Ajker Patrika

টয়লেট

সম্পাদকীয়
টয়লেট

একটি বেসরকারি সংস্থার গবেষণায় আমাদের দেশের কিশোরীদের স্বাস্থ্যসমস্যাগুলো উঠে এসেছে। রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে কিশোর-কিশোরী ও মায়েদের প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক পলিসি কনফারেন্সে এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজের অনেক হ্যাপা পোহাতে হয় আমাদের দেশের নারীদের। ধর্মের নামেও অনেকে নারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়। ফলে যে সমাজে বাস করেন নারীরা, সেই সমাজ সব সময় তাঁদের জন্য সহজ ও নিরাপদ জীবনের প্রতিশ্রুতি দেয় না। ঘরে-বাইরে এই বিড়ম্বনা রয়েছে। গবেষণাটিতেও সেই বিড়ম্বনার কথাই উঠে এসেছে।

ঢাকা শহরের স্কুল-কলেজ বা সমমানের শিক্ষালয়ে পড়ুয়া কিশোরীদের ওপরই মূলত গবেষণাটি চলেছে। আমরা আমাদের আলোচনায় বুঝতে পারব, খোদ রাজধানীতে বসবাসরত কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবার যদি এই দৈন্য হয়, তাহলে ঢাকার বাইরের সিংহভাগ কিশোরী কী অবস্থায় দিন গুজরান করে।

শিক্ষালয়ের টয়লেটের দিকে নজর দিলে অনেক কিছুই পরিষ্কার হবে। হয়তো ইদানীং বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ওয়াশরুম-সংক্রান্ত জটিলতা কমেছে, কিন্তু সার্বিকভাবে সমস্যাটি ভয়াবহ। অথচ টয়লেটের পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে স্বাস্থ্য ভালো থাকার সম্পর্ক নিবিড়।

কিশোরীরা দিনের একটা বড় সময় কাটায় শিক্ষালয়ে। দেখা যায়, বিদ্যালয়ের স্যানিটেশন-ব্যবস্থা, পানির অপ্রতুলতার কারণে কিশোরীরা টয়লেট এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। প্রয়োজনের তুলনায় কম টয়লেট থাকাও সংকটের একটি কারণ। ফলে বিশাল একটা সময় টয়লেট ব্যবহার না করে তারা বাড়িতে এসে টয়লেটে যায়। এটা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।

প্রজননস্বাস্থ্য নিয়ে নবম-দশম শ্রেণির বইয়ে একটি অধ্যায় থাকলেও তা ঠিকভাবে পড়ানোর ক্ষেত্রে গাফিলতি রয়েছে। শিক্ষকেরা নাকি এ অধ্যায়টি পড়ানোয় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। এ এক মহা সমস্যা। স্বাস্থ্য কোনো ট্যাবু নয়। স্বাস্থ্যসচেতন থাকার বিকল্প কিছু নেই।

স্যানিটারি প্যাড কেনাটাও একসময় কিশোরীদের জন্য ছিল লজ্জার কারণ। রাজধানীর ফার্মেসিগুলোয় এখন মনে হয় প্যাড কিনতে গেলে সমস্যা হয় না। কিন্তু এই একই কথা ঢাকার বাইরের সব অঞ্চল সম্পর্কে বলা যায় না। পিরিয়ড বিষয়টিকে লজ্জার ব্যাপার বলে মনে করে গোপন করার প্রবণতা এখনো দেখা যায়। অথচ এটা নিতান্তই একটি শারীরিক ব্যাপার। এ ব্যাপারে খোলাখুলি কথা বলাটাই সংগত। 
স্যানিটেশনের কথা বলতে গেলে শুধু স্কুল-কলেজের টয়লেটের দিকে চোখ রাখলেই হবে না। দূর-ভ্রমণে পথের ধারে যে রেস্তোরাঁগুলোয় বাহন থামে, সেখানকার টয়লেটও হতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত। দেখা যায় পর্যাপ্ত পানির অভাব, টয়লেট পেপার না থাকা সেই সব হোটেল-রেস্তোরাঁর একটা স্বাভাবিক রোগ। আর কে না জানে, যৌন রোগের বেশির ভাগই ছড়ায় টয়লেট থেকে।

কিশোরীদের কথা বলা হলো। কিশোররাও কিন্তু একই সমস্যার ভেতর দিয়ে যায়। পুরুষদের টয়লেটগুলোর আরও করুণ দশা।

বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে। স্কুল-কলেজে, শপিং মলে, রেস্তোরাঁয় স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট থাকা জরুরি, এ কথা যত তাড়াতাড়ি হৃদয়ঙ্গম করা যাবে, ততই মঙ্গল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের খোঁজ মিলছে না

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নতুন বেতন নির্ধারণে কমিটি

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

৫ দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণে অর্থায়ন নিয়ে শঙ্কা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত