Ajker Patrika

শুঁটকি তৈরির উদ্দেশ্যে দুবলার পথে জেলেরা

সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট)
শুঁটকি তৈরির উদ্দেশ্যে দুবলার পথে জেলেরা

বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবন উপকূলে দুবলার চরে শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের কাজে অংশ নিতে সমবেত হচ্ছেন জেলেরা। ইতিমধ্যে মোংলা, রামপাল, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ উপকূলের হাজার হাজার জেলে সেখানে আসতে শুরু করেছেন। গতকাল শনিবার ভোরে মোংলার পশুর নদসংলগ্ন চিলা খাল থেকে প্রথম দফায় তিন শতাধিক জেলে দুবলার চরের উদ্দেশে যাত্রা করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই তাঁরা সেখানে যাচ্ছেন।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মোংলা থেকে নদীপথে দুবলা জেলেপল্লির দূরত্ব প্রায় ৯০ নটিক্যাল মাইল। প্রতিবছরের নভেম্বর মাসে সাগরপাড়ের মেহের আলীর চর, আলোর কোল, অফিস কিল্লা, মাঝের কিল্লা, শেলার চর, নারকেলবাড়িয়া, ছোট আমবাড়িয়া, বড় আমবাড়িয়া, মানিকখালী, কবরখালী, ছাপড়াখালীর চর, কোকিলমনি ও হলদেখালী চরে অন্তত ১০ হাজার জেলে জড়ো হন। সম্মিলিতভাবে এ চরগুলোকে দুবলার চর বলা হয়।

দুবলা জেলেপল্লির জেলেরা নিজেদের থাকা, মাছ ধরার সরঞ্জাম রাখা ও শুঁটকি তৈরির জন্য অস্থায়ী ঘর তৈরি করেন। জেলেরা সমুদ্র মোহনায় বেহুন্দি জাল দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার ও বাছাই করে জাতওয়ারি মাছসমূহ শুঁটকি করে থাকেন।

সূত্র আরও জানায়, ১ নভেম্বর থেকে বঙ্গোপসাগরপাড়ে সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হতে যাওয়া শুঁটকি মৌসুম জেলেদের অস্থায়ী থাকার ঘর, মাছ শুকানো চাতাল ও মাচা তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে না সুন্দরবনের কোনো গাছপালা। তাই বন বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলেদেরকে সঙ্গে নিয়েই যেতে হচ্ছে প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী। জেলে-মহাজনদের ট্রলার তৈরি, মেরামত ও জাল তৈরিতে এখন ব্যস্ত বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কাঠমিস্ত্রিরাও। দুবলার এ মৌসুম ঘিরে কয়েক মাস আগেই বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা মিস্ত্রিরা চুক্তিভিত্তিক ট্রলার তৈরি, মেরামত ও জাল সেলাই করে যাচ্ছেন।

সব প্রস্তুতি শেষে বন বিভাগের কাছ থেকে পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে জেলেরা নিজ নিজ এলাকা থেকে রওনা হয়ে সরাসরি চলে যাচ্ছেন দুবলার চরে। মোংলা নদী ও পশুর নদে এসে জড়ো হওয়া পাইকগাছার জেলে বসন্ত কুমার মণ্ডল ও রামপালের জেলে মিকাইল শেখ বলেন, জাল, নৌকা, খাবারদাবারসহ ঘর বাঁধার সব সরঞ্জাম নিয়ে মোংলায় দুই দিন ধরে অবস্থান করছি। বন বিভাগের কাছ থেকে পাস নিয়ে গতকাল শনিবার দুবলার চরে রওনা হয়েছি। সেখানে পাঁচ মাস থেকে মাছ ধরে শুঁটকি তৈরি করব।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও জেলেরা যাতে সুন্দরবনের বনজ সম্পদ ধ্বংস করে থাকার ঘর নির্মাণ না করে, সে জন্য তাঁদের ঘর তৈরি করার সরঞ্জাম সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ বছরও চরে জেলেদের থাকা ও শুঁটকি সংরক্ষণের জন্য ১ হাজার ৩০টি জেলেঘর, ৬৩টি ডিপো ও ৯৬টি দোকানঘর স্থাপনের অনুমতি দিচ্ছে বন বিভাগ। গত অর্থবছরে শুঁটকির মৌসুমে দুবলার চর থেকে বন বিভাগের রাজস্ব আদায় হয়েছিল সাড়ে চার কোটি টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার পাঁচ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত