Ajker Patrika

এক ভাঁড় রস ২০০ টাকা

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৪৬
এক ভাঁড় রস ২০০ টাকা

কোনো এক সময় যশোরের অভয়নগর উপজেলার গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে সারি সারি খেজুরগাছ চোখে পড়ত। গাছ কেটে রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করতেন গাছিরা। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে যশোরের যশ খ্যাত খেজুরের রস। এখন আর রাস্তার দুই পাশে সারি সারি চোখে পড়ে না অভয়নগরের অধিকাংশ এলাকায়। যে কারণে বেড়েছে রসের দাম। বর্তমানে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এক ভাঁড় খেজুরের রস।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরের দেখা যায়, ২০০ টাকায় এক ভাঁড় ও প্রতি গ্লাস রস ১০ টাকায় বিক্রি করছেন গাছিরা।

নগরায়ণের ফলে এবং গাছিদের সংকটের কারণে খেজুরগাছের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে, অভিমত স্থানীয়দের। ফলে তুলনামূলকভাবে প্রতি বছরই রসের দাম বাড়ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, গত পাঁচ বছর আগেও অভয়নগরে ৬০ হাজার খেজুরগাছ ছিল। এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে খেজুরের রস ও গুড়ের দাম বেড়ে গেছে।

পায়রা ইউনিয়নের বারান্দি গ্রামের গাছি মো. শামিম গাজী বলেন, ‘আমাদের গ্রামটি ভবদহ অঞ্চলে হওয়ায় বছরজুড়ে থাকে জলাবদ্ধতা। খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরিতে রয়েছে জ্বালানি সংকট। এ দুই কারণে আমাদের গ্রামের অধিকাংশ খেজুরগাছ বিক্রি করে দিয়েছেন মালিকেরা।’

গাছি মো. শামিম গাজী বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় বেড়েছে রসের দাম। মাটির ঠিলার দামও বেড়েছে। এক সময় ১০ টাকায় এক ভাঁড় রস বিক্রি করেছি। বর্তমানে এক ভাঁড় রস ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করেও সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।’

একই বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিভিন্ন বাজারে রস বিক্রি করতে আসা গাছিরা। উপজেলার নওয়াপাড়া বাজারের রস ক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, ‘গত বছর ১৫০ টাকায় এক ভাঁড় খেজুরের রস কিনেছি। কিন্তু এ বছর সেই রস কিনতে হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।’

উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান বলেন, ‘যশোরের যশ, খেজুরের রস’ এই প্রবাদের সঙ্গে বাস্তবতার খুব একটা মিল নেই। শীত মৌসুমে খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে নানা ধরনের পিঠা-পায়েস তৈরি হতো। নানা প্রতিকূলতার কারণে গ্রামীণ এ ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে খেজুরগাছ রোপণ, গাছিদের প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।’

উপজেলা বন কর্মকর্তা সমীরণ বিশ্বাস বলেন, ‘যে পরিমাণ খেজুরগাছ কাটা পড়ছে, সেই পরিমাণ রোপণ করা হয়নি। যে কারণে রস ও গুড়ের দাম বেড়ে যাচ্ছে।’

অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম ছামদানী বলেন, ‘খেজুরগাছ সংরক্ষণের অভাবে বিলুপ্ত হতে চলেছে। পাঁচ বছর আগেও অভয়নগরে প্রায় ৬০ হাজার খেজুরগাছ ছিল। অবাধ নিধনের কারণে এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এ ছাড়া রস থেকে গুড় তৈরিতে রয়েছে জ্বালানি সংকট ও গাছির অভাব। ফলে চাহিদার তুলনায় বেড়েছে রস ও গুড়ের দাম।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আবেদন, শুনানি রোববার

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত