Ajker Patrika

লাভের আশায় আলু রেখে এখন লোকসানের বোঝা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
লাভের আশায় আলু রেখে এখন লোকসানের বোঝা

লাভের আশায় হিমাগারে আলু রেখেছিলেন কৃষকেরা। ব্যবসায়ীরাও মজুত করেছেন বিপুল পরিমাণ আলু। আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে হিমাগার থেকে আলু বের করে নিতে হবে তাদের। কিন্তু এখন বাজারে আলুর দাম নেই। উৎপাদন বা কেনা মূল্য এবং হিমাগার খরচ হিসাব করলে বর্তমান বাজারদরে কেজিপ্রতি তিন থেকে চার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। আর যাঁরা জমি লিজ নিয়ে আলু চাষ করেছেন, তাঁদের লোকসান হচ্ছে আরও বেশি, কেজিতে ছয় থেকে সাত টাকা পর্যন্ত।

রাজশাহী হিমাগার মালিক সমিতি জানিয়েছে, জেলায় মোট হিমাগার আছে ৩৬টি। এসব হিমাগারে প্রায় ৮২ লাখ বস্তা আলু রাখা যায়। বস্তায় আলু রাখা যায় ৬৫ কেজি। মোট আলুর পরিমাণ হয় চার লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। আলুর মৌসুম শেষেই হিমাগারগুলো ভরে ওঠে।  

এবার মাসখানেক আগে থেকে আলু বের করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তবে এখনো প্রায় ৭০ ভাগ আলু মজুত রয়েছে। সে হিসাবে প্রায় তিন লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন আলু মজুত আছে। এসব আলু বের করে নিতে হবে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে। আগের বছরগুলোতে এই সময়ে আলুর দাম ভালো থাকলেও এবার চিত্র ভিন্ন। তাই আলু বেচে লাভ করতে পারছেন না চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন বাজারে খুচরায় কেজি প্রতি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ২৬ টাকা দরে। পাইকারিতে আলু বিক্রি হয় ১৮ থেকে ১৯ টাকা দরে। এই দরে এখন আলু বিক্রি করলে বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা লোকসান হবে। ভবিষ্যতে বাজার আরও খারাপ হতে পারে ভেবে এই লোকসান মেনে অনেকেই এখন আলু বিক্রি করছেন।

কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁরা বলেন, নিজের জমিতে আলু উৎপাদনে কেজিপ্রতি খরচ হয়েছে ১৩ থেকে ১৪ টাকা। পরিবহন ও হিমাগারে আলু সংরক্ষণে কেজিপ্রতি অতিরিক্ত খরচ হয়েছে আরও সাত থেকে আট টাকা। এখন হিমাগারের গেটে পাইকারিতে আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮ টাকা থেকে ১৯ টাকা দরে। এতে কেজিতে তিন থেকে চার টাকা লোকসান হচ্ছে তাঁদের।

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার খাঁড়ইল গ্রামের আলুচাষি মতিউর রহমান বলেন, জমি লিজ নিয়ে আলু চাষ করায় গত মৌসুমে তাঁর আলুর উৎপাদন খরচ বেশি হয়েছে, কেজিতে ১৭ টাকা। তাঁর মতো যাঁরা জমি লিজ নিয়ে আলু চাষ করেছেন, কেজিতে তাঁদের লোকসান হচ্ছে ছয় থেকে সাত টাকা পর্যন্ত।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে কার্ডিনাল, ডায়মন্ড ও অ্যাস্টেরিক জাতের আলু বেশি চাষ হয়। মার্চ মাসের দিকে জমি থেকে যখন আলু তোলা হয় তখন ভালো দাম থাকে না। তাই হিমাগারে সংরক্ষণ করা হয়। এরপর সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে আলু বের করা হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, বাজারে অন্য সবজির দাম ভালো। শুধু আলুর দামটাই একটু কম। এখন আলু হিমাগার থেকে বের করলে লোকসান হচ্ছে। তবে আরও এক মাস সময় আছে হাতে। শেষদিকে দাম একটু বাড়তে পারে।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু বকর বলেন, আলু বিক্রির সময়টা নির্দিষ্ট। এই সময় বড় পাইকারি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ফেলেন। তাঁরা দাম বাড়ান না। আলুর বাজার ব্যবস্থাপনাটাই ঠিক নেই। চাষিরা এ কারণেই লোকসানে পড়ছেন। কৃষকের এ সমস্যা সমাধানে সরকারের নজর দেওয়া উচিত।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সমঝোতায় এক দিনে ১০০ ডলার কমল সোনার দাম

যুদ্ধ বলিউডের সিনেমা নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত