Ajker Patrika

রাস্তার জায়গা না ছাড়ায় অবরুদ্ধ চার পরিবার

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ জুন ২০২২, ১২: ৩২
রাস্তার জায়গা না ছাড়ায়  অবরুদ্ধ চার পরিবার

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চার পরিবারকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন রাস্তা প্রশস্ত করতে মধ্যভাগ গ্রামে বাস করা ওই পরিবারগুলোর সদস্যদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে ৯ জুন থেকে নিজ নিজ বাড়িতেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে পরিবারগুলো।

জানা গেছে, গ্রামের কৃষক ইসমাইল শেখ, তাঁর প্রতিবেশী মো. নবীর উদ্দিন সরকার, রাশেদুল ইসলাম ও রাজু সরকারের বাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জানানোর পর হুমকি পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েক মাস আগে থেকে স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও প্রভাবশালীরা ব্যক্তিমালিকানা রাস্তা প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেয়। রাস্তার দক্ষিণ দিকে আবাদি জমি ও জলাশয় থাকলেও উত্তর দিকের বসতবাড়ি থেকে তাঁরা জায়গা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু বাড়ির মালিকেরা এতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় মাতব্বর হাফিজুর রহমানের লোকজন তাঁদের বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছেন না।

এক ভুক্তভোগী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘৯ জুন সকালে মাতব্বর হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে ৩৫-৪৫ জন আমার বাড়ি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয়। তারা আমাদের বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করেছে। কথা না শুনলে পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন।’

রাশেদুল ইসলাম আরও বলেন, গত রোববার সুঘাট ইউপির চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মেম্বার তাঁদের লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। এ সময় ভুক্তভোগীরা অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি তা না করে প্রয়োজনে বাড়ি ভেঙে রাস্তার জায়গা দিতে বলেন।

আরেক বাসিন্দা মো. নবীর উদ্দিন সরকার বলেন, ‘চেয়ারম্যানের কথামতো ৪ হাজার টাকা খরচ করে সোমবার আমার ঘর স্থানান্তর করায় অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে।’

আরেক ভুক্তভোগী শিউলি বেগম বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ঘর সরিয়ে নতুন করে করার ক্ষমতা নেই। চেয়ারম্যান-মেম্বারও তাঁদের সঙ্গে। তাই থানায় অভিযোগ করার সাহস পাচ্ছি না।’

এদিকে, টাকা দেওয়ার শর্তে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে রেহাই পেয়েছেন হায়দার আলী। তিনি বলেন, ‘হাফিজুর রহমান ২০ হাজার টাকা দাবি করলে রাজি হই। তাই বাড়ির সামনে বেড়া দেওয়া হয়নি।’

বেড়া দেওয়ার কথা স্বীকার করে মাতব্বর হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানের রাস্তাটি আমার জায়গা। এটা প্রশস্ত করার জন্য যাঁরা জায়গা দিচ্ছেন না, তাঁদের এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে দেব না। ইতিমধ্যে যাঁরা ঘর ভেঙে জায়গা দিয়েছেন তাঁদের অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে।’

তবে এই ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন সুঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জিন্নাহ। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অবরোধ তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এটা কোনো সরকারি রাস্তা নয়। গ্রামের লোকজন জায়গা দিলে রাস্তা করে দেওয়া হবে। তাঁরা সহযোগিতা না করলে আমার কিছু করার নেই।’

ইউএনও মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, এভাবে কাউকে অবরুদ্ধ করে রাখা বেআইনি। ঘটনাটি তদন্ত করে সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত