Ajker Patrika

দুর্গাপূজা হোক শঙ্কামুক্ত

সম্পাদকীয়
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২২, ১০: ২৬
দুর্গাপূজা হোক শঙ্কামুক্ত

হয় দুর্গতিনাশিনী, অসুরবিনাশিনী। দেবীর আরাধনা করলে জীবন থেকে সব ধরনের দুর্গতি বা দুঃখকষ্ট দূর হবে, শোক-তাপ, জ্বালাযন্ত্রণার অবসান হবে—এই বিশ্বাস থেকেই মন্দিরে মন্দিরে প্রতিমাকে নানা আনুষ্ঠানিকতায় পূজা করা একটি রীতিতে পরিণত হয়েছে। হিন্দুসম্প্রদায়ের মানুষ এই পূজা উপলক্ষে আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠেন এই কদিন। ছোট-বড় সবাই যার যার মতো করে আনন্দ ভাগাভাগি করতে কার্পণ্য করে না। নতুন জামাকাপড় উপহার পেয়ে ছোটরা বেশি খুশি থাকে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে পূজা উদ্‌যাপন করতে গিয়েও আনন্দের সঙ্গে ভাগ বসাতে আসে ভয় ও শঙ্কা। দেশে একদিকে হিন্দু জনসংখ্যা কমছে, কিন্তু অন্যদিকে বাড়ছে পূজামণ্ডপের সংখ্যাও। এবার সারা দেশে ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে পূজা উদ্‌যাপিত হবে। সরকারের পক্ষ থেকে পূজা পালনে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এ ছাড়া শিল্প বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও পূজা উদ্‌যাপনের জন্য বড় বড় মণ্ডপে অর্থসহায়তা দেওয়া হয়। ব্যক্তিগতভাবে চাঁদা তুলেও এখন নিভৃত পল্লিতেও পূজার আয়োজন করতে দেখা যায়।

তবে কয়েক বছর ধরে পূজা উদ্‌যাপনকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটছে; বিশেষ করে গত বছরের ১৩ অক্টোবর সকালে কুমিল্লা নগরের নানুয়াদিঘির উত্তরপাড়ে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দর্পণ সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত পূজামণ্ডপ থেকে পবিত্র কোরআন শরিফ উদ্ধার করা হয়। এরপর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দিনই নগরের চারটি মন্দির, সাতটি পূজামণ্ডপ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। কুমিল্লার ঘটনা আরও কয়েকটি জায়গায় সম্প্রসারিত হয়েছিল। ওই সব ঘটনায় বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু মামলা হলেও কোনো মামলারই তদন্তকাজ শেষ হয়নি। অপরাধীও চিহ্নিত হয়নি।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুসম্প্রদায়ের মন্দির, বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৩০টি হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। সে জন্য এবারের দুর্গাপূজা কতটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হবে, তা নিয়ে কারও কারও মনে কিছু সংশয় 
দেখা দিয়েছে।

কিন্তু এবার পূজার আগে, পরে ও পূজার দিন তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। দেশের সব পূজামণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং প্রবেশপথে মেটাল ডিটেক্টর ও আর্চওয়ে গেট স্থাপন করবে পুলিশ।

এদিকে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনের উদ্যোগে সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এসব সমাবেশে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকছেন।

সবার সক্রিয় সহযোগিতায় এবারের পূজা শঙ্কামুক্ত পরিবেশে সত্যিকার উৎসবে পরিণত হোক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়ানোর সহজ উপায় জানালেন বিজ্ঞানীরা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত