জাহীদ রেজা নূর
বন্ধুদের বাগানবাড়ি গাজীপুরের পিরুজালিতে। চৌরাস্তা থেকে হোতাপাড়া বাজারের পথ ধরে ভেতরে ঢুকতে হয়। আবার চৌরাস্তার আগেই মাস্টারবাড়ি দিয়ে সোজা রাস্তা ধরে চলে আসা যায় এখানে। বাগানবাড়ির মালিকেরা সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে পড়াশোনা করে এসেছে। নিজেরা একসঙ্গে মাঝে মাঝে অবসর কাটাবে বলে সুনসান পাঁচ ঘরের এক বাড়ি ওদের।
এখানে কোলাহল নেই একেবারে। বাগানবাড়িতে শুধু নিজেদের পালা গরু, মুরগির ডাক শোনা যায়। দুটি কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে বাড়িময়। এ কারণেই এখন আর মুরগি চুরি হয় না। ঠিক ধরেছেন, আগে কারণে-অকারণে শেয়াল হানা দিত এই বাড়িতে। মুরগিগুলো উধাও হয়ে যেত। এখন শেয়ালের ডাক শোনা যায় দূর থেকে। একসঙ্গে যখন অনেক শেয়ালের ঐকতানের জন্ম হয়, তখন গা ছমছম করে।
গ্যাসের চুলার পাশাপাশি মাটির চুলা রান্নার স্বাদকে জড়িয়ে নেয় অতীতের আবেশে। কাঠ দিয়ে রান্না—স্মৃতিতে আদরের পরশ বোলায়।
রাতে রুশ গান আর রুশ খাবারদাবারে মজে যাওয়ার সময়ই ঠিক হয়, পরদিন আমরা যাব নুহাশপল্লীতে। ১০ মিনিট হাঁটলেই হুমায়ূন আহমেদের নুহাশপল্লী।
শহরে বসবাস যাদের, তারা বিমোহিত হবে পথের দৃশ্যে। সরু রাস্তার দুধারে সারি সারি গাছ। কত ধরনের যে গাছ! রাস্তা দিয়ে মূলত চলছে ছোট ছোট সিএনজির মতো যান। আমরা সে যানে চড়ে বসি না। হাঁটতে থাকি।
কিছুক্ষণ পর ডান দিকে সাইনবোর্ড—নুহাশপল্লী। সেদিকে এগিয়ে দেখি ছোটখাটো এক মেলা যেন! মেলার মতো অনেক কিছু নিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা। নুহাশপল্লীতে জনপ্রতি ২০০ টাকায় টিকিট করে আমরা সরের চায়ে চুমুক দিই। আর তখনই দেখতে পাই খাবারের হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে হাজির হয়েছেন এক নারী। রাখছেন টেবিলে। এবং শামিয়ানার মতো যে জায়গাটা, সেখানে ঝুলছে সাইনবোর্ড—‘গ্রামবাংলার হোটেল।’
টেবিলের খাবারগুলোর দিকে চোখ যায়। ডিম ভুনা, মুরগি ভুনা, তিন রকম ভর্তা, পাতলা ডাল আর
সাদা ভাত।
‘কী নাম আপনার?’
‘আমার নাম শাহানাজ আক্তার।’
‘আপনি একা দোকান করেন?’
‘না। আমার হাজবেন্ডও দোকান করে। আইজ আমার হাজবেন্ড ৫০০ লোকের রান্না করতে গেছে।’
‘ওই যে চুলার পাড়ে, তিনি কে?’
‘আমার আম্মা। আমারে হেল্প করে।’
‘কত টাকা বিক্রিবাট্টা হয়?’
‘এই মনে করেন, শুক্র-শনিবার কনফার্ম বেশি হয়। শুক্রবার পাঁচ হাজার ট্যাকা হয়। শনিবারে একটু হালকা। এমনও দিন আছে, দুই হাজার টাকা হয়। আবার পাঁচ শ টাকাও হয়।’
‘দাম?’
‘দাম তো প্যাকেজ অনুযায়ী। তিন রকম ভর্তা, ডিম ভুনা, পাতলা ডাইল আর সাদা ভাত। দেড় শ টাকা। ভাত আনলিমিটেড। আরেকটা প্যাকেজ হইল ডিম ভুনা বাদে সব, আর মুরগি ঢুকবে। আড়াই শ টাকা। এখানেও ভাত আনলিমিটেড। অনেক রকম ভর্তা আনি। আইজ আনছি তিনটা। কালিজিরা, চ্যাপা শুঁটকি, শিমের ভর্তাও আনি।’
‘আপনার ছেলেমেয়ে কয়জন?’
‘চার ছেলে। বড় শাহাদাত ইন্টারে পড়ে। মেজো শান্ত চাকরি করে। স্বাধীন পড়ে ফাইভে আর সৌরভ টুয়ে।’
‘আপনার বরের নাম?’
প্রথমে বুঝতে পারেন না প্রশ্ন। তারপর বলেন, ‘ও, আমার হাজবেন্ডের নাম? লুৎফর রহমান।’
‘কেমন আছেন আপনারা?’
মুখে তৃপ্তি নিয়ে শাহানাজ বলেন, ‘হুমায়ূন স্যার মইরা যাওয়ার ৪০ দিন পরেই তো আমরা দোকান দিসি। ব্যবসা কইরাই তো বাইচ্যা আছি।’
বন্ধুদের বাগানবাড়ি গাজীপুরের পিরুজালিতে। চৌরাস্তা থেকে হোতাপাড়া বাজারের পথ ধরে ভেতরে ঢুকতে হয়। আবার চৌরাস্তার আগেই মাস্টারবাড়ি দিয়ে সোজা রাস্তা ধরে চলে আসা যায় এখানে। বাগানবাড়ির মালিকেরা সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে পড়াশোনা করে এসেছে। নিজেরা একসঙ্গে মাঝে মাঝে অবসর কাটাবে বলে সুনসান পাঁচ ঘরের এক বাড়ি ওদের।
এখানে কোলাহল নেই একেবারে। বাগানবাড়িতে শুধু নিজেদের পালা গরু, মুরগির ডাক শোনা যায়। দুটি কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে বাড়িময়। এ কারণেই এখন আর মুরগি চুরি হয় না। ঠিক ধরেছেন, আগে কারণে-অকারণে শেয়াল হানা দিত এই বাড়িতে। মুরগিগুলো উধাও হয়ে যেত। এখন শেয়ালের ডাক শোনা যায় দূর থেকে। একসঙ্গে যখন অনেক শেয়ালের ঐকতানের জন্ম হয়, তখন গা ছমছম করে।
গ্যাসের চুলার পাশাপাশি মাটির চুলা রান্নার স্বাদকে জড়িয়ে নেয় অতীতের আবেশে। কাঠ দিয়ে রান্না—স্মৃতিতে আদরের পরশ বোলায়।
রাতে রুশ গান আর রুশ খাবারদাবারে মজে যাওয়ার সময়ই ঠিক হয়, পরদিন আমরা যাব নুহাশপল্লীতে। ১০ মিনিট হাঁটলেই হুমায়ূন আহমেদের নুহাশপল্লী।
শহরে বসবাস যাদের, তারা বিমোহিত হবে পথের দৃশ্যে। সরু রাস্তার দুধারে সারি সারি গাছ। কত ধরনের যে গাছ! রাস্তা দিয়ে মূলত চলছে ছোট ছোট সিএনজির মতো যান। আমরা সে যানে চড়ে বসি না। হাঁটতে থাকি।
কিছুক্ষণ পর ডান দিকে সাইনবোর্ড—নুহাশপল্লী। সেদিকে এগিয়ে দেখি ছোটখাটো এক মেলা যেন! মেলার মতো অনেক কিছু নিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা। নুহাশপল্লীতে জনপ্রতি ২০০ টাকায় টিকিট করে আমরা সরের চায়ে চুমুক দিই। আর তখনই দেখতে পাই খাবারের হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে হাজির হয়েছেন এক নারী। রাখছেন টেবিলে। এবং শামিয়ানার মতো যে জায়গাটা, সেখানে ঝুলছে সাইনবোর্ড—‘গ্রামবাংলার হোটেল।’
টেবিলের খাবারগুলোর দিকে চোখ যায়। ডিম ভুনা, মুরগি ভুনা, তিন রকম ভর্তা, পাতলা ডাল আর
সাদা ভাত।
‘কী নাম আপনার?’
‘আমার নাম শাহানাজ আক্তার।’
‘আপনি একা দোকান করেন?’
‘না। আমার হাজবেন্ডও দোকান করে। আইজ আমার হাজবেন্ড ৫০০ লোকের রান্না করতে গেছে।’
‘ওই যে চুলার পাড়ে, তিনি কে?’
‘আমার আম্মা। আমারে হেল্প করে।’
‘কত টাকা বিক্রিবাট্টা হয়?’
‘এই মনে করেন, শুক্র-শনিবার কনফার্ম বেশি হয়। শুক্রবার পাঁচ হাজার ট্যাকা হয়। শনিবারে একটু হালকা। এমনও দিন আছে, দুই হাজার টাকা হয়। আবার পাঁচ শ টাকাও হয়।’
‘দাম?’
‘দাম তো প্যাকেজ অনুযায়ী। তিন রকম ভর্তা, ডিম ভুনা, পাতলা ডাইল আর সাদা ভাত। দেড় শ টাকা। ভাত আনলিমিটেড। আরেকটা প্যাকেজ হইল ডিম ভুনা বাদে সব, আর মুরগি ঢুকবে। আড়াই শ টাকা। এখানেও ভাত আনলিমিটেড। অনেক রকম ভর্তা আনি। আইজ আনছি তিনটা। কালিজিরা, চ্যাপা শুঁটকি, শিমের ভর্তাও আনি।’
‘আপনার ছেলেমেয়ে কয়জন?’
‘চার ছেলে। বড় শাহাদাত ইন্টারে পড়ে। মেজো শান্ত চাকরি করে। স্বাধীন পড়ে ফাইভে আর সৌরভ টুয়ে।’
‘আপনার বরের নাম?’
প্রথমে বুঝতে পারেন না প্রশ্ন। তারপর বলেন, ‘ও, আমার হাজবেন্ডের নাম? লুৎফর রহমান।’
‘কেমন আছেন আপনারা?’
মুখে তৃপ্তি নিয়ে শাহানাজ বলেন, ‘হুমায়ূন স্যার মইরা যাওয়ার ৪০ দিন পরেই তো আমরা দোকান দিসি। ব্যবসা কইরাই তো বাইচ্যা আছি।’
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৬ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৬ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৬ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫