Ajker Patrika

খালেদ চৌধুরী

সম্পাদকীয়
খালেদ চৌধুরী

খালেদ চৌধুরী একই সঙ্গে ছিলেন গায়ক, সুরকার, রাজনৈতিক কর্মী, অভিনেতা, নাট্য নির্দেশক, প্রাবন্ধিক, প্রচ্ছদশিল্পী ও নাট্যকর্মী। তবে তিনি বিশেষজ্ঞ ছিলেন নাটকের মঞ্চসজ্জা ও পোশাক প্রস্তুতের ক্ষেত্রে। পরে তিনি সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন।

খালেদ চৌধুরীর জন্ম আসামের করিমগঞ্জে, ১৯১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর। তাঁর ঠাকুমার ভাই ছিলেন ব্রতচারী নৃত্যের গুরু গুরুসদয় দত্ত।তিনি খালেদের নাম রেখেছিলেন চিরকুমার। কিন্তু তাঁর বাবা নাম রাখেন চিররঞ্জন দত্ত চৌধুরী। তাঁর যখন ৯ বছর, তখন খালেদের মা মারা যান। বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো ছিল না। সে কারণে অসংখ্যবার বাড়ি থেকে পালিয়েছেন।

শেষবার ১৭ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রথমে সিলেটে, তারপর কলকাতায় স্থিত হন। আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। খালেদ নামটি তাঁর নিজের দেওয়া। বাড়ি থেকে পালিয়ে সিলেটে যে মুসলমান পরিবারে তিনি আশ্রয় পেয়েছিলেন, সেখানে থাকার সময়েই তিনি এ নাম রাখেন।

ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকার নেশা ছিল। সেই ছবি আঁকাই হয়ে ওঠে তাঁর পেট চালানোর একমাত্র অবলম্বন। সাইনবোর্ড লিখে সামান্য আয় দিয়ে চলতেন। কমিউনিস্ট পার্টির ভারতীয় গণনাট্য সংঘে যুক্ত ছিলেন। বন্ধুত্ব হয় হেমাঙ্গ বিশ্বাস, কলিম শরাফীর সঙ্গে। এই সময়েই তিনি তাঁর জীবনের প্রথম প্রচ্ছদচিত্রটি এঁকেছিলেন। পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন ১০ টাকা। এরপর তিনি গোটা জীবনে এঁকেছেন ১৫ হাজারের বেশি প্রচ্ছদ।

১৯৫৪ সালের ১০ মে বহুরূপী নাট্যদলের এবং শম্ভু মিত্রের পরিচালনায় মঞ্চস্থ হয় ‘রক্তকরবী’। এই নাটকের মঞ্চসজ্জা এবং আবহসংগীতে খালেদ চৌধুরী তাঁর দক্ষতার প্রমাণ দেন। এরপর তাঁকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

এরপর প্রায় ১০৬টি নাটকে কাজ করেছেন তিনি। তাঁর মঞ্চ ব্যবস্থাপনায় এবং আবহসংগীতে উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো ‘ডাকঘর’, ‘পুতুল খেলা’, ‘পাগলা ঘোড়া’, ‘এবং ইন্দ্রজিৎ’, ‘কালের যাত্রা’। ২০০৪ সালে রঙ্গকর্মীর ‘বদনাম মান্টো’ নাটকে মঞ্চ নির্দেশনার অর্ধশতাব্দী পূরণ হয় তাঁর। সেরা এই মঞ্চ নির্দেশক ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল প্রয়াত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত