Ajker Patrika

নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ জরুরি

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
নিরাময়ের চেয়ে  প্রতিরোধ জরুরি

সাধারণত প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের জীবনে কোনো না কোনো সময়ে স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু আমরা অনেকে জানি না যে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। কেবল জীবনযাপনে কিছু নিয়ম মেনে চললেই এই ঝুঁকি এড়ানো যাবে। আর সে জন্যই এবারের স্ট্রোক দিবসের প্রতিপাদ্য হলো—নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ শ্রেয়। 

স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ার কারণ
»    উচ্চ রক্তচাপ 
»    অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন
»    ধূমপান  
»    অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
»    শারীরিক পরিশ্রম না করা

বিশ্বজুড়ে মানুষের পঙ্গুত্ব ও অক্ষমতার অন্যতম বড় কারণ হলো স্ট্রোক। এটি এড়াতে প্রথমেই সচেতন হতে হবে এবং অন্যকে সচেতন করতে হবে। দৈনন্দিন জীবনে কিছু পদক্ষেপ নিলে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। 

»    উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে 
»    নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে
»    ধূমপান ছাড়তে হবে
»    নিজের খেয়াল নিজেকেই রাখতে হবে
»    নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে ও কর্মক্ষম থাকতে হবে 
»    খাদ্যতালিকা থেকে জাংক ফুড সরিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখতে হবে
»    হাসিখুশি থাকতে হবে

স্ট্রোকের জরুরি সংকেত 
»    মুখের এক দিক ঝুলে পড়া বা অবশ হয়ে পড়া। 
»    দুই হাতের কোনো একটির বাহু দুর্বল বা অবশ হলে বা একটি হাত ঝুলে পড়ে গেলে। 
»    কথায় জড়তা থাকলে।
এগুলোর মধ্যে কোনো একটি দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের কাছে যান।

অন্যান্য উপসর্গ 
»    অবশ হওয়া দেহের একদিকে মুখ, বাহু বা পা অবশ বা দুর্বল হওয়া
»    হতবিহ্বল কথা বলতে থাকা, বুঝতে সমস্যা হওয়া
»    এক চোখে দেখতে অসুবিধা হওয়া
»    হাঁটতে অসুবিধা হওয়া বা মাথা ঝিমঝিম করে ওঠা
»    কারণ ছাড়া প্রচণ্ড মাথা ধরা 

স্ট্রোক দুই ধরনের
» ইস্কিমিক স্ট্রোক: এ ধরনের স্ট্রোকে রক্তনালির পথে ক্লট বা রক্তপিণ্ড জমে রক্ত চলাচলের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। তখন মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৮৭ শতাংশ স্ট্রোক হলো ইস্কিমিক স্ট্রোক। 

» হেমোরেজিক স্ট্রোক: মগজে রক্ত পৌঁছে দেয় এমন রক্তনালি দুর্বল হয়ে ফেটে বা ছিঁড়ে রক্তক্ষরণ হলে এ ধরনের স্ট্রোক হতে পারে। এর মূল কারণ উচ্চ রক্তচাপ।

এ ছাড়া মিনি স্ট্রোক হয় অনেক 
সময়। একে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ট্রাঞ্জিয়েন্ট ইস্কিমিক অ্যাটাক। এতে মগজে সাময়িকভাবে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

স্ট্রোক হওয়ার পরের জীবন
স্ট্রোক হওয়ার পর বেঁচে গেলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ও সহায়তা নিয়ে চলতে হবে।

বদল আনতে হবে জীবনযাপন, পরিধান, খাওয়াদাওয়া, ঘোরাঘুরি, গাড়ি চালানোসহ অনেক কিছুতে। অনেকের খাওয়ার সময় গিলতে সমস্যা হয়। এর জন্য চাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ। এ ছাড়া স্ট্রোকের রোগীদের ফিজিওথেরাপির দরকার হয়।

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ,চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত