Ajker Patrika

ওয়াগ্গাছড়ায় স্মৃতিস্তম্ভের দাবি

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
ওয়াগ্গাছড়ায় স্মৃতিস্তম্ভের দাবি

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৪১ বিজিবি ক্যাম্পের বিপরীত রাস্তা দিয়ে প্রায় ২০০ মিটার দূরে পাহাড়ের পাদদেশের জায়গাটির নাম ওয়াগ্গাছড়া। এক পাশে ওয়াগ্গাছড়া খাল; যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় হাজারের ওপর বাঙালিকে চন্দ্রঘোনা, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের এদেশীয় দোসররা ধরে নিয়ে এসে গুলি করে হত্যা করে।

এভাবে ঘটনার বর্ণনা দেন ওয়াগ্গাছড়ায় শহীদ পরিবারের সদস্য রাইখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা দীপক ভট্টাচার্য, মিলন কান্তি দে এবং গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ওয়াগ্গাছড়ার বাসিন্দা গৌরাঙ্গ মোহন বিশ্বাস।

তাঁদের বর্ণনা অনুযায়ী ওয়াগ্গাছড়া গণহত্যায় নলিনী রঞ্জন দে, নিকুঞ্জ বিহারী দে, রায় মোহন ঘোষ, পরান ভট্টাচার্য, বিজয় ভট্টাচার্য, রেবতি ভট্টাচার্য, সূর্য্য চন্দ্র দে ও পাইসু মারমা শহীদ হন। তাঁরা সবাই কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা। এ ছাড়া সুনীল কান্তি দে নামের রাইখালী ইউনিয়নের একজন সেদিন গুরুতর আহত হয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন। আট বছর আগে তিনি মারা যান।

এসব শহীদের পরিবারের সদস্যরা গত সোমবার ওয়াগ্গাছড়া এলাকায় একটি বধ্যভূমি চিহ্নিত করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ এবং রাইখালী এলাকায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি দাবিনামা উপস্থাপন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সোমবার ওই এলাকায় যান ইউএনও।

প্রত্যক্ষদর্শী গৌরাঙ্গ মোহন বিশ্বাস বলেন, যুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ছিল ১৫ বছর। তাঁর বাবা তৎকালীন রুহিনী মহাজনের ওয়াগ্গা চা-বাগানে চাকরি করতেন। যুদ্ধকালীন ওয়াগ্গাছড়ায় একটি পাকিস্তানি ক্যাম্প ছিল। পাকিস্তানি বাহিনী বিভিন্ন জায়গা থেকে বাঙালিদের ধরে এনে ক্যাম্পের পাশে ওয়াগ্গাছড়া খালের পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে লাথি মেরে খালে ফেলে দিত। আবার কিছু লোককে ক্যাম্পের পাশে পাহাড়ের খাদে নিয়ে তাঁদের দিয়ে গর্ত করে মেরে পুঁতে ফেলত।

ওয়াগ্গাছড়া গণহত্যার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী ওয়াগ্গাছড়ার বাসিন্দা ১০৮ বছর বয়সী সহদেব দে। অসুস্থতা ও বয়সের ভারে স্মৃতিশক্তি লোপ পেলেও তিনি বলেন, ‘আমি তখন ওয়াগ্গা চা-বাগানে চাকরি করতাম। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিভিন্ন জায়গা থেকে ধরে নিয়ে এসে এই ওয়াগ্গাছড়া খালের পাশে এনে গুলি করত বাঙালিদের।’

ইউএনও মুনতাসির জাহান বলেন, সোমবার সকালে শহীদ পরিবারের সন্তানেরা ওয়াগ্গাছড়ায় বধ্যভূমি চিহ্নিত করার দাবিতে একটা চিঠি দেন। সঙ্গে সঙ্গে তিন ওই এলাকায় যান। বিষয়টি কেউ আগে জানাননি। তবে প্রত্যক্ষদর্শী এবং গণ্যমান্য মুরব্বিদের সঙ্গে কথা বলে এই এলাকায় একটা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা যায় কি না, সে বিষয়ে চেষ্টা করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত