Ajker Patrika

প্রাণভয়ে এগিয়ে যাননি কেউ

আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২১, ১১: ১৪
প্রাণভয়ে এগিয়ে যাননি কেউ

কমলগঞ্জে চৈত্রঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসানকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা সরাসরি দেখেছেন অনেকে। এর মধ্যে তাঁর ছোট ভাই রাজেল আহমেদও ছিলেন। তবে প্রাণভয়ে কেউই এগিয়ে যাওয়ার সাহস পাননি।

এ বিষয়ে রাজেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ভাইকে দা দিয়ে কোপানোর সময় আমি দেখেছি। ভাইকে কুপিয়ে মেরেছে তাফাজ্জুল, তুফায়েল, বাবর, রাসেল ও মশুদ। ওই সময় আমি সামনে গেলে আমাকেও ওরা মেরে ফেলত।’

নাজমুলকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার চার দিন পার হয়েছে গতকাল বুধবার। ইতিমধ্যে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্বজনেরা এই হত্যাকাণ্ডের হোতা তাফাজ্জুলসহ জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছেন।

বাজারের ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, মামলার প্রধান আসামি তাফাজ্জুল দুবাই প্রবাসী। রহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদে নির্বাচন করতে তিনি দেশে এসেছেন। প্রার্থী হবেন বলে এলাকায় প্রচারও করেন। অন্যদিকে নাজমুলও ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে অংশ নেবেন বলে এলাকায় প্রচার করছিলেন। নির্বাচনী প্রচারের বিলবোর্ড নষ্ট করাকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল।

তবে এক সময় জুয়েল ও নাজমুলের মধ্যে ভালো সম্পর্ক ছিল। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন কেন্দ্র করে প্রায় দুই বছর আগে তাঁদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। এর জেরে প্রায় এক বছর আগে ব্যবসায়িক আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে নাজমুল লোকজন নিয়ে পিটিয়ে জুয়েলের একটি পা ভেঙে দেন। এরপর তাঁদের মধ্যে শত্রুতা আরও বেড়ে যায়। এই প্রেক্ষাপটেই নাজমুলকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

নাজমুলের বাবা লুকুস মিয়া বলেন, ‘আমার ছোট ছোট তিনটা নাতি এতিম হলো। তাদের এখন কে দেখবে! আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

এদিকে নাজমুলকে হত্যার ঘটনায় সিসিটিভির একটি ফুটেজ গত মঙ্গলবার ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ফুটেজটিতে দেখা গেছে, রোববার দুপুর দুইটার দিকে নাজমুল চৈত্রঘাট বাজারের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। এ সময় একটি কালো মাইক্রোবাস থেকে সাতজন নেমে অতর্কিতে রামদা দিয়ে তাঁকে কোপাতে থাকেন। একপর্যায়ে নাজমুল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে হামলাকারীরা চলে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা নাজমুলকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে নাজমুল ফেসবুক লাইভে ১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমার ওপর হামলাকারীরা তোফায়েল, রাসেল, মাসুদ ও তাফাজ্জুল। যদি বেঁচে ফিরি তাহলে আগামী ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে অংশ নেব। আর যদি মারা যাই, তাহলে এলাকাবাসী যেন আমার দুই ভাইয়ের মধ্যে যেকোনো একজনকে সদস্য পদে নির্বাচিত করেন।’ সেদিন সিলেটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় নাজমুলের ভাই শামসুল মিয়া বাদী হয়ে ঘটনার পর দিন ১৪ জনকে আসামি করে কমলগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত মঙ্গলবার সেই মাইক্রোবাসের চালক আমির হোসেন (৪০) ও জুয়েল মিয়া (৩৭) নামে এজাহারভুক্ত দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত