Ajker Patrika

লড়াইটা দুই ‘এলএম টেনে’র

উপল বড়ুয়া, ঢাকা
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১০: ৫২
লড়াইটা দুই ‘এলএম টেনে’র

ক্যারিয়ারের শুরু থেকে শিরোপার জন্য হোক বা সাফল্যের বিচারে–ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে আসছে লিওনেল মেসির। দুই মহাতারকার তুল্যমূল্যও তো আর কম হয়নি। তবে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের এবারের লড়াইটা লুকা মদরিচের সঙ্গে। আরেকভাবে বললে আজ লুসাইলে হবে দুই ‘এলএম টেনে’র যুদ্ধ।

নামের দুই আদ্যাক্ষরের মতো তাঁদের জার্সি নম্বরও ‘১০ ’। ক্লাব ক্যারিয়ারেও দীর্ঘ সময় ধরে চলেছে মেসি-মদরিচ লড়াই। দুই স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা বনাম রিয়াল মাদ্রিদের ‘এল ক্লাসিকো’তে মুখোমুখি হয়েছেন অনেকবার। ২০১২ সালে টটেনহাম ছেড়ে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে যোগ দেন মদরিচ।

আর গত বছর ক্যাম্প ন্যু ছেড়ে পিএসজিতে নাম লেখান মেসি। তার আগপর্যন্ত ৯ বছর স্প্যানিশ ফুটবলের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সময়ের এই দুই বড় তারকার সাক্ষাৎ ছিল নিয়মিত ঘটনা। 

তবে রোনালদো রিয়ালে খেলার সময় সেভাবে মেসি-মদরিচ লড়াই আলোচনায় আসেনি। কিন্তু এবার কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়ার সেমিফাইনালে সব চোখ তাঁদের দিকে। আজ রাতে লুসাইল স্টেডিয়ামে কার হৃদয়ভাঙা কান্নায় ভারী হবে কাতারের বাতাস? ‘অ্যাকিলিস’ হয়ে প্রতিশোধ নেবেন কে? আর কে দেশের সম্মান রক্ষার্থে ‘হেক্টর’ হয়ে বরণ করবেন বীরের মৃত্যু? 

গত প্রায় দুই দশকে ফুটবল মাঠে মেসি-মদরিচ যা করেছেন, তার কোনো তুলনা হয় না। দুজনের এটাই শেষ বিশ্বকাপ। দুজনের জীবনের মিলটাও বেশ লক্ষণীয়। আজকের অবস্থানে পৌঁছাতে দুজনকে পাড়ি দিতে হয়েছে অনেক প্রতিকূলতা। ক্লাব ক্যারিয়ারে দুজনে সম্ভাব্য সবই জিতেছেন। কিন্তু খুব কাছে গিয়েও বিশ্বকাপ জেতা হয়নি তাঁদের। ব্রাজিলে ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে ফাইনালে না হারলে অধরা স্বপ্নটা পূরণ হতো মেসির। চার বছর পর রাশিয়ায় মদরিচের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দেয় ফ্রান্স।

অথচ এই দুই বিশ্বকাপে বলতে গেলে একাই তাঁরা দলকে টেনেছেন। দুজনে সেই দুই আসরের সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন। এবারও আর্জেন্টিনাকে একাই টানছেন মেসি। ক্রোয়েশিয়াও তাকিয়ে মদরিচের দিকে। ৩৭ বছর বয়সে এসেও তিনি লড়ে যাচ্ছেন চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায়। ‘ক্রুইফ অব ক্রোয়েশিয়া’ নাম তো আর এমনি এমনি পাননি তিনি! কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারানোর পথে যেন ২০০৬ বিশ্বকাপের জিনেদিন জিদান হয়ে উঠেছিলেন এই মিডফিল্ডার। আর মেসি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন ১৯৮৬ ও ৯০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তোলার নায়ক ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে। 

২০০৮ থেকে ২০১৮—এক দশক ধরে চলা মেসি-রোনালদোর ব্যালন ডি’অর যুদ্ধে প্রথম ইতি টেনেছিলেন মদরিচ। ২০১৮ বিশ্বকাপে শিরোপা জিততে না পারলেও ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের এই পুরস্কার জিতেছিলেন ক্রোয়াট মিডফিল্ডার। সে বছর ফিফা ও উয়েফার বর্ষসেরাও নির্বাচিত হন মদরিচ। মেসির হাতে উঠেছে রেকর্ড ৭টি ব্যালন ডি’অর। ফিফা বর্ষসেরা হয়েছেন দুবার আর উয়েফার পুরস্কার উঠেছে ৩টি। ১০টি লা লিগার পাশাপাশি ৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ আছে তাঁর নামের পাশে। জাতীয় দলের হয়ে জিতেছেন কোপা আমেরিকা। মদরিচ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে জিততে পারেননি বড় কোনো শিরোপা। তবে রিয়ালের হয়ে জিতেছেন ৫টি চ্যাম্পিয়নস লিগ আর ৩টি লা লিগা। 

মেসি আজ শুধু ফাইনাল নিশ্চিত করতে খেলবেন না, এই ম্যাচ তাঁর জন্য প্রতিশোধেরও। রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে তাঁদের ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। সেই ম্যাচে একটি গোলও করেন মদরিচ। বোঝাপড়ার অভিযান এখানেই শেষ নয়, মদরিচের সঙ্গে শেষবারের দেখাতেও হারতে হয়েছিল মেসিকে। ২০২১-২২ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোয় তাঁর দল পিএসজি প্রথম লেগে জিতলেও মাদ্রিদে ৩-১ গোলে হারে মদরিচের রিয়ালের কাছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

১৯৪৭ থেকে ২০২৫: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ও ফলাফল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত