Ajker Patrika

পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগের মানসিক ও শারীরিক উপসর্গ

ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগে অনেক নারীর মানসিক ও শারীরিক কিছু উপসর্গ দেখা যায়। একে সাধারণত প্রি-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রোম বা পিএমএস বলা হয়।

শারীরিক উপসর্গ

» স্তনে টান বা ব্যথা

» শরীরে; বিশেষ করে মুখ, হাত, পা ফোলা

» পেট ফাঁপা বা ভারী লাগা

» মাথাব্যথা বা মাইগ্রেন

» কোমর ও পেটব্যথা

» অতিরিক্ত ক্লান্তি

» ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া বা চকলেট, মিষ্টি ইত্যাদির মতো বিশেষ খাবারের প্রতি আকর্ষণ

» ঘুমের সমস্যা

মানসিক ও আচরণগত উপসর্গ

» খিটখিটে মেজাজ

» সহজে রেগে যাওয়া

» অযথা কান্না বা আবেগপ্রবণ হওয়া

» মন খারাপ বা বিষণ্নতা

» মনোযোগ কমে যাওয়া

» উদ্বেগ বা অস্থিরতা

পরিবারের করণীয়

এ সময় পরিবারের সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয় ছাড়া কিছু কাজ হলো:

সহানুভূতি দেখানো: মেজাজ পরিবর্তন বা অযথা রাগকে ব্যক্তিগতভাবে না নিয়ে বোঝাপড়া করা।

পরিবেশ শান্ত রাখা: ঝগড়া, চাপ বা অপ্রয়োজনীয় সমালোচনা এড়িয়ে চলা।

সহায়তা করা: গৃহকর্মে সাহায্য করা, বিশ্রামের সুযোগ দেওয়া।

সুষম খাবার নিশ্চিত করা: সবজি ও ফল খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পানে উৎসাহ দেওয়া এবং ব্যবস্থা করা। অতিরিক্ত লবণ ও ক্যাফেইন খাওয়া কমাতে উৎসাহ দেওয়া।

হালকা ব্যায়াম বা হাঁটার উৎসাহ দেওয়া: মেজাজ ও ব্যথা—দুয়ের জন্যই হালকা ব্যায়াম উপকারী।

বিশ্রাম ও ঘুমের সুযোগ দেওয়া: যথেষ্ট ঘুম পিএমএসের প্রভাব কমায়।

কথা শোনা ও মানসিক সমর্থন দেওয়া: যাতে মনে করা যায়, পরিবার তার পাশে আছে।

তবে উপসর্গগুলো যদি খুব বেশি হয়, দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায় অথবা বারবার বিষণ্নতার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পিএমএস কমানোর ঘরোয়া টিপস

» খাবার-দাবারে সচেতনতা

» লবণ কম খেলে শরীর ফোলা কম হয়

» ক্যাফেইন (চা, কফি, কোলা) পান কমালে খিটখিটে মেজাজ ও টেনশন কমে।

» প্রচুর শাকসবজি, ফল, গোটা শস্যজাতীয় খাবার খাওয়া সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

» অল্প পরিমাণে দিনে বারবার খাবার খেলে পেট ফাঁপা কম হয়।

নিয়মিত ব্যায়াম

» প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম অথবা দ্রুত হাঁটাহাঁটি করলে মুড ভালো থাকে এবং ব্যথা কমে।

» যোগব্যায়াম ও স্ট্রেচিংও উপকারী।

স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট

» মেডিটেশন, প্রার্থনা, গভীর শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস উদ্বেগ কমায়।

» বই পড়া বা গান শোনার মতো নিজের পছন্দের কাজ করা মানসিক স্বস্তি দেয়।

ভালো ঘুম

» প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো।

» শোয়ার আগে ডিভাইস ব্যবহার বন্ধ করা।

গরম পানির সেঁক

» পেটে বা কোমরে গরম পানির ব্যাগ রাখলে ব্যথা কম হয়।

» যদি উপসর্গগুলো ঘরোয়া পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যথানাশক খাওয়া যেতে পারে।

পরামর্শ দিয়েছেন: প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, সহকারী অধ্যাপক (গাইনি)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত