Ajker Patrika

মন কেড়েছে পটোল মিষ্টি

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা 
মন কেড়েছে পটোল মিষ্টি

খাদ্যরসিকদের কাছে গাইবান্ধার পরিচিতি ঘন দুধে তৈরি রসমালাইয়ের জন্য। এবার তাকে টেক্কা দিতে এসেছে পটোল মিষ্টি! পটোল দিয়ে তৈরি হওয়ায় অন্যান্য মিষ্টির চেয়ে এর স্বাদ আলাদা। এই ভিন্নধর্মী স্বাদই ভোজনরসিকদের মন কেড়েছে।

গাইবান্ধা শহর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে সাদুল্যাপুর উপজেলা। সেখান থেকে ১ কিলোমিটার দূরে পীরগঞ্জ সড়কে হাতের ডান পাশে শেখ দই ঘর নামের মিষ্টির দোকান। এখানে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু পটোল মিষ্টি। এর প্রতিটির দাম আকারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। প্রতি কেজি ৬০০ টাকা। শেখ দই ঘর কর্তৃপক্ষের দাবি, বাংলাদেশে এই প্রথম পটোল দিয়ে মিষ্টি তৈরি করেছেন তাঁরা।

এর রেসিপি বেশ সহজ। প্রথমে পরিষ্কার করে পটোলের খোসা ছাড়িয়ে মাঝ বরাবর চিরে ভেতর থেকে বিচিগুলো বের করতে হয়। তারপর সেগুলো সেদ্ধ করে চিনির শিরায় ডুবিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর তুলে রস ঝরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর পটোলের পেটে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় দুধের ক্ষীর, ভাজা মাওয়া, গাওয়া ঘি, কাজুবাদাম, কাঠবাদামসহ সাত ধরনের উপকরণ। অভিনব এই মিষ্টিতে পটোল ও ক্ষীর—এ দুটির স্বাদ পাওয়া যায় একই সঙ্গে। নতুনত্ব থাকায় মিষ্টিপ্রেমীদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে এটি।

গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জ থেকে ৫২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পরিবারসহ পটোল মিষ্টির স্বাদ নিতে শেখ দই ঘরে এসেছিলেন শিমুল মিয়া। তিনি জানালেন, এ মিষ্টির স্বাদ একদম অন্য রকম। তাঁর স্ত্রী সাথি বেগম জানান, এত দূর এসে মিষ্টি খাওয়ার পর যাত্রাপথের কষ্ট ভুলে গেছেন তিনি। আর গাইবান্ধা শহর থেকে আসা হাফিজ মিয়া জানান, পটোল দিয়ে মিষ্টি তৈরি হতে পারে, তা না খেলে বিশ্বাস করতেন না তিনি।

শেখ দই ঘরের স্বত্বাধিকারী মো. জরিপ শেখ। একসময় দারিদ্র্যের মধ্যে কেটেছে তাঁর জীবন। ২০০২ সালের দিকে ভাই মোস্তফা শেখের সঙ্গে বিভিন্ন গ্রাম থেকে দুধ কিনে বিক্রি শুরু করেন তিনি। প্রায় ১০ বছর সেই ব্যবসা করেন দুই ভাই। ২০১২ সালের দিকে পীরগঞ্জ রোডে ‘শেখ দই ঘর’ নামে একটি মিষ্টির দোকান দেন তাঁরা। প্রচার না থাকায় প্রথম দিকে হিমশিম খেতে হয়েছে তাঁকে। তারপরেও দই ও মিষ্টির গুণগত মানে কোনো ছাড় দেননি তিনি। ফলে দ্রুতই ক্রেতাদের সন্তুষ্টি অর্জন করেন। তারপর থেকে এলাকার বিয়েবাড়িসহ সব ধরনের অনুষ্ঠানে শেখ দই ঘরের দই ও মিষ্টির চাহিদা বেড়ে যায়।

মাসখানেক আগে জরিপ শেখ হঠাৎ ভাবতে শুরু করেন পটোল মিষ্টি তৈরি বিষয়ে। তিনি কারিগরদের ডেকে সাত পদের উপাদান দিয়ে পটোল মিষ্টি তৈরির প্রাথমিক রেসিপি বলেন। প্রথমে কারিগরেরা সেই মিষ্টি বানানোর আগ্রহ দেখাননি। পরে নিজেই কারখানায় পটোল মিষ্টি তৈরির কাজ শুরু করেন। দুদিনের মধ্যে জরিপ শেখ পটোল দিয়ে মিষ্টি তৈরিতে সফল হন। আর এখন নেট দুনিয়ার ভাইরাল খবর তাঁর পটোল মিষ্টি।

শেখ দই ঘরে পটোল মিষ্টি ছাড়াও তৈরি হয় হাঁড়িভাঙা মিষ্টি, কাটারীভোগ মিষ্টি, গাজরের সন্দেশ, সাদা সন্দেশ, খেজুর গুড়ের সন্দেশ, চমচম, কালোজাম, দই, ক্ষীরের সন্দেশ, ক্ষীরসার দইসহ বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত