Ajker Patrika

কাজ রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা

মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
কাজ রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা

বরিশালের মুলাদী উপজেলার মুলাদী-মৃধারহাট সড়কের সংস্কারকাজ ফেলে পালিয়ে গেছেন ঠিকাদার। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রাস্তায় চলাচলকারী মানুষ। এদিকে সড়কটির পিচ উঠে খানাখন্দ হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। এতে সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে এবং সময় অপচয় হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তবে এলজিইডি থেকে বলা হয়েছে, ঠিকাদারকে চাপ দিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

জানা গেছে, এলজিইডির অর্থায়নে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সড়কটির সংস্কারকাজ শুরু হয়। ৩০ জুনের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা। চার মাস পার হয়ে গেলেও এখনো কাজ শেষ হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মুলাদী-মৃধারহাট সড়ক দিয়ে উপজেলার উত্তরাঞ্চলের গাছুয়া, চরকালেখান, বাটামারা, নাজিরপুর ও সফিপুর ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করে। এই সড়কের মুলাদী সিনেমা হল থেকে চরডিক্রী মাদ্রাসা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সংস্কার এবং প্রশস্ত করে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বাকি সাত কিলোমিটার সড়কে পিচ উঠে, ভেঙে দুরবস্থা সৃষ্টি হলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

চরকালেখান গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, মুলাদী থেকে মৃধারহাট, সফিপুর খেয়াঘাট, মাদ্রাসা বাজার, সোনামদ্দিন বন্দর, পদ্মার হাটসহ উত্তরাঞ্চলের সব স্থানে যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করতে হয়। প্রধান সড়কটি থেকে গাড়িগুলো শাখা সড়কে প্রবেশ করে। অনেক শাখা সড়ক একাধিকবার সংস্কার করা হলেও প্রধান সড়কটি অবহেলায় পড়ে রয়েছে। এতে কয়েক লাখ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

গাছুয়া ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম বলেন, এই সড়কের মাস্তান বাজার, বাঁশতলা মোড়, কলেজ গেট, রমজানপুর এলাকায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙা সড়কে ভ্যান, অটোরিকশা চলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বাড়বে।

চরকালেখান ইউনিয়নের বাসিন্দা রত্তন সরদার বলেন, মুলাদী থেকে চরডিক্রী মাদ্রাসা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক এক ধাপে সংস্কার করা হয়। আবার চরডিক্রী মাদ্রাসা থেকে মৃধারহাট পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়ক আরেক ধাপে সংস্কার করে এলজিইডি। দেড় বছর আগে মুলাদী সিনেমা হল বাসস্ট্যান্ড থেকে চরডিক্রী মাদ্রাসা পর্যন্ত পুনরায় সংস্কার করা হয়েছে। চরডিক্রী মাদ্রাসা থেকে মিয়ারহাট পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হয়। কিন্তু ঠিকাদার কাজ ফেলে চলে গেছেন। এতে দুর্ভোগ কমার বদলে উল্টো বেড়ে গেছে।

অটোরিকশাচালক ইকবাল হোসেন বলেন, মুলাদী থেকে মৃধারহাট পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার পথ যেতে ২০-২৫ মিনিট লাগার কথা। সড়কে খানাখন্দ হওয়ায় ৪০-৪৫ মিনিট সময় লাগে। ভাঙা সড়কে অটোরিকশা চালাতে গিয়ে অনেক সময় ভেঙে দুর্ঘটনার শিকার হয়। মাসের মধ্যে দু-তিনবার অটোরিকশা মেরামত করতে হয়।

এ বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

মুলাদী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. তানজিলুর রহমান বলেন, সড়কটির আড়াই কিলোমিটার সংস্কারকাজ চলমান আছে। ঠিকাদারকে চাপ দিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া চরডিক্রী মাদ্রাসা থেকে মৃধারহাট পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত করার জন্য বরিশাল বিভাগ সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সম্পূর্ণ সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত