
অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার বেশি। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ক্যানসার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা আইএআরসি–এর নতুন গবেষণায় এমন উদ্বেগজনক ফলাফল পাওয়া গেছে।
দ্য ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, যে ধরনের ফুসফুসের ক্যানসার সাধারণত অধূমপায়ীদের মধ্যে হয়, সেটি হলো—লাং অ্যাডিনোক্যানসার। অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুসের ক্যানসারের প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই ধরনের ক্যানসার দেখা যাচ্ছে। এটি পুরুষদের মধ্যে দেখা যায় ৪৫ শতাংশ ক্ষেত্রে।
২০২২ সালে সারা বিশ্বে ফুসফুস ক্যানসারের রোগী ছিলেন প্রায় ২৫ লাখ, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৩ লাখ বেশি। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবেশগত উপাদান, বিশেষত বায়ু দূষণের পাশাপাশি জিনগত পরিবর্তন এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া এই প্রবণতা বাড়াতে সাহায্য করেছে।
এই গবেষণায় অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাব্য কারণও তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো—
জেনেটিক মিউটেশন
অধূমপায়ী নারীদের ক্যানসার সৃষ্টির সবচেয়ে বড় কারণ হলো ইজিএফআর জিনের মিউটেশন বা পরিব্যক্তি। এই জিন কোষের বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন তৈরি করে। যখন এই প্রোটিনের কোডে মিউটেশন ঘটে, তখন অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন শুরু হয়, যা ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষত এশিয়ার নারীদের ফুসফুস ক্যানসারের প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে ইজিএফআর জিনের মিউটেশন দেখা যাচ্ছে। তবে, পশ্চিমা নারীদের মধ্যে এই হার ১৯ শতাংশ। আর অধূমপায়ী পুরুষদের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ২০ শতাংশ।
উল্লেখ্য, কোনো জীবের জিনোম তথা জেনেটিক বস্তুর গুণগত ও পরিমাণগত যেকোনো ধরনের আকস্মিক পরিবর্তনকে মিউটেশন বা পরিব্যক্তি বলে।
জেনেটিক পরীক্ষা–নিরীক্ষার উন্নতির ফলে এখন বিভিন্ন মিউটেশন শনাক্ত করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। বায়ুদূষণ ইজিএফআর মিউটেশন ঘটাতে সাহায্য করে। সম্ভবত এ কারণে মানুষের জিনে মিউটেশন বেড়ে গেছে।
আরেকটি জেনেটিক পরিবর্তন যা ক্যানসার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, তা হলো ‘এএলকে’ এবং ‘আরওএস১’ জিনের মিউটেশন। এই মিউটেশনগুলো ক্যানসার আক্রান্ত অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ৫ শতাংশের মধ্যে দেখা যায় এবং এটি বিশেষভাবে এশিয়ার কমবয়সী নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তবে এশিয়ার দেশগুলোতে উন্নত স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে এখন মিউটেশনগুলো বেশি শনাক্ত করা যাচ্ছে।
এ ছাড়া, টিপি ৫৩ নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ টিউমার–প্রতিরোধক জিনের মিউটেশনও অধূমপায়ীদের মধ্যে নারীদের তুলনায় বেশি দেখা যাচ্ছে। এই জিন কোষগুলোকে ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। তবে মিউটেশন ঘটলে কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায়। ইস্ট্রোজেন হরমোন টিপি ৫৩ মিউটেশনের সঙ্গে মিলিত হয়ে নারীদের মধ্যে সময়ের সঙ্গে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিন হলো—কেআরএএস। সাধারণত এই জিনের মিউটেশন ধূমপানের কারণে হওয়া ফুসফুসের ক্যানসারের সঙ্গে যুক্ত, তবে এখন এটি অধূমপায়ী নারীদের মধ্যেও পাওয়া যাচ্ছে এবং এই প্রবণতা বাড়ছে।
বায়ুদূষণ
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বলছে, বায়ুর মধ্যে থাকা সূক্ষ্ম কণা পিএম ২.৫ (এটি এমন সূক্ষ্ম কণা যা ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার বা তার চেয়ে ছোট) কেআরএএস মিউটেশন ঘটাতে পারে।
এ ছাড়া, অনেক শহরে পিএম ২.৫ কণার পরিমাণ বাড়ছে, যা শুধু ফুসফুস ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং নারীদের অন্যান্য ধরনের ক্যানসারের জন্যও দায়ী।
বায়ুদূষণ দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকির একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, বিশেষভাবে নারীরা এটির প্রতি বেশি সংবেদনশীল। নারীদের ফুসফুসের গঠন ও কার্যক্ষমতা তাদের দূষিত উপাদানের ক্ষতিকর প্রভাবের প্রতি বেশি সংবেদনশীল করে তোলে। নারীদের ফুসফুস পুরুষদের তুলনায় ছোট এবং তাদের শ্বাসনালি (এয়ারওয়ে) সংকীর্ণ, যার ফলে পিএম ২.৫ –এর মতো সূক্ষ্ম কণাগুলো তাদের ফুসফুসে আটকে যেতে পারে।
নারীরা সাধারণত ঘরের ভেতরে বেশি সময় কাটান, যেখানে রান্নার ধোঁয়া এবং তাপের কারণে ক্ষতিকর গ্যাসের উপস্থিতি বেশি। ঘরের বায়ুদূষণ, বিশেষত কাঠ, কয়লা, এবং কেরোসিন জ্বালানির কারণে, ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যেসব নারী কাপড়ের কারখানা, বিউটি সেলুন বা হাসপাতালে কাজ করেন, তাঁরা আরও বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসেন। এসব পদার্থ তাঁদের ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে। দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোতে নারীরা সাধারণত উচ্চ ট্রাফিক এবং কারখানার দূষণের মধ্যে বসবাস করেন।
হরমোনের পরিবর্তন
জেনেটিক প্রবণতার পাশাপাশি নারীদের মধ্যে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে হরমোনের পরিবর্তন। ইস্ট্রোজেন হরমোনের রিসেপ্টর ফুসফুসের কোষে থাকে এবং কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, ইস্ট্রোজেন টিউমারের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে। তবে, যারা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (এইচআরটি) নেন, তাঁদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি কম থাকে। অর্থাৎ স্বাভাবিক ইস্ট্রোজেন চক্র হয়তো কিছু পরিমাণে সুরক্ষা দিতে পারে।
এ ছাড়া, ইস্ট্রোজেন হরমোন দূষিত উপাদানগুলোর সংস্পর্শে এলে প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়ার তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়, যা ফুসফুসের টিস্যুকে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ
জীনগত এবং হরমোনের কারণে ছাড়াও অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ।
নারীদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় অটোইমিউন রোগ (যেমন: রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস, লুপাস ইত্যাদি) হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এই ধরনের রোগগুলো শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিকল করে দেয়, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যখন শরীরে দীর্ঘদিন ধরে প্রদাহ চলে, তখন তা কোষের ক্ষতি করতে পারে। ডিএনএ–তে পরিবর্তন ঘটিয়ে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের মাধ্যমে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশেষত, যেসব নারীর অটোইমিউন রোগ রয়েছে, তাদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি। কারণ ফুসফুসে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। ইনফ্ল্যামেটরি (প্রদাহজনিত) অণু যেমন, ইন্টারলিউকিন-৬ এবং টিউমার ‘নেক্রোসিস ফ্যাক্টর-আলফা’ ক্যানসারের কোষগুলোকে টিকে থাকতে এবং ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে।
বিশ্বব্যাপী অটোইমিউন রোগ ক্রমেই বাড়ছে। সম্ভবত পরিবেশগত পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এবং গাট মাইক্রোবায়োমে (অন্ত্রের উপকারী অণুজীব) পরিবর্তনের জন্য এটি হচ্ছে। নারীদের মধ্যে অটোইমিউন রোগ বেশি হওয়ার কারণে তারা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ থেকে সৃষ্ট ক্যানসারের জন্য আরও বেশি ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
এ ছাড়া, গড় আয়ু বাড়ার কারণে নারীদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও দীর্ঘসময় সক্রিয় থাকে, যা তাদের মধ্যে প্রদাহ-সংশ্লিষ্ট ক্যানসারে আক্রান্ত ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া, পরিবেশের দূষণ, গৃহস্থালির রাসায়নিক পদার্থ এবং কর্মস্থলে ক্ষতিকর উপাদানের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সংস্পর্শ ক্যানসারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
জেনেটিক মিউটেশনের কারণে নারীরা প্রাকৃতিকভাবেই পুরুষদের তুলনায় বেশি ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। তবে, বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়া, হরমোন ক্ষরণ চক্রের পরিবর্তন, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ত্রুটি এবং আয়ু বৃদ্ধি এই ঝুঁকিগুলো আরও বাড়িয়ে তুলছে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, হিউম্যান প্যাপিলোমা (এইচপিভি) নামক একটি ভাইরাসও নারীদের ফুসফুসের ক্যানসারে ভূমিকা রাখতে পারে।

অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার বেশি। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ক্যানসার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা আইএআরসি–এর নতুন গবেষণায় এমন উদ্বেগজনক ফলাফল পাওয়া গেছে।
দ্য ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, যে ধরনের ফুসফুসের ক্যানসার সাধারণত অধূমপায়ীদের মধ্যে হয়, সেটি হলো—লাং অ্যাডিনোক্যানসার। অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুসের ক্যানসারের প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই ধরনের ক্যানসার দেখা যাচ্ছে। এটি পুরুষদের মধ্যে দেখা যায় ৪৫ শতাংশ ক্ষেত্রে।
২০২২ সালে সারা বিশ্বে ফুসফুস ক্যানসারের রোগী ছিলেন প্রায় ২৫ লাখ, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৩ লাখ বেশি। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবেশগত উপাদান, বিশেষত বায়ু দূষণের পাশাপাশি জিনগত পরিবর্তন এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া এই প্রবণতা বাড়াতে সাহায্য করেছে।
এই গবেষণায় অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাব্য কারণও তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো—
জেনেটিক মিউটেশন
অধূমপায়ী নারীদের ক্যানসার সৃষ্টির সবচেয়ে বড় কারণ হলো ইজিএফআর জিনের মিউটেশন বা পরিব্যক্তি। এই জিন কোষের বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন তৈরি করে। যখন এই প্রোটিনের কোডে মিউটেশন ঘটে, তখন অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন শুরু হয়, যা ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষত এশিয়ার নারীদের ফুসফুস ক্যানসারের প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে ইজিএফআর জিনের মিউটেশন দেখা যাচ্ছে। তবে, পশ্চিমা নারীদের মধ্যে এই হার ১৯ শতাংশ। আর অধূমপায়ী পুরুষদের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ২০ শতাংশ।
উল্লেখ্য, কোনো জীবের জিনোম তথা জেনেটিক বস্তুর গুণগত ও পরিমাণগত যেকোনো ধরনের আকস্মিক পরিবর্তনকে মিউটেশন বা পরিব্যক্তি বলে।
জেনেটিক পরীক্ষা–নিরীক্ষার উন্নতির ফলে এখন বিভিন্ন মিউটেশন শনাক্ত করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। বায়ুদূষণ ইজিএফআর মিউটেশন ঘটাতে সাহায্য করে। সম্ভবত এ কারণে মানুষের জিনে মিউটেশন বেড়ে গেছে।
আরেকটি জেনেটিক পরিবর্তন যা ক্যানসার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, তা হলো ‘এএলকে’ এবং ‘আরওএস১’ জিনের মিউটেশন। এই মিউটেশনগুলো ক্যানসার আক্রান্ত অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ৫ শতাংশের মধ্যে দেখা যায় এবং এটি বিশেষভাবে এশিয়ার কমবয়সী নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তবে এশিয়ার দেশগুলোতে উন্নত স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে এখন মিউটেশনগুলো বেশি শনাক্ত করা যাচ্ছে।
এ ছাড়া, টিপি ৫৩ নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ টিউমার–প্রতিরোধক জিনের মিউটেশনও অধূমপায়ীদের মধ্যে নারীদের তুলনায় বেশি দেখা যাচ্ছে। এই জিন কোষগুলোকে ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। তবে মিউটেশন ঘটলে কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায়। ইস্ট্রোজেন হরমোন টিপি ৫৩ মিউটেশনের সঙ্গে মিলিত হয়ে নারীদের মধ্যে সময়ের সঙ্গে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিন হলো—কেআরএএস। সাধারণত এই জিনের মিউটেশন ধূমপানের কারণে হওয়া ফুসফুসের ক্যানসারের সঙ্গে যুক্ত, তবে এখন এটি অধূমপায়ী নারীদের মধ্যেও পাওয়া যাচ্ছে এবং এই প্রবণতা বাড়ছে।
বায়ুদূষণ
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বলছে, বায়ুর মধ্যে থাকা সূক্ষ্ম কণা পিএম ২.৫ (এটি এমন সূক্ষ্ম কণা যা ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার বা তার চেয়ে ছোট) কেআরএএস মিউটেশন ঘটাতে পারে।
এ ছাড়া, অনেক শহরে পিএম ২.৫ কণার পরিমাণ বাড়ছে, যা শুধু ফুসফুস ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং নারীদের অন্যান্য ধরনের ক্যানসারের জন্যও দায়ী।
বায়ুদূষণ দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকির একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, বিশেষভাবে নারীরা এটির প্রতি বেশি সংবেদনশীল। নারীদের ফুসফুসের গঠন ও কার্যক্ষমতা তাদের দূষিত উপাদানের ক্ষতিকর প্রভাবের প্রতি বেশি সংবেদনশীল করে তোলে। নারীদের ফুসফুস পুরুষদের তুলনায় ছোট এবং তাদের শ্বাসনালি (এয়ারওয়ে) সংকীর্ণ, যার ফলে পিএম ২.৫ –এর মতো সূক্ষ্ম কণাগুলো তাদের ফুসফুসে আটকে যেতে পারে।
নারীরা সাধারণত ঘরের ভেতরে বেশি সময় কাটান, যেখানে রান্নার ধোঁয়া এবং তাপের কারণে ক্ষতিকর গ্যাসের উপস্থিতি বেশি। ঘরের বায়ুদূষণ, বিশেষত কাঠ, কয়লা, এবং কেরোসিন জ্বালানির কারণে, ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যেসব নারী কাপড়ের কারখানা, বিউটি সেলুন বা হাসপাতালে কাজ করেন, তাঁরা আরও বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসেন। এসব পদার্থ তাঁদের ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে। দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোতে নারীরা সাধারণত উচ্চ ট্রাফিক এবং কারখানার দূষণের মধ্যে বসবাস করেন।
হরমোনের পরিবর্তন
জেনেটিক প্রবণতার পাশাপাশি নারীদের মধ্যে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে হরমোনের পরিবর্তন। ইস্ট্রোজেন হরমোনের রিসেপ্টর ফুসফুসের কোষে থাকে এবং কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, ইস্ট্রোজেন টিউমারের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে। তবে, যারা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (এইচআরটি) নেন, তাঁদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি কম থাকে। অর্থাৎ স্বাভাবিক ইস্ট্রোজেন চক্র হয়তো কিছু পরিমাণে সুরক্ষা দিতে পারে।
এ ছাড়া, ইস্ট্রোজেন হরমোন দূষিত উপাদানগুলোর সংস্পর্শে এলে প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়ার তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়, যা ফুসফুসের টিস্যুকে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ
জীনগত এবং হরমোনের কারণে ছাড়াও অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ।
নারীদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় অটোইমিউন রোগ (যেমন: রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস, লুপাস ইত্যাদি) হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এই ধরনের রোগগুলো শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিকল করে দেয়, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যখন শরীরে দীর্ঘদিন ধরে প্রদাহ চলে, তখন তা কোষের ক্ষতি করতে পারে। ডিএনএ–তে পরিবর্তন ঘটিয়ে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের মাধ্যমে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশেষত, যেসব নারীর অটোইমিউন রোগ রয়েছে, তাদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি। কারণ ফুসফুসে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। ইনফ্ল্যামেটরি (প্রদাহজনিত) অণু যেমন, ইন্টারলিউকিন-৬ এবং টিউমার ‘নেক্রোসিস ফ্যাক্টর-আলফা’ ক্যানসারের কোষগুলোকে টিকে থাকতে এবং ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে।
বিশ্বব্যাপী অটোইমিউন রোগ ক্রমেই বাড়ছে। সম্ভবত পরিবেশগত পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এবং গাট মাইক্রোবায়োমে (অন্ত্রের উপকারী অণুজীব) পরিবর্তনের জন্য এটি হচ্ছে। নারীদের মধ্যে অটোইমিউন রোগ বেশি হওয়ার কারণে তারা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ থেকে সৃষ্ট ক্যানসারের জন্য আরও বেশি ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
এ ছাড়া, গড় আয়ু বাড়ার কারণে নারীদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও দীর্ঘসময় সক্রিয় থাকে, যা তাদের মধ্যে প্রদাহ-সংশ্লিষ্ট ক্যানসারে আক্রান্ত ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া, পরিবেশের দূষণ, গৃহস্থালির রাসায়নিক পদার্থ এবং কর্মস্থলে ক্ষতিকর উপাদানের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সংস্পর্শ ক্যানসারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
জেনেটিক মিউটেশনের কারণে নারীরা প্রাকৃতিকভাবেই পুরুষদের তুলনায় বেশি ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। তবে, বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়া, হরমোন ক্ষরণ চক্রের পরিবর্তন, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ত্রুটি এবং আয়ু বৃদ্ধি এই ঝুঁকিগুলো আরও বাড়িয়ে তুলছে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, হিউম্যান প্যাপিলোমা (এইচপিভি) নামক একটি ভাইরাসও নারীদের ফুসফুসের ক্যানসারে ভূমিকা রাখতে পারে।

অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার বেশি। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ক্যানসার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা আইএআরসি–এর নতুন গবেষণায় এমন উদ্বেগজনক ফলাফল পাওয়া গেছে।
দ্য ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, যে ধরনের ফুসফুসের ক্যানসার সাধারণত অধূমপায়ীদের মধ্যে হয়, সেটি হলো—লাং অ্যাডিনোক্যানসার। অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুসের ক্যানসারের প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই ধরনের ক্যানসার দেখা যাচ্ছে। এটি পুরুষদের মধ্যে দেখা যায় ৪৫ শতাংশ ক্ষেত্রে।
২০২২ সালে সারা বিশ্বে ফুসফুস ক্যানসারের রোগী ছিলেন প্রায় ২৫ লাখ, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৩ লাখ বেশি। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবেশগত উপাদান, বিশেষত বায়ু দূষণের পাশাপাশি জিনগত পরিবর্তন এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া এই প্রবণতা বাড়াতে সাহায্য করেছে।
এই গবেষণায় অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাব্য কারণও তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো—
জেনেটিক মিউটেশন
অধূমপায়ী নারীদের ক্যানসার সৃষ্টির সবচেয়ে বড় কারণ হলো ইজিএফআর জিনের মিউটেশন বা পরিব্যক্তি। এই জিন কোষের বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন তৈরি করে। যখন এই প্রোটিনের কোডে মিউটেশন ঘটে, তখন অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন শুরু হয়, যা ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষত এশিয়ার নারীদের ফুসফুস ক্যানসারের প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে ইজিএফআর জিনের মিউটেশন দেখা যাচ্ছে। তবে, পশ্চিমা নারীদের মধ্যে এই হার ১৯ শতাংশ। আর অধূমপায়ী পুরুষদের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ২০ শতাংশ।
উল্লেখ্য, কোনো জীবের জিনোম তথা জেনেটিক বস্তুর গুণগত ও পরিমাণগত যেকোনো ধরনের আকস্মিক পরিবর্তনকে মিউটেশন বা পরিব্যক্তি বলে।
জেনেটিক পরীক্ষা–নিরীক্ষার উন্নতির ফলে এখন বিভিন্ন মিউটেশন শনাক্ত করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। বায়ুদূষণ ইজিএফআর মিউটেশন ঘটাতে সাহায্য করে। সম্ভবত এ কারণে মানুষের জিনে মিউটেশন বেড়ে গেছে।
আরেকটি জেনেটিক পরিবর্তন যা ক্যানসার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, তা হলো ‘এএলকে’ এবং ‘আরওএস১’ জিনের মিউটেশন। এই মিউটেশনগুলো ক্যানসার আক্রান্ত অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ৫ শতাংশের মধ্যে দেখা যায় এবং এটি বিশেষভাবে এশিয়ার কমবয়সী নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তবে এশিয়ার দেশগুলোতে উন্নত স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে এখন মিউটেশনগুলো বেশি শনাক্ত করা যাচ্ছে।
এ ছাড়া, টিপি ৫৩ নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ টিউমার–প্রতিরোধক জিনের মিউটেশনও অধূমপায়ীদের মধ্যে নারীদের তুলনায় বেশি দেখা যাচ্ছে। এই জিন কোষগুলোকে ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। তবে মিউটেশন ঘটলে কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায়। ইস্ট্রোজেন হরমোন টিপি ৫৩ মিউটেশনের সঙ্গে মিলিত হয়ে নারীদের মধ্যে সময়ের সঙ্গে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিন হলো—কেআরএএস। সাধারণত এই জিনের মিউটেশন ধূমপানের কারণে হওয়া ফুসফুসের ক্যানসারের সঙ্গে যুক্ত, তবে এখন এটি অধূমপায়ী নারীদের মধ্যেও পাওয়া যাচ্ছে এবং এই প্রবণতা বাড়ছে।
বায়ুদূষণ
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বলছে, বায়ুর মধ্যে থাকা সূক্ষ্ম কণা পিএম ২.৫ (এটি এমন সূক্ষ্ম কণা যা ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার বা তার চেয়ে ছোট) কেআরএএস মিউটেশন ঘটাতে পারে।
এ ছাড়া, অনেক শহরে পিএম ২.৫ কণার পরিমাণ বাড়ছে, যা শুধু ফুসফুস ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং নারীদের অন্যান্য ধরনের ক্যানসারের জন্যও দায়ী।
বায়ুদূষণ দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকির একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, বিশেষভাবে নারীরা এটির প্রতি বেশি সংবেদনশীল। নারীদের ফুসফুসের গঠন ও কার্যক্ষমতা তাদের দূষিত উপাদানের ক্ষতিকর প্রভাবের প্রতি বেশি সংবেদনশীল করে তোলে। নারীদের ফুসফুস পুরুষদের তুলনায় ছোট এবং তাদের শ্বাসনালি (এয়ারওয়ে) সংকীর্ণ, যার ফলে পিএম ২.৫ –এর মতো সূক্ষ্ম কণাগুলো তাদের ফুসফুসে আটকে যেতে পারে।
নারীরা সাধারণত ঘরের ভেতরে বেশি সময় কাটান, যেখানে রান্নার ধোঁয়া এবং তাপের কারণে ক্ষতিকর গ্যাসের উপস্থিতি বেশি। ঘরের বায়ুদূষণ, বিশেষত কাঠ, কয়লা, এবং কেরোসিন জ্বালানির কারণে, ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যেসব নারী কাপড়ের কারখানা, বিউটি সেলুন বা হাসপাতালে কাজ করেন, তাঁরা আরও বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসেন। এসব পদার্থ তাঁদের ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে। দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোতে নারীরা সাধারণত উচ্চ ট্রাফিক এবং কারখানার দূষণের মধ্যে বসবাস করেন।
হরমোনের পরিবর্তন
জেনেটিক প্রবণতার পাশাপাশি নারীদের মধ্যে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে হরমোনের পরিবর্তন। ইস্ট্রোজেন হরমোনের রিসেপ্টর ফুসফুসের কোষে থাকে এবং কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, ইস্ট্রোজেন টিউমারের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে। তবে, যারা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (এইচআরটি) নেন, তাঁদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি কম থাকে। অর্থাৎ স্বাভাবিক ইস্ট্রোজেন চক্র হয়তো কিছু পরিমাণে সুরক্ষা দিতে পারে।
এ ছাড়া, ইস্ট্রোজেন হরমোন দূষিত উপাদানগুলোর সংস্পর্শে এলে প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়ার তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়, যা ফুসফুসের টিস্যুকে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ
জীনগত এবং হরমোনের কারণে ছাড়াও অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ।
নারীদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় অটোইমিউন রোগ (যেমন: রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস, লুপাস ইত্যাদি) হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এই ধরনের রোগগুলো শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিকল করে দেয়, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যখন শরীরে দীর্ঘদিন ধরে প্রদাহ চলে, তখন তা কোষের ক্ষতি করতে পারে। ডিএনএ–তে পরিবর্তন ঘটিয়ে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের মাধ্যমে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশেষত, যেসব নারীর অটোইমিউন রোগ রয়েছে, তাদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি। কারণ ফুসফুসে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। ইনফ্ল্যামেটরি (প্রদাহজনিত) অণু যেমন, ইন্টারলিউকিন-৬ এবং টিউমার ‘নেক্রোসিস ফ্যাক্টর-আলফা’ ক্যানসারের কোষগুলোকে টিকে থাকতে এবং ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে।
বিশ্বব্যাপী অটোইমিউন রোগ ক্রমেই বাড়ছে। সম্ভবত পরিবেশগত পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এবং গাট মাইক্রোবায়োমে (অন্ত্রের উপকারী অণুজীব) পরিবর্তনের জন্য এটি হচ্ছে। নারীদের মধ্যে অটোইমিউন রোগ বেশি হওয়ার কারণে তারা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ থেকে সৃষ্ট ক্যানসারের জন্য আরও বেশি ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
এ ছাড়া, গড় আয়ু বাড়ার কারণে নারীদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও দীর্ঘসময় সক্রিয় থাকে, যা তাদের মধ্যে প্রদাহ-সংশ্লিষ্ট ক্যানসারে আক্রান্ত ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া, পরিবেশের দূষণ, গৃহস্থালির রাসায়নিক পদার্থ এবং কর্মস্থলে ক্ষতিকর উপাদানের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সংস্পর্শ ক্যানসারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
জেনেটিক মিউটেশনের কারণে নারীরা প্রাকৃতিকভাবেই পুরুষদের তুলনায় বেশি ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। তবে, বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়া, হরমোন ক্ষরণ চক্রের পরিবর্তন, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ত্রুটি এবং আয়ু বৃদ্ধি এই ঝুঁকিগুলো আরও বাড়িয়ে তুলছে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, হিউম্যান প্যাপিলোমা (এইচপিভি) নামক একটি ভাইরাসও নারীদের ফুসফুসের ক্যানসারে ভূমিকা রাখতে পারে।

অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার বেশি। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ক্যানসার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা আইএআরসি–এর নতুন গবেষণায় এমন উদ্বেগজনক ফলাফল পাওয়া গেছে।
দ্য ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিন সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, যে ধরনের ফুসফুসের ক্যানসার সাধারণত অধূমপায়ীদের মধ্যে হয়, সেটি হলো—লাং অ্যাডিনোক্যানসার। অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুসের ক্যানসারের প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই ধরনের ক্যানসার দেখা যাচ্ছে। এটি পুরুষদের মধ্যে দেখা যায় ৪৫ শতাংশ ক্ষেত্রে।
২০২২ সালে সারা বিশ্বে ফুসফুস ক্যানসারের রোগী ছিলেন প্রায় ২৫ লাখ, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৩ লাখ বেশি। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবেশগত উপাদান, বিশেষত বায়ু দূষণের পাশাপাশি জিনগত পরিবর্তন এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া এই প্রবণতা বাড়াতে সাহায্য করেছে।
এই গবেষণায় অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাব্য কারণও তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো—
জেনেটিক মিউটেশন
অধূমপায়ী নারীদের ক্যানসার সৃষ্টির সবচেয়ে বড় কারণ হলো ইজিএফআর জিনের মিউটেশন বা পরিব্যক্তি। এই জিন কোষের বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন তৈরি করে। যখন এই প্রোটিনের কোডে মিউটেশন ঘটে, তখন অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন শুরু হয়, যা ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষত এশিয়ার নারীদের ফুসফুস ক্যানসারের প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে ইজিএফআর জিনের মিউটেশন দেখা যাচ্ছে। তবে, পশ্চিমা নারীদের মধ্যে এই হার ১৯ শতাংশ। আর অধূমপায়ী পুরুষদের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ২০ শতাংশ।
উল্লেখ্য, কোনো জীবের জিনোম তথা জেনেটিক বস্তুর গুণগত ও পরিমাণগত যেকোনো ধরনের আকস্মিক পরিবর্তনকে মিউটেশন বা পরিব্যক্তি বলে।
জেনেটিক পরীক্ষা–নিরীক্ষার উন্নতির ফলে এখন বিভিন্ন মিউটেশন শনাক্ত করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। বায়ুদূষণ ইজিএফআর মিউটেশন ঘটাতে সাহায্য করে। সম্ভবত এ কারণে মানুষের জিনে মিউটেশন বেড়ে গেছে।
আরেকটি জেনেটিক পরিবর্তন যা ক্যানসার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, তা হলো ‘এএলকে’ এবং ‘আরওএস১’ জিনের মিউটেশন। এই মিউটেশনগুলো ক্যানসার আক্রান্ত অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ৫ শতাংশের মধ্যে দেখা যায় এবং এটি বিশেষভাবে এশিয়ার কমবয়সী নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তবে এশিয়ার দেশগুলোতে উন্নত স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে এখন মিউটেশনগুলো বেশি শনাক্ত করা যাচ্ছে।
এ ছাড়া, টিপি ৫৩ নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ টিউমার–প্রতিরোধক জিনের মিউটেশনও অধূমপায়ীদের মধ্যে নারীদের তুলনায় বেশি দেখা যাচ্ছে। এই জিন কোষগুলোকে ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। তবে মিউটেশন ঘটলে কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায়। ইস্ট্রোজেন হরমোন টিপি ৫৩ মিউটেশনের সঙ্গে মিলিত হয়ে নারীদের মধ্যে সময়ের সঙ্গে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিন হলো—কেআরএএস। সাধারণত এই জিনের মিউটেশন ধূমপানের কারণে হওয়া ফুসফুসের ক্যানসারের সঙ্গে যুক্ত, তবে এখন এটি অধূমপায়ী নারীদের মধ্যেও পাওয়া যাচ্ছে এবং এই প্রবণতা বাড়ছে।
বায়ুদূষণ
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বলছে, বায়ুর মধ্যে থাকা সূক্ষ্ম কণা পিএম ২.৫ (এটি এমন সূক্ষ্ম কণা যা ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটার বা তার চেয়ে ছোট) কেআরএএস মিউটেশন ঘটাতে পারে।
এ ছাড়া, অনেক শহরে পিএম ২.৫ কণার পরিমাণ বাড়ছে, যা শুধু ফুসফুস ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং নারীদের অন্যান্য ধরনের ক্যানসারের জন্যও দায়ী।
বায়ুদূষণ দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকির একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, বিশেষভাবে নারীরা এটির প্রতি বেশি সংবেদনশীল। নারীদের ফুসফুসের গঠন ও কার্যক্ষমতা তাদের দূষিত উপাদানের ক্ষতিকর প্রভাবের প্রতি বেশি সংবেদনশীল করে তোলে। নারীদের ফুসফুস পুরুষদের তুলনায় ছোট এবং তাদের শ্বাসনালি (এয়ারওয়ে) সংকীর্ণ, যার ফলে পিএম ২.৫ –এর মতো সূক্ষ্ম কণাগুলো তাদের ফুসফুসে আটকে যেতে পারে।
নারীরা সাধারণত ঘরের ভেতরে বেশি সময় কাটান, যেখানে রান্নার ধোঁয়া এবং তাপের কারণে ক্ষতিকর গ্যাসের উপস্থিতি বেশি। ঘরের বায়ুদূষণ, বিশেষত কাঠ, কয়লা, এবং কেরোসিন জ্বালানির কারণে, ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যেসব নারী কাপড়ের কারখানা, বিউটি সেলুন বা হাসপাতালে কাজ করেন, তাঁরা আরও বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসেন। এসব পদার্থ তাঁদের ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে। দ্রুত বর্ধনশীল শহরগুলোতে নারীরা সাধারণত উচ্চ ট্রাফিক এবং কারখানার দূষণের মধ্যে বসবাস করেন।
হরমোনের পরিবর্তন
জেনেটিক প্রবণতার পাশাপাশি নারীদের মধ্যে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে হরমোনের পরিবর্তন। ইস্ট্রোজেন হরমোনের রিসেপ্টর ফুসফুসের কোষে থাকে এবং কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, ইস্ট্রোজেন টিউমারের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে। তবে, যারা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (এইচআরটি) নেন, তাঁদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি কম থাকে। অর্থাৎ স্বাভাবিক ইস্ট্রোজেন চক্র হয়তো কিছু পরিমাণে সুরক্ষা দিতে পারে।
এ ছাড়া, ইস্ট্রোজেন হরমোন দূষিত উপাদানগুলোর সংস্পর্শে এলে প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়ার তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়, যা ফুসফুসের টিস্যুকে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ
জীনগত এবং হরমোনের কারণে ছাড়াও অধূমপায়ী নারীদের ফুসফুসের ক্যানসার হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ।
নারীদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় অটোইমিউন রোগ (যেমন: রিউমাটয়েড আর্থরাইটিস, লুপাস ইত্যাদি) হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এই ধরনের রোগগুলো শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিকল করে দেয়, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যখন শরীরে দীর্ঘদিন ধরে প্রদাহ চলে, তখন তা কোষের ক্ষতি করতে পারে। ডিএনএ–তে পরিবর্তন ঘটিয়ে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের মাধ্যমে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশেষত, যেসব নারীর অটোইমিউন রোগ রয়েছে, তাদের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি। কারণ ফুসফুসে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। ইনফ্ল্যামেটরি (প্রদাহজনিত) অণু যেমন, ইন্টারলিউকিন-৬ এবং টিউমার ‘নেক্রোসিস ফ্যাক্টর-আলফা’ ক্যানসারের কোষগুলোকে টিকে থাকতে এবং ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে।
বিশ্বব্যাপী অটোইমিউন রোগ ক্রমেই বাড়ছে। সম্ভবত পরিবেশগত পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এবং গাট মাইক্রোবায়োমে (অন্ত্রের উপকারী অণুজীব) পরিবর্তনের জন্য এটি হচ্ছে। নারীদের মধ্যে অটোইমিউন রোগ বেশি হওয়ার কারণে তারা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ থেকে সৃষ্ট ক্যানসারের জন্য আরও বেশি ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
এ ছাড়া, গড় আয়ু বাড়ার কারণে নারীদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও দীর্ঘসময় সক্রিয় থাকে, যা তাদের মধ্যে প্রদাহ-সংশ্লিষ্ট ক্যানসারে আক্রান্ত ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া, পরিবেশের দূষণ, গৃহস্থালির রাসায়নিক পদার্থ এবং কর্মস্থলে ক্ষতিকর উপাদানের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সংস্পর্শ ক্যানসারের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
জেনেটিক মিউটেশনের কারণে নারীরা প্রাকৃতিকভাবেই পুরুষদের তুলনায় বেশি ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। তবে, বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়া, হরমোন ক্ষরণ চক্রের পরিবর্তন, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ত্রুটি এবং আয়ু বৃদ্ধি এই ঝুঁকিগুলো আরও বাড়িয়ে তুলছে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, হিউম্যান প্যাপিলোমা (এইচপিভি) নামক একটি ভাইরাসও নারীদের ফুসফুসের ক্যানসারে ভূমিকা রাখতে পারে।

মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
৩ দিন আগে
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৫ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন। তিনি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি (এনওয়াইইউ) ল্যাঙ্গোন ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং বর্তমানে জীবিত মানুষের শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ড. মন্টগোমারি জানান, এই ট্রায়ালের প্রথম প্রতিস্থাপন ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী জানুয়ারিতে আরেকটি অপারেশন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ছয়জন রোগীর শরীরে জিন-সম্পাদিত (জিন এডিটেড) শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হবে। এসব কিডনিতে ১০টি জিনগত পরিবর্তন আনা হয়েছে, যাতে মানবদেহে অঙ্গ প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি কমে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) অনুমোদন দিলে এই ট্রায়াল আরও বিস্তৃত হয়ে ৪৪টি প্রতিস্থাপনে রূপ নিতে পারে।
বিশ্বজুড়ে মানব অঙ্গের তীব্র সংকট রয়েছে। যুক্তরাজ্যের এনএইচএস ব্লাড অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্টের তথ্য অনুযায়ী, শুধু যুক্তরাজ্যেই গত ১০ বছরে ১২ হাজারের বেশি মানুষ অঙ্গ না পেয়ে মারা গেছেন বা অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। নতুন এই ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীরা এমন রোগী, যাঁরা মানব কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অনুপযুক্ত অথবা অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকলেও পাঁচ বছরের মধ্যে অঙ্গ পাওয়ার আগে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
ড. মন্টগোমারি নিজেও একজন ট্রান্সপ্লান্ট রোগী। বংশগত হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ২০১৮ সালে হৃদ্যন্ত্র প্রতিস্থাপন করান। তাঁর বাবা ও ভাই একই রোগে মারা যান। তিনি বলেন, মানুষের অঙ্গ কখনো পর্যাপ্ত সংখ্যায় মিলবে না। কিন্তু অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষার বাস্তবতা না বুঝলে এই সংকটের গভীরতা বোঝা যায় না।
মন্টগোমারি মানব অঙ্গের জোগান বাড়াতে ডোমিনো-পেয়ার্ড কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট ও হেপাটাইটিস ‘সি’ আক্রান্ত দাতার অঙ্গ ব্যবহারের মতো উদ্যোগে পথিকৃৎ ভূমিকা রেখেছেন। তবু তাঁর মতে, এসব উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। জিন সম্পাদিত শূকর তৈরির প্রযুক্তিই জেনোট্রান্সপ্লান্টেশনকে বাস্তবের কাছাকাছি এনেছে।
ড. মন্টগোমারির ভাষায়, ভবিষ্যতে শূকরের অঙ্গ মানুষের অঙ্গের চেয়ে উন্নত হতে পারে। কারণ, এগুলো ধারাবাহিকভাবে জিনগতভাবে উন্নত করা সম্ভব, যা মানুষের অঙ্গে করা যায় না। এমনকি শূকরের থাইমাস অঙ্গ একসঙ্গে প্রতিস্থাপন করলে রোগীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এমনভাবে মানিয়ে নিতে পারে, একদিন হয়তো অ্যান্টিরিজেকশন ওষুধের প্রয়োজনীয়তাও কমে যাবে।
মন্টগোমারি জানান, প্রয়োজনে তিনি নিজেও ভবিষ্যতে শূকরের হৃদ্যন্ত্র নিতে আপত্তি করবেন না। তাঁর কথায়, ‘আমার সন্তানেরাও একই জেনেটিক ঝুঁকিতে আছে। আমি চাই, তারা যেন আমাদের চেয়ে বেশি বিকল্প নিয়ে বড় হতে পারে।’

মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন। তিনি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি (এনওয়াইইউ) ল্যাঙ্গোন ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং বর্তমানে জীবিত মানুষের শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ড. মন্টগোমারি জানান, এই ট্রায়ালের প্রথম প্রতিস্থাপন ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী জানুয়ারিতে আরেকটি অপারেশন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ছয়জন রোগীর শরীরে জিন-সম্পাদিত (জিন এডিটেড) শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হবে। এসব কিডনিতে ১০টি জিনগত পরিবর্তন আনা হয়েছে, যাতে মানবদেহে অঙ্গ প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি কমে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) অনুমোদন দিলে এই ট্রায়াল আরও বিস্তৃত হয়ে ৪৪টি প্রতিস্থাপনে রূপ নিতে পারে।
বিশ্বজুড়ে মানব অঙ্গের তীব্র সংকট রয়েছে। যুক্তরাজ্যের এনএইচএস ব্লাড অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্টের তথ্য অনুযায়ী, শুধু যুক্তরাজ্যেই গত ১০ বছরে ১২ হাজারের বেশি মানুষ অঙ্গ না পেয়ে মারা গেছেন বা অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। নতুন এই ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীরা এমন রোগী, যাঁরা মানব কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অনুপযুক্ত অথবা অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকলেও পাঁচ বছরের মধ্যে অঙ্গ পাওয়ার আগে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
ড. মন্টগোমারি নিজেও একজন ট্রান্সপ্লান্ট রোগী। বংশগত হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ২০১৮ সালে হৃদ্যন্ত্র প্রতিস্থাপন করান। তাঁর বাবা ও ভাই একই রোগে মারা যান। তিনি বলেন, মানুষের অঙ্গ কখনো পর্যাপ্ত সংখ্যায় মিলবে না। কিন্তু অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষার বাস্তবতা না বুঝলে এই সংকটের গভীরতা বোঝা যায় না।
মন্টগোমারি মানব অঙ্গের জোগান বাড়াতে ডোমিনো-পেয়ার্ড কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট ও হেপাটাইটিস ‘সি’ আক্রান্ত দাতার অঙ্গ ব্যবহারের মতো উদ্যোগে পথিকৃৎ ভূমিকা রেখেছেন। তবু তাঁর মতে, এসব উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। জিন সম্পাদিত শূকর তৈরির প্রযুক্তিই জেনোট্রান্সপ্লান্টেশনকে বাস্তবের কাছাকাছি এনেছে।
ড. মন্টগোমারির ভাষায়, ভবিষ্যতে শূকরের অঙ্গ মানুষের অঙ্গের চেয়ে উন্নত হতে পারে। কারণ, এগুলো ধারাবাহিকভাবে জিনগতভাবে উন্নত করা সম্ভব, যা মানুষের অঙ্গে করা যায় না। এমনকি শূকরের থাইমাস অঙ্গ একসঙ্গে প্রতিস্থাপন করলে রোগীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এমনভাবে মানিয়ে নিতে পারে, একদিন হয়তো অ্যান্টিরিজেকশন ওষুধের প্রয়োজনীয়তাও কমে যাবে।
মন্টগোমারি জানান, প্রয়োজনে তিনি নিজেও ভবিষ্যতে শূকরের হৃদ্যন্ত্র নিতে আপত্তি করবেন না। তাঁর কথায়, ‘আমার সন্তানেরাও একই জেনেটিক ঝুঁকিতে আছে। আমি চাই, তারা যেন আমাদের চেয়ে বেশি বিকল্প নিয়ে বড় হতে পারে।’

অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার বেশি। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা আইএআরসি–এর নতুন গবেষণায় এমন উদ্বেগজনক ফলাফল দেখা গেছে।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
৩ দিন আগে
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৫ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৬ দিন আগেমুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার তিনি ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছেন। ব্যয়বহুল এই শল্য-চিকিৎসায় নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ২০২২ সালে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক।
কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে কিডনি রোগের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনির কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। দেশে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে কিডনি অকেজো হয়ে। কিডনি প্রতিস্থাপন সীমিত এবং ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল। ফলে অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে ৬০ শতাংশ রোগীর জীবন রক্ষা সম্ভব।
কামরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৫ সালে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বোর্ডের মেধাতালিকায় যথাক্রমে ১৫তম ও ১০তম স্থান লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের মধ্যে সম্মিলিত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পান। এরপর ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস, ২০০০ সালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোলজিতে এমএস এবং ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ থেকে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
ডা. কামরুলের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৩ সালে, বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়ে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি এবং ২০০৭ সালে প্রথম সফল কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক পদে দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৪ সালে নিজ উদ্যোগে রাজধানীর শ্যামলীতে সিকেডি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
সিকেডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ডা. কামরুলের নেতৃত্বে সপ্তাহে ছয়টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিডনি দাতা ও গ্রহীতার জন্য একই সঙ্গে দুটি কক্ষে অস্ত্রোপচার চলে। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে সাধারণত ১০-১২ জন চিকিৎসক অংশ নেন। যাঁদের মধ্যে থাকেন অবেদনবিদ, কিডনি বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজির শল্যচিকিৎসকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ, পাশাপাশি নার্স ও টেকনোলজিস্ট।
ডা. কামরুল বলেন, সিকেডিতে প্রতিদিন গড়ে একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ১০-১২ জন চিকিৎসক কাজ করেন। তিনি নিজে পারিশ্রমিক নেন না, তবে অস্ত্রোপচারে আনুষঙ্গিক খরচ থাকে। তাঁর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্যাকেজ এখন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে অস্ত্রোপচার, ওষুধ, আইসিইউ এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত। কিডনি দাতা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন এবং কিডনি গ্রহীতা ৭ থেকে ১০ দিন হাসপাতালে থাকেন।
হাসপাতালের অন্যান্য সার্জারি ও চিকিৎসাসেবার আয়ের অর্থে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচের পুরো প্রক্রিয়া চালানো হয়। সেখানে প্রতিদিন ৭-১২টি কিডনি স্টোন সার্জারি, কিডনি ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসারসহ অন্যান্য সার্জারি করা হয়। হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা চার শতাধিক। আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী, ইনডোরে প্রায় ১০০ রোগী সেবা নেন। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে আরও ৫০ শয্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিকেডি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাসিন্দা মাইনুল রহমান। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিয়ে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ডা. কামরুল ইসলাম এই অস্ত্রোপচার করেন।
কিডনি প্রতিস্থাপনে সিকেডি হাসপাতাল সোয়া দুই লাখ টাকা নিয়েছে জানিয়ে মাইনুল রহমান গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিকেডি হাসপাতাল যদি অন্য হাসপাতালের মতো খরচ নিত, তাহলে আমরা তা বহন করতে পারতাম না। এখন প্রতি মাসে ফলোআপ চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। সেখানে গেলে সবকিছু বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসকের ফি দিতে হয় না।’
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিজের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জের ৩৭ বছর বয়সী আবু বকর। তিনি বলেন, ‘ডা. কামরুল স্যার খুবই মানবিক। আমরা খরচের ভয়ে চিকিৎসায় যেতে চাইনি। তিনি কয়েকবার ফোন করে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, তিনি কিডনি বসিয়ে দিয়েছেন।’
ডা. কামরুল জানান, কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগীরা বাসায় গেলে প্রথম এক থেকে দুই বছর অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়; বিশেষ করে ওষুধ ঠিকমতো না খাওয়া, সময়মতো ডোজ না নেওয়া এবং অনিয়মিত জীবনধারা ঝুঁকি বাড়ায়। আবার রোগীরা খরচের ভয়ে ফলোআপ চিকিৎসায় আসতে চান না। ফলে তাঁদের এসব চিকিৎসা আজীবন বিনা মূল্যে করেন তিনি।
ডা. কামরুলের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তাঁদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, মেজ মেয়ে এমবিবিএস অধ্যয়ন করছেন।
নিজের প্রতিষ্ঠিত সিকেডি হাসপাতালকে ‘বড় গাছের মতো’ দেখেন ডা. কামরুল ইসলাম। যেখানে আয়ের একটি অংশ দরিদ্র রোগী ও কিডনি প্রতিস্থাপনে ব্যয় করা হয়। তিনি বলেন, ‘মানুষকে নিখুঁত চিকিৎসা দেওয়া আমার কর্তব্য। আমি কিডনি রোগীদের খরচ হাসপাতালের অন্যান্য আয়ের মাধ্যমে বহন করি। এটি যেকোনো হাসপাতালই করতে পারে এবং এর জন্য লোকসান হয়; তা কিন্তু নয়।’

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার তিনি ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছেন। ব্যয়বহুল এই শল্য-চিকিৎসায় নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ২০২২ সালে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক।
কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে কিডনি রোগের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনির কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। দেশে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে কিডনি অকেজো হয়ে। কিডনি প্রতিস্থাপন সীমিত এবং ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল। ফলে অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে ৬০ শতাংশ রোগীর জীবন রক্ষা সম্ভব।
কামরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৫ সালে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বোর্ডের মেধাতালিকায় যথাক্রমে ১৫তম ও ১০তম স্থান লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের মধ্যে সম্মিলিত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পান। এরপর ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস, ২০০০ সালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোলজিতে এমএস এবং ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ থেকে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
ডা. কামরুলের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৩ সালে, বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়ে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি এবং ২০০৭ সালে প্রথম সফল কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক পদে দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৪ সালে নিজ উদ্যোগে রাজধানীর শ্যামলীতে সিকেডি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
সিকেডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ডা. কামরুলের নেতৃত্বে সপ্তাহে ছয়টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিডনি দাতা ও গ্রহীতার জন্য একই সঙ্গে দুটি কক্ষে অস্ত্রোপচার চলে। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে সাধারণত ১০-১২ জন চিকিৎসক অংশ নেন। যাঁদের মধ্যে থাকেন অবেদনবিদ, কিডনি বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজির শল্যচিকিৎসকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ, পাশাপাশি নার্স ও টেকনোলজিস্ট।
ডা. কামরুল বলেন, সিকেডিতে প্রতিদিন গড়ে একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ১০-১২ জন চিকিৎসক কাজ করেন। তিনি নিজে পারিশ্রমিক নেন না, তবে অস্ত্রোপচারে আনুষঙ্গিক খরচ থাকে। তাঁর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্যাকেজ এখন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে অস্ত্রোপচার, ওষুধ, আইসিইউ এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত। কিডনি দাতা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন এবং কিডনি গ্রহীতা ৭ থেকে ১০ দিন হাসপাতালে থাকেন।
হাসপাতালের অন্যান্য সার্জারি ও চিকিৎসাসেবার আয়ের অর্থে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচের পুরো প্রক্রিয়া চালানো হয়। সেখানে প্রতিদিন ৭-১২টি কিডনি স্টোন সার্জারি, কিডনি ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসারসহ অন্যান্য সার্জারি করা হয়। হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা চার শতাধিক। আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী, ইনডোরে প্রায় ১০০ রোগী সেবা নেন। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে আরও ৫০ শয্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিকেডি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাসিন্দা মাইনুল রহমান। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিয়ে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ডা. কামরুল ইসলাম এই অস্ত্রোপচার করেন।
কিডনি প্রতিস্থাপনে সিকেডি হাসপাতাল সোয়া দুই লাখ টাকা নিয়েছে জানিয়ে মাইনুল রহমান গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিকেডি হাসপাতাল যদি অন্য হাসপাতালের মতো খরচ নিত, তাহলে আমরা তা বহন করতে পারতাম না। এখন প্রতি মাসে ফলোআপ চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। সেখানে গেলে সবকিছু বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসকের ফি দিতে হয় না।’
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিজের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জের ৩৭ বছর বয়সী আবু বকর। তিনি বলেন, ‘ডা. কামরুল স্যার খুবই মানবিক। আমরা খরচের ভয়ে চিকিৎসায় যেতে চাইনি। তিনি কয়েকবার ফোন করে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, তিনি কিডনি বসিয়ে দিয়েছেন।’
ডা. কামরুল জানান, কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগীরা বাসায় গেলে প্রথম এক থেকে দুই বছর অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়; বিশেষ করে ওষুধ ঠিকমতো না খাওয়া, সময়মতো ডোজ না নেওয়া এবং অনিয়মিত জীবনধারা ঝুঁকি বাড়ায়। আবার রোগীরা খরচের ভয়ে ফলোআপ চিকিৎসায় আসতে চান না। ফলে তাঁদের এসব চিকিৎসা আজীবন বিনা মূল্যে করেন তিনি।
ডা. কামরুলের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তাঁদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, মেজ মেয়ে এমবিবিএস অধ্যয়ন করছেন।
নিজের প্রতিষ্ঠিত সিকেডি হাসপাতালকে ‘বড় গাছের মতো’ দেখেন ডা. কামরুল ইসলাম। যেখানে আয়ের একটি অংশ দরিদ্র রোগী ও কিডনি প্রতিস্থাপনে ব্যয় করা হয়। তিনি বলেন, ‘মানুষকে নিখুঁত চিকিৎসা দেওয়া আমার কর্তব্য। আমি কিডনি রোগীদের খরচ হাসপাতালের অন্যান্য আয়ের মাধ্যমে বহন করি। এটি যেকোনো হাসপাতালই করতে পারে এবং এর জন্য লোকসান হয়; তা কিন্তু নয়।’

অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার বেশি। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা আইএআরসি–এর নতুন গবেষণায় এমন উদ্বেগজনক ফলাফল দেখা গেছে।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৫ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।
ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।
এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।
এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।
তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।
ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।
এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।
এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।
তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার বেশি। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা আইএআরসি–এর নতুন গবেষণায় এমন উদ্বেগজনক ফলাফল দেখা গেছে।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
৩ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৬ দিন আগেফিচার ডেস্ক

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

অধূমপায়ী ব্যক্তিদের ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই হার বেশি। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা আইএআরসি–এর নতুন গবেষণায় এমন উদ্বেগজনক ফলাফল দেখা গেছে।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
৩ দিন আগে
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৫ দিন আগে