মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
মুসলিম বিশ্বে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমাকে হজের পর সবচেয়ে বড় গণজমায়েত বিবেচনা করা হয়। তাবলিগ জামাতের বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন এটি। এখান থেকেই ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ইসলাম প্রচারে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েন তাবলিগের সাথিরা। ৫৬ বছর ধরে বাংলাদেশে আয়োজিত হয়ে আসা বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের আবেগের সঙ্গে মিশে আছে। তাবলিগ জামাত ও বিশ্ব ইজতেমার ইতিহাস সংক্ষেপে তুলে ধরেছেন মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ।
১০০ বছরের দ্বারপ্রান্তে তাবলিগ জামাত
তিন বছর পরেই তাবলিগ জামাত প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্ণ হবে। ১৯২৬ সালে এই জামাত আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলেও এর প্রস্তুতি চলছিল ১৯২৪ সাল থেকেই। এটি মূলত ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী দেওবন্দ আন্দোলনেরই একটি আত্মশুদ্ধিমূলক ধারা। ১৮৮৫ সালে ব্রিটিশ ভারতের মোজাফফরনগর জেলায় জন্ম নেওয়া মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভী এই ধারার প্রতিষ্ঠাতা।
মাওলানা ইলিয়াস উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর মাজাহেরুল উলুম মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন এবং সাহারানপুরের বাংলাওয়ালি মসজিদে ওয়াজ-নসিহত করতেন। সেখানে পাশের মেওয়াত নামক গ্রাম থেকে লোকজন আসত। তাদের অনুরোধে তিনি মেওয়াত যান এবং সেখানে কয়েক শ মক্তব প্রতিষ্ঠা করেন। তখন তিনি অনুভব করলেন, মক্তবগুলোতে সীমিতসংখ্যক মুসলমান ইসলামের শিক্ষা নিচ্ছে, এর বাইরে বিপুলসংখ্যক মুসলমান ধর্মের মৌলিক জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই তাদের জন্য তিনি ইসলাম প্রচারের এমন এক পদ্ধতির কথা ভেবেছেন, যার মাধ্যমে প্রতিটি মুসলমানের কাছে ইসলামের বার্তা পৌঁছে যাবে এবং তারা নিজেদের শুদ্ধ করতে পারবে।
এমন চিন্তা থেকেই তিনি দীর্ঘ ১৮ বছর পরিশ্রম করে মূলত তাবলিগ জামাতকে বিশ্বব্যাপী সফল দাওয়াতি মিশন হিসেবে দাঁড় করাতে সক্ষম হন। পিউ রিসার্চ সেন্টারের অনুমান অনুসারে, ১৫০টিরও বেশি দেশে প্রায় ৮ কোটি তাবলিগ জামাতের অনুসারী রয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়ায় বাস করেন।
মাওলানা ইলিয়াসের এই দাওয়াতি মিশন সম্পর্কে ইসলামি চিন্তাবিদ আবুল হাসান আলি নদভি বলেন, ‘দরবেশ আলেম ইলিয়াস শুধু মেওয়াতেই নন, পুরো বিশ্বে এক শুদ্ধবাদী বিপ্লবের সূচনা করেছেন, যার নজির ইসলামের ইতিহাসে বিরল।’ (বায়োগ্রাফি অব মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস)
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা
প্রতিষ্ঠার পরপরই উপমহাদেশের সাধারণ মুসলমানদের আস্থা কুড়াতে সক্ষম হয় তাবলিগ জামাত। ফলে ভারতবর্ষের তৎকালীন বাংলা অঞ্চলেও এই দাওয়াতি মিশন ছড়িয়ে পড়ে। ইজতেমা তাবলিগ জামাতের গণজমায়েত কর্মসূচি। ইজতেমায় তাবলিগের মুরব্বিদের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যের পর দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের দাওয়াতের জন্য পাঠানো হয়।
গত শতকের পঞ্চাশের দশকের শুরুতেই বাংলাদেশে পুরোদমে তাবলিগ জামাতের কাজ শুরু হয়। মাওলানা আবদুল আজিজের তত্ত্বাবধানে ঢাকার রমনা পার্কসংলগ্ন কাকরাইল মসজিদে ১৯৪৬ সালে বাংলাদেশে তাবলিগের প্রথম ইজতেমা আয়োজিত হয়। এরপর চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আঞ্চলিক ইজতেমা আয়োজিত হয়। এরপর ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বড় পরিসরে ইজতেমা আয়োজিত হয়। সেবার বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকেও মুসল্লিরা ইজতেমায় যোগ দিয়েছিলেন বলে তা ‘বিশ্ব ইজতেমা’য় পরিণত হয়।
এরপর থেকে প্রতি বছর তুরাগ নদীর উত্তর-পূর্ব তীরসংলগ্ন ১৬০ একরের এই বিশাল মাঠে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের শতাধিক দেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ নেন।
বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশে কেন? এ ব্যাপারে বিশ্লেষকদের বিভিন্ন মন্তব্য পাওয়া যায়। কেউ বলেন, এটা লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়েছে। আবার কেউ বলেন, অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের ভিসাপ্রক্রিয়া সহজ তাই বাংলাদেশে ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক ড. আবদুর রশিদ বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা মূলত সুন্নি মুসলমানদের সমাবেশ। ভারত ও পাকিস্তানে মাঝেমধ্যে শিয়া-সুন্নি দাঙ্গা বাধে, কিন্তু বাংলাদেশে তা নেই। তাই বাংলাদেশকেই ‘বিশ্ব ইজতেমা’র আয়োজক দেশ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।’
মুসলিম বিশ্বে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমাকে হজের পর সবচেয়ে বড় গণজমায়েত বিবেচনা করা হয়। তাবলিগ জামাতের বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন এটি। এখান থেকেই ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ইসলাম প্রচারে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েন তাবলিগের সাথিরা। ৫৬ বছর ধরে বাংলাদেশে আয়োজিত হয়ে আসা বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের আবেগের সঙ্গে মিশে আছে। তাবলিগ জামাত ও বিশ্ব ইজতেমার ইতিহাস সংক্ষেপে তুলে ধরেছেন মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ।
১০০ বছরের দ্বারপ্রান্তে তাবলিগ জামাত
তিন বছর পরেই তাবলিগ জামাত প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্ণ হবে। ১৯২৬ সালে এই জামাত আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলেও এর প্রস্তুতি চলছিল ১৯২৪ সাল থেকেই। এটি মূলত ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী দেওবন্দ আন্দোলনেরই একটি আত্মশুদ্ধিমূলক ধারা। ১৮৮৫ সালে ব্রিটিশ ভারতের মোজাফফরনগর জেলায় জন্ম নেওয়া মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভী এই ধারার প্রতিষ্ঠাতা।
মাওলানা ইলিয়াস উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর মাজাহেরুল উলুম মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন এবং সাহারানপুরের বাংলাওয়ালি মসজিদে ওয়াজ-নসিহত করতেন। সেখানে পাশের মেওয়াত নামক গ্রাম থেকে লোকজন আসত। তাদের অনুরোধে তিনি মেওয়াত যান এবং সেখানে কয়েক শ মক্তব প্রতিষ্ঠা করেন। তখন তিনি অনুভব করলেন, মক্তবগুলোতে সীমিতসংখ্যক মুসলমান ইসলামের শিক্ষা নিচ্ছে, এর বাইরে বিপুলসংখ্যক মুসলমান ধর্মের মৌলিক জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই তাদের জন্য তিনি ইসলাম প্রচারের এমন এক পদ্ধতির কথা ভেবেছেন, যার মাধ্যমে প্রতিটি মুসলমানের কাছে ইসলামের বার্তা পৌঁছে যাবে এবং তারা নিজেদের শুদ্ধ করতে পারবে।
এমন চিন্তা থেকেই তিনি দীর্ঘ ১৮ বছর পরিশ্রম করে মূলত তাবলিগ জামাতকে বিশ্বব্যাপী সফল দাওয়াতি মিশন হিসেবে দাঁড় করাতে সক্ষম হন। পিউ রিসার্চ সেন্টারের অনুমান অনুসারে, ১৫০টিরও বেশি দেশে প্রায় ৮ কোটি তাবলিগ জামাতের অনুসারী রয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়ায় বাস করেন।
মাওলানা ইলিয়াসের এই দাওয়াতি মিশন সম্পর্কে ইসলামি চিন্তাবিদ আবুল হাসান আলি নদভি বলেন, ‘দরবেশ আলেম ইলিয়াস শুধু মেওয়াতেই নন, পুরো বিশ্বে এক শুদ্ধবাদী বিপ্লবের সূচনা করেছেন, যার নজির ইসলামের ইতিহাসে বিরল।’ (বায়োগ্রাফি অব মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস)
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা
প্রতিষ্ঠার পরপরই উপমহাদেশের সাধারণ মুসলমানদের আস্থা কুড়াতে সক্ষম হয় তাবলিগ জামাত। ফলে ভারতবর্ষের তৎকালীন বাংলা অঞ্চলেও এই দাওয়াতি মিশন ছড়িয়ে পড়ে। ইজতেমা তাবলিগ জামাতের গণজমায়েত কর্মসূচি। ইজতেমায় তাবলিগের মুরব্বিদের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যের পর দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের দাওয়াতের জন্য পাঠানো হয়।
গত শতকের পঞ্চাশের দশকের শুরুতেই বাংলাদেশে পুরোদমে তাবলিগ জামাতের কাজ শুরু হয়। মাওলানা আবদুল আজিজের তত্ত্বাবধানে ঢাকার রমনা পার্কসংলগ্ন কাকরাইল মসজিদে ১৯৪৬ সালে বাংলাদেশে তাবলিগের প্রথম ইজতেমা আয়োজিত হয়। এরপর চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আঞ্চলিক ইজতেমা আয়োজিত হয়। এরপর ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বড় পরিসরে ইজতেমা আয়োজিত হয়। সেবার বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকেও মুসল্লিরা ইজতেমায় যোগ দিয়েছিলেন বলে তা ‘বিশ্ব ইজতেমা’য় পরিণত হয়।
এরপর থেকে প্রতি বছর তুরাগ নদীর উত্তর-পূর্ব তীরসংলগ্ন ১৬০ একরের এই বিশাল মাঠে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের শতাধিক দেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ নেন।
বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশে কেন? এ ব্যাপারে বিশ্লেষকদের বিভিন্ন মন্তব্য পাওয়া যায়। কেউ বলেন, এটা লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়েছে। আবার কেউ বলেন, অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের ভিসাপ্রক্রিয়া সহজ তাই বাংলাদেশে ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক ড. আবদুর রশিদ বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা মূলত সুন্নি মুসলমানদের সমাবেশ। ভারত ও পাকিস্তানে মাঝেমধ্যে শিয়া-সুন্নি দাঙ্গা বাধে, কিন্তু বাংলাদেশে তা নেই। তাই বাংলাদেশকেই ‘বিশ্ব ইজতেমা’র আয়োজক দেশ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।’
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১১ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫