিস্টোট্রিপসি’ নামে পরিচিত। এই আবিষ্কার কয়েক দশক পরে এসে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে উন্নত ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা করছে। অস্ত্রোপচার ছাড়া শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে ক্যানসার রোগীদের শরীর থেকে টিউমার নির্মূলের সুযোগ দিচ্ছে।
হিস্টোট্রিপসি ২০২৩ সালের অক্টোবরে লিভার টিউমারের চিকিৎসার জন্য মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) অনুমোদন পায়। পরের বছর এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকীকরণের জন্য গঠিত কোম্পানি হিস্টোসোনিক্সের অর্থায়নে একটি ছোট গবেষণায় দেখা যায়, পদ্ধতিটি ৯৫ শতাংশ লিভার টিউমারের বিরুদ্ধে প্রযুক্তিগতভাবে সফল। যদিও পেটে ব্যথা থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে, তবুও গবেষণায় দেখা গেছে, জটিলতাগুলো বিরল এবং পদ্ধতিটি তুলনামূলক নিরাপদ।
গত জুন মাসে প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে হিস্টোট্রিপসিকে অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য। ক্লিনিক্যাল চাহিদা পূরণের জন্য দেশটির ইনোভেশন ডিভাইস অ্যাকসেস পাথওয়ের পাইলট পর্বের অধীনে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে (এনএইচএস) চিকিৎসা হিসেবে সহজলভ্য করা হয়।
স্পেনের রামন ই কাজাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ রিসার্চের গবেষক সুলি আর্ল বলেন, মানুষ মনে করে আলট্রাসাউন্ড কেবল ইমেজিং বা শরীরের ভেতরের ছবি তোলার কাজ করে। আর্ল জানান, গবেষণা থেকে উঠে এসেছে, এটি কেবল টিউমারই ধ্বংস করতে পারে না, বরং মেটাস্ট্যাটিক রোগ (শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়া ক্যানসার) নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অন্যান্য ক্যানসার চিকিৎসার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতেও সক্ষম, তা-ও রোগীকে অস্ত্রোপচারের টেবিলে না নিয়ে।

আলট্রাসাউন্ড যেভাবে কাজ করে
সাধারণ সোনোগ্রামের মতো আলট্রাসাউন্ড হ্যান্ডহেল্ড ট্রান্সডিউসারের মাধ্যমে উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গ পাঠায় এবং প্রতিফলিত তরঙ্গগুলোকে চিত্রে রূপান্তর করে। ক্যানসার চিকিৎসায় আলট্রাসাউন্ড তরঙ্গগুলোকে টিউমারের একটি ছোট অংশের ওপর কেন্দ্রীভূত করা হয় সেটিকে ধ্বংস করার জন্য।
এই পালসগুলো ছোট ছোট মাইক্রোবাবল তৈরি করে, যা কয়েক মাইক্রোসেকেন্ডের মধ্যে প্রসারিত হয় এবং তারপর ভেঙে যায়। এই প্রক্রিয়ায় তারা টিউমারের টিস্যুকেও ভেঙে ফেলে। লিভার ক্যানসারে ট্রান্সডিউসার রোবটিক আর্ম দিয়ে টিউমারের এলাকা চিহ্নিত করে কাজ করা হয়।
অধ্যাপক সু জানান, এ কাজে ব্যবহৃত হিস্টোট্রিপসি ডিভাইসগুলো হয় কালারিং পেনের ডগার সাইজের। পুরো প্রক্রিয়াটি এত ছোট যে, রোগীরা ওই দিনই বাড়ি ফিরতে পারেন। হিস্টোসোনিক্সের তথ্য অনুসারে, বেশির ভাগ প্রক্রিয়া এক থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়।
হিস্টোট্রিপসির সুবিধাগুলো আশা জাগালেও এই চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে এখনো কিছু প্রশ্ন রয়েছে। চিকিৎসার পর আবারও ক্যানসার হতে পারে কি না, এ নিয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি। এদিকে কিছু গবেষক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, হিস্টোট্রিপসির মাধ্যমে টিউমার ভাঙার সময় শরীরের ভেতরে ভেঙে যাওয়ায় তা নতুন ক্যানসার কোষের জন্ম দিতে পারে। আর এগুলো শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে প্রাণীদের ওপর করা গবেষণাগুলোতে এখন পর্যন্ত সে ধরনের আশঙ্কার কোনো প্রমাণ মেলেনি।
গবেষণা বলছে, হিস্টোট্রিপসি সব ধরনের ক্যানসারের জন্য কার্যকর নাও হতে পারে। হাড় আলট্রাসাউন্ডকে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে বাধা দিতে পারে, ফলে নির্দিষ্ট স্থানে থাকা টিউমার ধ্বংস করা সম্ভব নাও হতে পারে। এ ছাড়া ফুসফুসের মতো গ্যাসযুক্ত অঙ্গের ক্ষেত্রে হিস্টোট্রিপসি ব্যবহার বিপজ্জনক হতে পারে, যা আশপাশের স্বাভাবিক টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে হিস্টোসোনিক্স বর্তমানে কিডনি ও প্যানক্রিয়াসের টিউমারের সম্ভাব্য চিকিৎসা হিসেবে হিস্টোট্রিপসি নিয়ে গবেষণা করছে।
তবে ক্যানসার চিকিৎসায় হিস্টোট্রিপসি আলট্রাসাউন্ডের প্রথম ব্যবহার নয়। টিউমারের ওপর প্রয়োগের একটি পুরোনো ও প্রতিষ্ঠিত প্রযুক্তি হাই-ইনটেনসিটি ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড (এইচআইএফইই)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড ক্যানসার ইমিউনোথেরাপি সেন্টারের সহপরিচালক রিচার্ড প্রাইস বলেন, টিউমারের ওপর আলট্রাসাউন্ডের একটি কেন্দ্রীভূত বিস্ফোরণের মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন করা হয়, যা টিস্যুটিকে মূলত ‘রান্না’ করে ফেলে।
প্রাইস আরও বলেন, ‘আপনি যদি একটি ম্যাগনিফাইং গ্লাস হাতে নিয়ে রোদের দিনে একটি শুকনো পাতার ওপর ধরেন, তাহলে কিন্তু পাতাটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া সম্ভব। এইচআইএফইউ মূলত একই কাজ করে, তবে ক্যানসারের টিস্যুর ওপর তাপ তৈরির জন্য এটি শব্দশক্তি ব্যবহার করে।’
অনকোলজি বা ক্যানসার চিকিৎসাবিজ্ঞানে অস্ত্রোপচার ছাড়াই প্রোস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসা করতে সবচেয়ে বেশি পরিচিত চিকিৎসাপদ্ধতি এইচআইএফইউ। ২০২৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রে এটি অস্ত্রোপচারের মতোই কার্যকর হতে পারে। এ ক্ষেত্রে রোগীরা ঘুম থেকে ওঠার পর কিছুটা ব্যথা ও মূত্রসংক্রান্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করতে পারেন, তবে সাধারণত অস্ত্রোপচারের মতো নিবিড় চিকিৎসার তুলনায় আরোগ্য লাভ দ্রুত হয়।
হিস্টোট্রিপসি ও এইচআইএফইউ থেরাপি দুটিই সাধারণত জেনারেল অ্যানেসথেসিয়ার অধীনে করা হয়, যাতে চিকিৎসার সময় রোগীরা নড়াচড়া না করেন এবং এর ফলে আশপাশের অঙ্গ বা টিস্যুর দুর্ঘটনাক্রমে ক্ষতির সম্ভাবনা কমে যায়। তবে হিস্টোট্রিপসিতে আশপাশের সুস্থ টিস্যুর ক্ষতি হতে পারে, এমন তাপ উৎপন্ন হয় না।

তবে এইচআইএফইউ দিয়ে সব ধরনের ক্যানসার চিকিৎসা সম্ভব নয়। যাঁদের প্রোস্টেট ক্যানসার শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে গেছে, তাঁদের ক্ষেত্রে সাধারণত এটি কাজ করে না। তবুও বিভিন্ন দেশের গবেষকেরা এটিকে স্তন ক্যানসারের মতো কিছু কিছু ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহার করে দেখছেন।
গবেষকেরা বলছেন, ক্যানসারের অন্যান্য বিদ্যমান চিকিৎসার সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করলে আলট্রাসাউন্ডের সফলতার মাত্রা বাড়তে পারে।
ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রিচার্ড প্রাইস সতর্ক করে বলেন, আলট্রাসাউন্ড নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো তুলনামূলকভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এ নিয়ে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন।
তবে বর্তমানে ব্যবহৃত আলট্রাসাউন্ড পদ্ধতিগুলো অনকোলজিতে (ক্যানসার চিকিৎসায়) এক নতুন যুগ নিয়ে আসছে। অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি ও রেডিয়েশনের মতো কার্যকর কিন্তু মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত চিকিৎসাগুলোকে প্রতিস্থাপন ও সেগুলোর উন্নতি ঘটানো এর লক্ষ্য।
ঝেন সু বলেন, ক্যানসার খুবই মারাত্মক। কিন্তু যা এটিকে আরও খারাপ করে তোলে, তা হলো ক্যানসারের চিকিৎসা।
সুর মতে, আলট্রাসাউন্ড ক্যানসারের ‘জাদুকরী নিরাময় পদ্ধতি’ নয়। যেকোনো চিকিৎসার মতোই এরও খারাপ দিক ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে যেমন তিনি কয়েক দশক আগে তাঁর গবেষণাগারের সহকর্মীদের বিরক্তিকর শব্দ থেকে বাঁচিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই সু আশা করেন, তাঁর আবিষ্কার ও অন্য বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার আগামী বছরগুলোতে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় কষ্ট থেকে রেহাই দেবে।

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৬ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
১৪ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে, তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাসপাতালটির আইসিইউ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।

এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. আরিফ মাহমুদ আজ শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে মিডিয়া ব্রিফের চেয়ে তার চিকিৎসার দিকেই আমাদের মনোযোগ বেশি। তার ভাই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। হাদির বর্তমান অবস্থা তার পরিবারকে আমরা ব্রিফ করেছি।’
মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত তুলে ধরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, রোগীর মস্তিষ্ক ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল (স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের আঘাতের পর মস্তিষ্ককে আরও ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি ও যত্ন) অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে আবার ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। হাদির ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব (বুকের ভেতর থেকে বাতাস, রক্ত বা অন্যান্য তরল বের করতে ব্যবহৃত নমনীয় নল) দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (তীব্র শ্বাসকষ্ট সিন্ড্রোম ফুসফুসের একটি গুরুতর অবস্থা) প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখতে পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স (শরীরে প্রবেশ করা তরল এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরলের মধ্যকার ভারসাম্য) যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে। পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা (ডিআইসি) দেখা দিলেও তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, হাদির মস্তিষ্কের নিচের অংশ বা গুরুমস্তিষ্কে আঘাতের (ব্রেন স্টেম ইনজুরি) কারণে রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংবেদনশীল; রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দনের ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, তা চলমান থাকবে। যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাই রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার (হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের ধীরগতি বা অনিয়মিত গতি ঠিক রাখতে অস্থায়ী চিকিৎসা যন্ত্র) স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শরীরে আপাতত নতুন কোনো অস্ত্রোপচার বা হস্তক্ষেপ করা হবে না, পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসাই চলবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
হাসপাতালে ভিড় না করতে; কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে এবং রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না। হাদি বর্তমানে ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনও আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
১৪ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে, তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাসপাতালটির আইসিইউ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।

এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. আরিফ মাহমুদ আজ শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে মিডিয়া ব্রিফের চেয়ে তার চিকিৎসার দিকেই আমাদের মনোযোগ বেশি। তার ভাই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। হাদির বর্তমান অবস্থা তার পরিবারকে আমরা ব্রিফ করেছি।’
মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত তুলে ধরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, রোগীর মস্তিষ্ক ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল (স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের আঘাতের পর মস্তিষ্ককে আরও ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি ও যত্ন) অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে আবার ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। হাদির ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব (বুকের ভেতর থেকে বাতাস, রক্ত বা অন্যান্য তরল বের করতে ব্যবহৃত নমনীয় নল) দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (তীব্র শ্বাসকষ্ট সিন্ড্রোম ফুসফুসের একটি গুরুতর অবস্থা) প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখতে পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স (শরীরে প্রবেশ করা তরল এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরলের মধ্যকার ভারসাম্য) যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে। পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা (ডিআইসি) দেখা দিলেও তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, হাদির মস্তিষ্কের নিচের অংশ বা গুরুমস্তিষ্কে আঘাতের (ব্রেন স্টেম ইনজুরি) কারণে রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংবেদনশীল; রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দনের ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, তা চলমান থাকবে। যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাই রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার (হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের ধীরগতি বা অনিয়মিত গতি ঠিক রাখতে অস্থায়ী চিকিৎসা যন্ত্র) স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শরীরে আপাতত নতুন কোনো অস্ত্রোপচার বা হস্তক্ষেপ করা হবে না, পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসাই চলবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
হাসপাতালে ভিড় না করতে; কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে এবং রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না। হাদি বর্তমানে ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনও আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

শরীরের ভেতরের অংশ পরীক্ষা করতে দীর্ঘদিন ধরে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে আসছেন চিকিৎসকেরা। এখন এই আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে ক্যানসারের চিকিৎসাও সম্ভব হবে। এই হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে এবার ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
০৯ অক্টোবর ২০২৫
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেমো. ইকবাল হোসেন

ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
মানুষের শরীরের গঠন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণীর চেয়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। যেমন চোখের যত্নে ভিটামিন এ, ত্বকের যত্নে ভিটামিন বি, হাড়ের যত্নে ভিটামিন ডি ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণ করে খাবার খেলে শরীরে সুখের হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং আমাদের সুখানুভূতি হয়, মন শান্ত থাকে।
মন ভালো রাখার অন্যতম হরমোন ডোপামিন। এটি নিঃসরণে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়বে, ডোপামিনের নিঃসরণও তত বাড়বে। তাই অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে গুড ফ্যাট বা ভালো চর্বিসমৃদ্ধ, গাঁজানো এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চমৎকার খাবার হতে পারে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটিসহ অন্যান্য শাকসবজি ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে চমৎকার কাজ করে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল, অলিভ অয়েল, টক দই ইত্যাদি খাবারও পর্যাপ্ত খেতে হবে। আঁশের উৎস হিসেবে লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক খেতে হবে। ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবোতেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
আমাদের মন ভালো রাখার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে সেরোটোনিন। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় অন্ত্রের এন্টেরোক্রমাফিন কোষের এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম থেকে। এ জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। অন্ত্রের পেশি নড়াচড়ায় সেরোটোনিন সাহায্য করে। মাত্র ১ শতাংশ সেরোটোনিন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এই ১ শতাংশ সেরোটোনিন মুড, ঘুম, স্মৃতি, ক্ষুধা, মন ভালো থাকা ইত্যাদির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। খাবারের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পরিমিত রেডমিট, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শিম, গাজরসহ সব ধরনের শীতকালীন সবজি এবং শীতের মিষ্টি রোদ দারুণ কাজ করে।
এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ খাবার, যেমন দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।
শীতে শরীরে ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এন্ডোরফিন নামক হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে। শারীরিক বা মানসিকভাবে আহত হলে এন্ডোরফিন সক্রিয় হয়ে আমাদের ব্যথা নিরাময় করে। অতিরিক্ত ওজন, বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ এন্ডোরফিনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তবে কিছু খাবার আছে; যেগুলো খেলে এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এন্ডোরফিন নিঃসরণে সহযোগিতা করে। তাই শীতে মন ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পাতিলেবু, মোসাম্বি, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা ও কমলা খেতে হবে।
এর পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম ও পালংশাক শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান দিতে পারে; সঙ্গে মেটায় আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিও।
এ ছাড়া শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং ক্যানসার প্রতিরোধী গুণসমৃদ্ধ। এগুলো যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শীতকালীন পালংশাক, গাজর, টমেটো, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি হয়ে উঠতে পারে সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। শীতকালীন সবজি ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত উপযোগী। তাই শীতকালে সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে এসব সবজি।
আমাদের শরীরের অবহেলিত অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। আমরা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সেসবের প্রভাব পড়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের ওপর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।
ফলে গ্যাসের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আবার বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কমে যায় এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা। তাই সুস্থ থাকতে এবং মন ভালো রাখতে শীতকাল হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সময়।
খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে—
পুষ্টিবিদ ও জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
মানুষের শরীরের গঠন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণীর চেয়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। যেমন চোখের যত্নে ভিটামিন এ, ত্বকের যত্নে ভিটামিন বি, হাড়ের যত্নে ভিটামিন ডি ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণ করে খাবার খেলে শরীরে সুখের হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং আমাদের সুখানুভূতি হয়, মন শান্ত থাকে।
মন ভালো রাখার অন্যতম হরমোন ডোপামিন। এটি নিঃসরণে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়বে, ডোপামিনের নিঃসরণও তত বাড়বে। তাই অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে গুড ফ্যাট বা ভালো চর্বিসমৃদ্ধ, গাঁজানো এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চমৎকার খাবার হতে পারে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটিসহ অন্যান্য শাকসবজি ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে চমৎকার কাজ করে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল, অলিভ অয়েল, টক দই ইত্যাদি খাবারও পর্যাপ্ত খেতে হবে। আঁশের উৎস হিসেবে লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক খেতে হবে। ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবোতেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
আমাদের মন ভালো রাখার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে সেরোটোনিন। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় অন্ত্রের এন্টেরোক্রমাফিন কোষের এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম থেকে। এ জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। অন্ত্রের পেশি নড়াচড়ায় সেরোটোনিন সাহায্য করে। মাত্র ১ শতাংশ সেরোটোনিন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এই ১ শতাংশ সেরোটোনিন মুড, ঘুম, স্মৃতি, ক্ষুধা, মন ভালো থাকা ইত্যাদির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। খাবারের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পরিমিত রেডমিট, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শিম, গাজরসহ সব ধরনের শীতকালীন সবজি এবং শীতের মিষ্টি রোদ দারুণ কাজ করে।
এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ খাবার, যেমন দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।
শীতে শরীরে ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এন্ডোরফিন নামক হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে। শারীরিক বা মানসিকভাবে আহত হলে এন্ডোরফিন সক্রিয় হয়ে আমাদের ব্যথা নিরাময় করে। অতিরিক্ত ওজন, বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ এন্ডোরফিনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তবে কিছু খাবার আছে; যেগুলো খেলে এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এন্ডোরফিন নিঃসরণে সহযোগিতা করে। তাই শীতে মন ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পাতিলেবু, মোসাম্বি, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা ও কমলা খেতে হবে।
এর পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম ও পালংশাক শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান দিতে পারে; সঙ্গে মেটায় আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিও।
এ ছাড়া শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং ক্যানসার প্রতিরোধী গুণসমৃদ্ধ। এগুলো যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শীতকালীন পালংশাক, গাজর, টমেটো, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি হয়ে উঠতে পারে সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। শীতকালীন সবজি ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত উপযোগী। তাই শীতকালে সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে এসব সবজি।
আমাদের শরীরের অবহেলিত অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। আমরা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সেসবের প্রভাব পড়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের ওপর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।
ফলে গ্যাসের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আবার বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কমে যায় এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা। তাই সুস্থ থাকতে এবং মন ভালো রাখতে শীতকাল হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সময়।
খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে—
পুষ্টিবিদ ও জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

শরীরের ভেতরের অংশ পরীক্ষা করতে দীর্ঘদিন ধরে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে আসছেন চিকিৎসকেরা। এখন এই আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে ক্যানসারের চিকিৎসাও সম্ভব হবে। এই হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে এবার ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
০৯ অক্টোবর ২০২৫
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৬ ঘণ্টা আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেডা. অবন্তি ঘোষ

চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
বীর্য পরীক্ষার পর শুক্রাণুর সংখ্যা, গতি, আকৃতি, পরিমাণ ইত্যাদি
দেখা হয়।
চিকিৎসা নির্ভর করে সমস্যা কেমন এবং কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর। সাধারণভাবে চিকিৎসা কয়েকটি ধাপে করা হয়।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি উন্নত করতে কিছু পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন দেওয়া হয়, যেমন:
ওষুধ শুরুর পর রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারণ, নতুন শুক্রাণু তৈরিতে প্রায় ৭৫ দিন লাগে।
ওষুধে উন্নতি হলে স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডিম্বাণু উৎপাদন বাড়ানোর ওষুধ দেওয়া হয়।
ভেরিকোসিল কিংবা শুক্রনালির ব্লকেজ থাকলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
যাঁদের বীর্যে একেবারেই শুক্রাণু পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পার্মিয়া বলা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে সরাসরি শুক্রাণু সংগ্রহ করে আইসিএসআই করাই সবচেয়ে কার্যকর।
গাইনি, প্রসূতি ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
বীর্য পরীক্ষার পর শুক্রাণুর সংখ্যা, গতি, আকৃতি, পরিমাণ ইত্যাদি
দেখা হয়।
চিকিৎসা নির্ভর করে সমস্যা কেমন এবং কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর। সাধারণভাবে চিকিৎসা কয়েকটি ধাপে করা হয়।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি উন্নত করতে কিছু পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন দেওয়া হয়, যেমন:
ওষুধ শুরুর পর রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারণ, নতুন শুক্রাণু তৈরিতে প্রায় ৭৫ দিন লাগে।
ওষুধে উন্নতি হলে স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডিম্বাণু উৎপাদন বাড়ানোর ওষুধ দেওয়া হয়।
ভেরিকোসিল কিংবা শুক্রনালির ব্লকেজ থাকলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
যাঁদের বীর্যে একেবারেই শুক্রাণু পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পার্মিয়া বলা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে সরাসরি শুক্রাণু সংগ্রহ করে আইসিএসআই করাই সবচেয়ে কার্যকর।
গাইনি, প্রসূতি ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

শরীরের ভেতরের অংশ পরীক্ষা করতে দীর্ঘদিন ধরে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে আসছেন চিকিৎসকেরা। এখন এই আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে ক্যানসারের চিকিৎসাও সম্ভব হবে। এই হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে এবার ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
০৯ অক্টোবর ২০২৫
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৬ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেডা. কাকলী হালদার

শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
সাধারণ সর্দি-কাশি: রাইনোভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হালকা গলাব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দির চেয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, শরীর ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি এবং গাঢ় কাশি।
রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি: এটি শিশুদের মধ্যে ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।
এ ধরনের রোগ নিউমোনিয়া অথবা স্ট্রেপটোকক্কাসজনিত গলাব্যথার মতো কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকে মোড় নিতে পারে, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে, অপরিচ্ছন্ন কিছু স্পর্শ করার পর হাত ধোয়া জরুরি। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল; যেমন লেবু, কমলা, আমলকী ইত্যাদি এবং শাকসবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। পানিশূন্যতা এড়াতে হালকা গরম পানি পান করুন।
উষ্ণতা বজায় রাখা: কান, মাথা ও গলা ঢেকে গরম জামাকাপড় পরুন। ঘর উষ্ণ রাখুন এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন।
ভিড় এড়িয়ে চলা: অসুস্থতা চলাকালে যেকোনো ভিড় অথবা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
টিকা নেওয়া: শিশু, বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।
সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
সাধারণ সর্দি-কাশি: রাইনোভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হালকা গলাব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দির চেয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, শরীর ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি এবং গাঢ় কাশি।
রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি: এটি শিশুদের মধ্যে ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।
এ ধরনের রোগ নিউমোনিয়া অথবা স্ট্রেপটোকক্কাসজনিত গলাব্যথার মতো কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকে মোড় নিতে পারে, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে, অপরিচ্ছন্ন কিছু স্পর্শ করার পর হাত ধোয়া জরুরি। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল; যেমন লেবু, কমলা, আমলকী ইত্যাদি এবং শাকসবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। পানিশূন্যতা এড়াতে হালকা গরম পানি পান করুন।
উষ্ণতা বজায় রাখা: কান, মাথা ও গলা ঢেকে গরম জামাকাপড় পরুন। ঘর উষ্ণ রাখুন এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন।
ভিড় এড়িয়ে চলা: অসুস্থতা চলাকালে যেকোনো ভিড় অথবা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
টিকা নেওয়া: শিশু, বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।
সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

শরীরের ভেতরের অংশ পরীক্ষা করতে দীর্ঘদিন ধরে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে আসছেন চিকিৎসকেরা। এখন এই আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে ক্যানসারের চিকিৎসাও সম্ভব হবে। এই হাই ফ্রিকোয়েন্সি শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে এবার ক্যানসার চিকিৎসার নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
০৯ অক্টোবর ২০২৫
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৬ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে