Ajker Patrika

রাবার বাগানে ব্যস্ত শ্রমিক

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫: ৫১
রাবার বাগানে ব্যস্ত শ্রমিক

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার চারটি রাবার বাগানে এখন সাদা রস সংগ্রহে ব্যস্ত শ্রমিকেরা। বাগানের ১০ লাখ ২৫ হাজার গাছ থেকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রস সংগ্রহ করছেন তাঁরা।

বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফআইডিসি) বাগানগুলোর তত্ত্বাবধান করছে। বাগানগুলো হলো দাঁতমারা, তারাখোঁ, রাঙামাটিয়া এবং কাঞ্চননগর রাবার বাগান।

জানা গেছে, চারটি বাগানে এক হাজার ২০০ জন শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে স্থায়ী শ্রমিক (টেপার) ৩০০ জন। তাঁরা মাসিক বেতন পান ১০ হাজার টাকা। বাকিরা কাজ করেন অস্থায়ী হিসেবে।

সরেজমিনে তারাখোঁ রাবার বাগানে দেখা গেছে, বাগানের হাজারো গাছে ঝুলছে ছোট ছোট মাটির পাত্র। গাছ থেকে সাদা রঙের রস (স্থানীয় ভাষায় কষ) পড়ছে এসব পাত্রে। শ্রমিকেরা গাড়িতে তুলছেন এসব পাত্রের রস।

বাগানের শ্রমিকেরা বলেন, কাঁচা রস বালতিতে ভরে প্রথমে কারখানায় সরবরাহ করা হয়। সেখানে রসের সঙ্গে পানি ও অ্যাসিড মিশিয়ে নির্ধারিত স্টিলের ফ্রেমে জমা রাখা হয়। এরপর রোলার মেশিনের মাধ্যমে রস থেকে পানি বের করে শেডে শুকানো হয়। পরে নির্ধারিত কক্ষে সেগুলো আগুনে পোড়ানো হয়। ওই প্রক্রিয়া শেষে রাবার বস্তাভর্তি করে গুদামজাত করেন তাঁরা।

রাবার শ্রমিকদের নেতা মুহাম্মদ নুরুল কবির বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে একজন শ্রমিক ৩৫ থেকে ৪০ কেজি রস সংগ্রহ করতে পারেন। প্রতি কেজি রস সংগ্রহের জন্য তাঁরা সাত টাকা এবং ফেব্রুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত নয় টাকা করে পারিশ্রমিক পান। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রস সংগ্রহের উপযুক্ত মৌসুম।’

বাগানের উৎপাদন কারখানার তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার হাজার কেজি রাবারের রস উৎপাদন হয়। সারা বছর রাবার উৎপাদন চলে। তবে বর্ষায় রস আহরণ কিছুটা কমে যায়। এতে উৎপাদনও কমে যায়। মূলত শীত মৌসুমে গাছ থেকে বেশি রস পাওয়া যায়।’

রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে রাবারের চাহিদা বাড়ায় কয়েক বছরে দামও বেড়েছে। গত বছর প্রতি কেজি রাবার বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায়। এসব রাবার দিয়ে জুতা, ফুটবল, টায়ার-টিউব, গাড়ির যন্ত্রাংশ, ওষুধ, ব্যাগ, বেল্ট তৈরি হয়।

তারাখোঁ রাবার বাগানের ব্যবস্থাপক মো. মকবুল আহম্মদ বলেন, ‘বর্তমানে দুই হাজার ৪৩৬ একর আয়তনের বাগানে এক লাখ ১৭ হাজার উৎপাদনশীল গাছ রয়েছে। আগামী বছরের জুলাই মাসে আরও ৫০ একর জায়গায় ১২ হাজার ৫০০ নতুন গাছ লাগানো হবে।’

দাঁতমারা রাবার বাগানের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলার চারটি বাগানে প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার কেজি রস উৎপাদন হয়। আগের তুলনায় উৎপাদন বেড়েছে। দর যদি আরও ভালো হতো, তাহলে লাভের অংশটা রেকর্ড ছাড়িয়ে যেত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত