Ajker Patrika

ফ্যাক্টচেক /করোসল ফল ক্যানসারের প্রতিরোধক, কেমোথেরাপির বিকল্প—এসব দাবি সত্য নয়

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ২১: ৪৬
করোসল ফল ক্যানসারের প্রতিরোধক, কেমোথেরাপির বিকল্প—এসব দাবি সত্য নয়

ময়মনসিংহের ‘ফুলবাড়ীয়ায় ক্যানসার প্রতিরোধক করোসল গাছের পাতা সংগ্রহে ভিড়’ শিরোনামে ২০২৩ সালের ৫ জুলাই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক ইত্তেফাক। তাতে দাবি করা হয়, ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে পরিচিত করোসল ফলের গাছের পাতা সংগ্রহে ভিড় করছেন রোগীদের স্বজনেরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবকের বরাত দিয়ে বলা হয়, তাঁর মা ক্যানসারে আক্রান্ত। করোসলগাছের পাতা কেমোথেরাপি চেয়ে শক্তিশালী—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বেসরকারি টেলিভিশনের খবরে তিনি এ তথ্য জেনে পাতা সংগ্রহের জন্য এসেছেন।

নিউজ পোর্টাল ঢাকা টাইমসের ফিচার ডেস্ক থেকে গত বছরের ৬ জুলাই প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘করোসল ফল কেমোথেরাপির চেয়ে ১০ হাজার গুণ শক্তিশালী। অথচ কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই।’ প্রতিবেদনটিতে বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘এই ফলের (করোসল) এতটাই গুণ, এই ফল খেলে ক্যানসার রোগীর থেরাপির প্রয়োজন হয় না।’

মানবজমিনের একটি প্রতিবেদনে করোসল ফলকে উল্লেখ করা হয়েছে ক্যানসারের ‘প্রাকৃতিক কেমোথেরাপি’ হিসেবে।

করোসল ফল নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ভুল তথ্য। ছবি: ইত্তেফাক
করোসল ফল নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ভুল তথ্য। ছবি: ইত্তেফাক

স্বাস্থ্যবিষয়ক ম্যাগাজিন মেডিকেল নিউজ টুডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, করোসল ফলটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গ্রাভিওলা, সাওয়ারসপ, গুয়াবানো, গুয়ানাবানা, ব্রাজিলিয়ান পাও পাও, কাস্টার্ড আপেল নামে পরিচিত। করোসল অ্যানোনা মিউরিকাটা গোত্রের গাছের। এটি গাঢ় সবুজ বর্ণের, কাঁটাযুক্ত, হৃৎপিণ্ড আকৃতির। এর গাছ ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে জন্মায়। সাধারণত ফলটি পানীয়, আইসক্রিম ও সিরাপ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। আফ্রিকা, ক্যারিবিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের লোকজন প্রাকৃতিক চিকিৎসায় এই গাছের বেশিরভাগ অংশ—যেমন পাতা, ফল ও বীজ ব্যবহার করে। এই ফলে অনেক খনিজ রয়েছে, যার মধ্যে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রন অন্তর্ভুক্ত।  

করোসল ফল নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ভুল তথ্য। ছবি: মানবজমিন
করোসল ফল নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ভুল তথ্য। ছবি: মানবজমিন

করোসল ফল কি আসলেই ক্যানসারের প্রতিষেধক বা কেমোথেরাপির বিকল্প? কী বলে গবেষণা?

ভারতীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান দ্য হেলদি ইন্ডিয়ান প্রজেক্ট জানায়, ক্যানসারের চিকিৎসায় করোসল ফলের ওপর নির্ভর করা উচিত নয়। যদিও ফলটিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যেগুলোকে অ্যাসিটোজেনিনস বলা হয়, যা ল্যাবে গবেষণায় কিছু ক্যানসারপ্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য দেখিয়েছে। তবে এই ফলাফলগুলো শুধু গবেষণাগারেই সীমাবদ্ধ। করোসল মানুষের ক্যানসার চিকিৎসা বা নিরাময়ের জন্য কার্যকর হতে পারে, এর কোনো ক্লিনিক্যাল বা পরীক্ষামূলক প্রয়োগের প্রমাণ নেই।

অন্যদিকে কেমোথেরাপি নিয়ে যুগ যুগ ধরে ব্যাপক গবেষণা হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপির প্রভাব প্রমাণিত। তবে কেমোথেরাপির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শুধু করোসল ফল বা অন্য কোনো বিকল্প থেরাপির ওপর নির্ভর করা ঝুঁকিপূর্ণ। সর্বোপরি, করোসল ফল কেমোথেরাপির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা বিপজ্জনক। আবার করোসলের এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা স্নায়ুর ক্ষতি ঘটাতে পারে।

ক্যানসারের চিকিৎসায় করোসল ফলের কোনো ধরনের ব্যবহারকে অনুমোদন দেয় না যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনও (এফডিএ)। ছবি: এফডিএ
ক্যানসারের চিকিৎসায় করোসল ফলের কোনো ধরনের ব্যবহারকে অনুমোদন দেয় না যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনও (এফডিএ)। ছবি: এফডিএ

ক্যানসারের চিকিৎসায় করোসল ফলের কোনো ধরনের ব্যবহারকে অনুমোদন দেয় না যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনও (এফডিএ)। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ক্যানসারের চিকিৎসায় অবৈধভাবে ব্যবহৃত ৮০টিরও বেশি পণ্যের তালিকা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ১৮টি সতর্কবার্তা ও পরামর্শ দিয়েছে। এই ৮০টি পণ্যের মধ্যে আছে করোসল ফল, পাতা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পণ্য। এফডিএ জানায়, এসব পণ্য নিরাপদ কি না এবং এগুলোর সক্ষমতা যাচাই করেনি তারা এবং এসব পণ্য মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর।

১৯৯৭ সালে জার্নাল অব মেডিসিনাল কেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত এক গবেষণার বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসার সেন্টার জানায়, স্তন ক্যানসারের কোষ ধ্বংস করায় কেমোথেরাপির চেয়ে বেশি কার্যকর ছিল করোসল ফলের কিছু উপাদান। ২০১৬ সালে সায়েন্টিফিক রিপোর্টস নামে আরেকটি সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় ইঁদুরের প্রোস্টেট ক্যানসার কোষে করোসল ফল প্রয়োগেও ভালো ফলাফল পাওয়ার তথ্য তুলে ধরা হয়। তবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ছাড়া করোসল ফল ক্যানসার রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে—এমন দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।

ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ছাড়া করোসল ফল ক্যানসার রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে এমন দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। ছবি: ক্যানসার সেন্টার
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ছাড়া করোসল ফল ক্যানসার রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে এমন দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। ছবি: ক্যানসার সেন্টার

ক্যানসার সেন্টার আরও জানায়, করোসল ফল মুখে খাওয়াও নিরাপদ নয়। এই ফল খাওয়া পার্কিনসনস ডিজিজের মতো মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার বা নড়াচড়ায় বৈকল্য ঘটাতে পারে। আরেকটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, করোসল ফলের পাতার ও কাণ্ডের চা স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রম বাধা দেওয়ার পাশাপাশি অস্বাভাবিক করে দিতে পারে।

একই বক্তব্য পাওয়া যায় যুক্তরাজ্যের ক্যানসার-বিষয়ক দাতব্য প্রতিষ্ঠান ক্যানসার রিসার্চ ইউকের ওয়েবসাইট থেকে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ক্যানসারের চিকিৎসায় করোসল ফলের প্রচারণা থাকলেও এর পক্ষে পর্যাপ্ত নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ নেই।

ল্যাবরেটরি গবেষণার বরাত দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, করোসল কিছু ধরনের ক্যানসার কোষ—যেমন লিভার, স্তন ও প্রোস্টেট ক্যানসার ধ্বংস করতে সক্ষম। কিন্তু মানুষের ওপর এ ফলের প্রভাব নিয়ে কোনো গবেষণা করা হয়নি। তাই করোসল শরীরে কেমন প্রভাব ফেলে, তা এখনো জানা যায়নি। ফলটির কিছু রাসায়নিক উপাদান নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে। এসব উপাদান স্নায়ুতে পরিবর্তন এবং চলাফেরায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। স্নায়ু পরিবর্তনের ফলে পার্কিনসনস রোগের মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। ল্যাবরেটরি গবেষণায় দেখা গেছে, করোসলের কিছু উপাদান স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে এবং রক্তের মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে পারে।

সিঙ্গাপুরের বিখ্যাত হাসপাতাল মাউন্ট এলিজাবেথের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, অনেকে ধারণা করেন যে করোসল পাতা দিয়ে তৈরি পানীয় ক্যানসার কোষের সংখ্যা কমাতে সহায়ক হতে পারে, বিশেষত স্তন বা প্রোস্টেট ক্যানসারের ক্ষেত্রে। কারণ, এতে অ্যানোনাসিয়াস অ্যাসিটোজেনিন যৌগ নামে একধরনের উপাদান রয়েছে, যা নির্দিষ্ট ধরনের ক্যানসারের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। তবে গবেষণায় এখনো এটি কার্যকর চিকিৎসা কি না, তা প্রমাণ করা যায়নি। এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা করোসল ফল নিয়ে কেবল ল্যাবরেটরিতে পৃথক কোষ ও ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছেন।

তাই বিশেষজ্ঞরা করোসল ফলকে ক্যানসারের প্রমাণিত চিকিৎসা হিসেবে সুপারিশ করেন না।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।

আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৫
মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।

বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’

ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি

বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।

বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ

এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত
এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।

একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫০
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।

ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই

ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত

ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।

সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল

এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

কথিত জেসিকা র‍্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন

সরকারি ছুটি ২৮ দিন, ১১ দিনই শুক্র-শনিবার

‘চিটাংঅর মইদ্যে সরোয়াইজ্জা মরিব’— ফোনে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের চেলা রায়হানের হুমকি

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত