Ajker Patrika

ডিএসসিসির মশা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প

আবির হাকিম, ঢাকা
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ১৮: ২২
ডিএসসিসির মশা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প

ফগার মেশিনের বিকট শব্দ। চারপাশে ধোঁয়া উৎপাদনে কোনো কমতি নেই। তবু মশা নিধনের যুদ্ধে এভাবে ঠিক পেরে ওঠা যাচ্ছিল না। মশার উপদ্রব থেকে রেহাই পাননি নগরবাসী। একসময় নতুন নতুন উপায় খুঁজতে থাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। লার্ভা নষ্ট করতে শেষমেশ গত বছরের মার্চে পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকার জলাশয়গুলোতে ১৫ হাজার ব্যাঙাচি ছাড়ে। তবে সেই পরীক্ষার ফলও এখনো পাওয়া যায়নি। এমনকি ব্যাঙগুলো বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে, তা-ও জানেন না প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কেউ।

ব্যাঙের আগে নগরের বিভিন্ন ড্রেনে গাপ্পি মাছ ছেড়ে, ঝিলে হাঁস ও তেলাপিয়া মাছ ছেড়েও মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। তাতেও কোনো লাভ হয়নি। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। মশকনিধনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা না নিয়ে মানুষের ভোগান্তি বাড়লে শেষ মুহূর্তে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা কোনো কাজে আসে না। মশকনিধনের এসব উদ্যোগকে লোক দেখানো হিসেবেও অভিহিত করছেন অনেকে। ব্যাঙ-ছাড়া কার্যক্রম ব্যর্থ হওয়া প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যখন এ প্রকল্প নেওয়া হয়, তখনই আমরা বলেছিলাম পৃথিবীর কোনো দেশে ব্যাঙ দিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণে সফলতার নজির নেই। ঢাকার জলাশয়ের দূষিত পানিতে ব্যাঙ বাঁচবে কি না, সেটা নিয়েও সন্দেহ ছিল। এখন এমন আশঙ্কাই সত্যি হলো।’

গত বছরের মার্চে ঝিল, লেক, পুকুর ও জলাশয়ে কয়েক হাজার ব্যাঙ ছাড়ে ডিএসসিসি। এসব ব্যাঙ মশার লার্ভা নিধনে সক্ষম বলেও দাবি করা হয়। কিন্তু সরেজমিন রমনা কালীমন্দিরের পুকুর, আজিমপুর সরকারি কলোনির দুটি পুকুর এবং আরামবাগের এজিবি কলোনির ডোবায় গিয়ে এসব ব্যাঙের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এর আগে ২০১৮ সালে এডিস ও কিউলেক্স মশা নিধনে নগরের বিভিন্ন ড্রেনে গাপ্পি মাছ অবমুক্ত করা হয়। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই সব মাছ মারা যায়। এ নিয়ে তখন ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছিল। ২০২০ সালে মশার লার্ভা ধ্বংসে রমনা পার্ক লেকে হাঁস, আর খিলগাঁও বটতলা ঝিলে হাঁস এবং তেলাপিয়া মাছ অবমুক্ত করা হয়। কিন্তু কয়েক মাসের মাথায় বেশির ভাগ হাঁসই চুরি হয়ে যায়, আর কিছু মারা যায়।

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘হাঁস ও ব্যাঙ দিয়ে কখনো মশা নিয়ন্ত্রণ হয়নি, হবেও না। হাঁস ও ব্যাঙের খাবার অন্য কিছু। আর হ্যাঁ, সুন্দরবন বা কক্সবাজারের ব্যাঙ ঢাকায় ছাড়া হলেও সেগুলো বাঁচবে না।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, ‘আমরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাঙের পোনা সংগ্রহ করেছিলাম। কিছু ব্যাঙাচি আমদানিও করা হয়েছিল। আশা করেছিলাম পোনা পূর্ণাঙ্গ ব্যাঙে রূপান্তরিত হয়ে মশার লার্ভা খেয়ে ফেলবে। পরীক্ষাটি সফল হয়নি, আমরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত