Ajker Patrika

হাটের বাড়তি খাজনা না দেওয়ায় কৃষককে মারধর

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২২, ১৪: ০৮
হাটের বাড়তি খাজনা না দেওয়ায় কৃষককে মারধর

মিষ্টি লাউ নিয়ে বাজারে আসেন কৃষক জাহিদুল ইসলাম। বিক্রি করেন ৪৮টি। তবে বের হওয়ার সময় তাঁর কাছে হাটের ইজারাদার পল্টু হোসেন ১০০টি মিষ্টি লাউ বিক্রির হিসাবে অতিরিক্ত খাজনা চান। তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পল্টু মারধর করেন তাঁকে। একপর্যায়ে তাঁর মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌরসভার কলেজ বাজার হাটের দুই নম্বর কলেজ গেট এলাকায়।

পল্টু স্বীকার করেন কৃষক জাহিদুল ইসলামকে মারধর করেছেন। তিনি ভুল বুঝতে পেরে জাহিদুল ইসলামকে মোবাইল ফোন কিনে দিয়েছেন। এদিকে হাটে সরকারি খাজনার তালিকা টাঙানো না থাকায় ইজারাদারেরা দীর্ঘদিন ধরে বাড়তি টাকা নিয়ে আসছিলেন। এ জন্য কৃষকদের দাবি হাটে সরকারি খাজনার তালিকা দ্রুত টাঙানো হোক।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আক্কেলপুর পৌর সদরের কলেজ বাজার হাটে সরকার-নির্ধারিত খাজনার চেয়ে বেশি ক্রেতা-বিক্রেতার কাছ থেকে আদায় করে আসছিল হাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। কেউ বাড়তি টাকা না দিতে চাইলে তাঁকে মারধরসহ হুমকি দেওয়া হতো।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সকালে উপজেলার রাজকান্দা গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম ৫৫টি মিষ্টি লাউ বিক্রি করতে আসেন হাটে। তাঁর ৫৫টি মিষ্টি লাউয়ের মধ্যে ৪৮টি বিক্রি করা হয় ৬০ টাকা দরে। বিক্রি শেষে হাট থেকে যাওয়ার সময় ইজারাদারের লোকজন জাহিদুলের কাছে খাজনার টাকা দাবি করেন। তখন কৃষক জাহিদুল ৪৮টি মিষ্টি লাউয়ের ৪৮ টাকা খাজনা দিতে রাজি হন। কিন্তু ইজারাদার পল্টু জাহিদুলের কাছ থেকে ১০০টি মিষ্টি লাউ হিসাব করে আরও অতিরিক্ত ৫২ টাকা খাজনা দাবি করেন। তিনি ওই ৫২ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে মারধরসহ মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলেন।

কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘বাজারে প্রতি মণ মুখিকচু বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা করে। সেখানে ইজারাদারকেই দিতে হচ্ছে ৪০ টাকা। আর টাকা না দিতে চাইলে আমাদের ঘারপাকি দেওয়া হয়। তাহলে আমরা কৃষকেরা কোথায় যাব।’

কাপড় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, হাটের কোথাও সরকারি খাজনা তালিকা টাঙানো নেই। ইজারাদারের লোকজন ইচ্ছেমতো মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন।

এ বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম বাবলু বলেন, ইজারাদার পল্টু হোসেন খাজনার টাকা না দেওয়ায় এক কৃষককে চড় মেরেছেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে দুই দফায় সালিস বৈঠক বসিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন।

আক্কেলপুর পৌর সদরের কলেজ বাজার হাট ইজারাদার পল্টু হোসেন বলেন, ‘লোকটির সঙ্গে কথা-কাটাকাটি একপর্যায়ে তাঁকে একটি চড় মেরেছি। যা আমি ঠিক করিনি। পরে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়েছি। তাঁর ভেঙে যাওয়া মোবাইল ফোনের বদলে নতুন একটি ফোন কিনে দিয়েছি।’

আক্কেলপুর পৌরসভার মেয়র শহিদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আজকের (বৃহস্পতিবার) পর থেকে এই হাটে সরকার-নির্ধারিত বেশি টাকা যাতে না নেওয়া হয়, সে বিষয়টি দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত