Ajker Patrika

বিলীনের শঙ্কায় ১৫ বসতবাড়ি

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ)
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২২, ০৮: ১৩
বিলীনের শঙ্কায় ১৫ বসতবাড়ি

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ধলেশ্বরী নদীর তীব্র স্রোতে ১৫ বসতবাড়ি ও দুটি বিদ্যুতের খুঁটি ভাঙনের মুখে পড়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে আরও প্রায় ৫০টি বাড়ি। আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে ভাঙনকবলিত পরিবারগুলো। অনেক পরিবার তড়িঘড়ি করে ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।

গত বুধবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের ধলেশ্বরী নদীর পানির তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় তুলসীখালী ব্রিজসংলগ্ন এলাকা থেকে গোয়ালখালী ও ডাকেরহাটি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে ফসলি জমি, বসতবাড়ি, দুটি ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের খুঁটি। প্রশাসন কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ভাঙন কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না। তাই গ্রামবাসী নদীর ভাঙন রোধে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানা যায়, গত বছরে প্রায় ৫০টির বেশি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালে তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে গেছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

ক্ষতিগ্রস্ত ডাকেরহাটি গ্রামের বাসিন্দা মোকসেদ খান বলেন, ‘আমার ৩৪ শতাংশ জমির ৩১ শতাংশই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি যতটুকুও রয়েছে, এই বর্ষায় থাকবে না মনে হচ্ছে। আমাদের দেখার কেউ নেই। দুই বছর ধরে নদীভাঙন হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের কেউ একবার দেখতেও এলেন না।’

ডাকেরহাটি গ্রামের আরেকজন বাসিন্দা মো. ইকবাল খান বলেন, ‘আমাদের গ্রামের মোনায়েম খান একজন প্রতিবন্ধী। তাঁর বাবার রেখে যাওয়া বসতবাড়িটি ভাঙনের মুখে পড়েছে। তাঁর আর কোনো সম্পদ নেই। এখন যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে তাঁর বাড়িটি নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে তিনি সর্বস্বান্ত হয়ে যাবেন।’

আরেকজন বাসিন্দা সফর আলী বলেন, ‘নদীতে স্রোত বাড়ায় ভাঙনের মুখে পড়েছি আমরা। বসতভিটাসহ সবই নদীতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিছুক্ষণ পরপর পাড় ভেঙে পড়ছে।’

গৃহিণী রাজন বেগম বলেন, ‘এখনো বর্ষা মৌসুম শুরু হয়নি। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে নদীভাঙনের তীব্রতা। গত বছরও প্রশাসনের লোকজন এসে দেখে গেছেন, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেননি। এবার শুরু হয়ে গেছে ভাঙন। কিন্তু এবারও কোনো পদক্ষেপ কি তাঁরা নেবেন না।’

চিত্রকোট ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য (মেম্বার) শহীদুল খান বলেন, ‘গত বছর বহু মানুষের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এবার পানি বাড়তে শুরু করেছে। অনেক মানুষের বাড়িঘর ভাঙনের মুখে। গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন দেখে মেপে গেছে। পরে আর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। চেয়ারম্যানসহ আমরা অনেককে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে, তাই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরিফুল আলম তানভীর বলেন, ‘আমি এ উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আপনার মাধ্যমে জানলাম, তবে সরেজমিন দেখে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মুন্সিগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ধলেশ্বরীর তীরে বেশ কয়েকটি স্থানে নদীভাঙনের তথ্য রয়েছে। এবারও আমরা নদীভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেব। আমাদের তথ্যমতে, চারটি স্থান রয়েছে, যেখানে ভাঙন জুন মাসের দিকে দেখা দেয়। আমরা জরুরি তৎপরতার অংশ হিসেবে জিআই ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করি। তবে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা পেলেই আমরা কাজ শুরু করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত