Ajker Patrika

শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৫১
শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ

যশোরে শৈত্যপ্রবাহের কারণে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত রোগব্যাধি বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গতকাল বৃহস্পতিবার যশোর সদর হাসপাতালে ৩৫ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে ৪৬ জন ভর্তি থাকার তথ্য দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতালে নেবুলাইজার সংকটের কারণে শ্বাসকষ্টে ভোগা শিশুদের নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন অভিভাবকেরা।

শিশু ওয়ার্ডের ১৪টি নেবুলাইজারের মধ্যে ৬টিই নষ্ট। প্রায় অর্ধেক নেবুলাইজার নষ্ট থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত নার্সদের। নেবুলাইজার পাওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও সময় মতো পাওয়া যায় না বলে জানান শিশু রোগীদের অভিভাবকেরা।

তবে সমস্যা সমাধানে নেবুলাইজারের ব্যবস্থা করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গত বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থেকেও ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। সে সময় থেকেই যশোরে এখনো মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। এর বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই জেলায় তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে অবস্থান করছিল। শীতের শুরুতে তাপমাত্রার পরিবর্তনে জ্বর, কাশি, সর্দি, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি বাড়তে থাকে।

যশোর সদর হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গত ৬ দিনে শিশু ওয়ার্ডে ৮০ রোগী ভর্তি হয়। বৃহস্পতিবার ভর্তি ছিল ৪৬ শিশু। এই ছয় দিনে বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছে ৬৪৭ শিশু। এসব শিশুর একটি বড় অংশই ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু বায়েজীদের মা হাসিনা বেগম জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে তাঁর সন্তান ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছিল। পরে ৫ দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। অবস্থা খারাপ হওয়ায় শিশুকে প্রতিদিন কয়েক দফায় নেবুলাইজার দিতে হয়। কিন্তু প্রয়োজন মতো ঠিক সময়ে নেবুলাইজার পাওয়া যায় না।

আরেক অভিভাবক শাহানারা বেগম বলেন, ‘দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় নেবুলাইজারের জন্য। এতে অনেক সময় শিশুর হাঁপানি উঠে যায়। বারবার বললেও কোনো কাজ হয় না। কেননা, আমার মতো অনেকেরই অবস্থা এমন থাকে।’

রোজিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘শিশুর নেবুলাইজারের প্রয়োজন হলেও সময় মতো পাওয়া যায় না। যাদের প্রভাব আছে, তাঁরা আগে দিয়ে নেন। আমরা সমস্যায় পড়লেও তাঁদের কারণে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। সবগুলো নেবুলাইজার ঠিক থাকলে হয়তো এ সমস্যা হতো না। তাহলে আমরা সাধারণ মানুষেরাও একটু স্বস্তি পেতাম।’

যশোর সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে কর্তব্যরত জ্যেষ্ঠ নার্স জোসনা পারভীন বলেন, ‘রোগীর চাপ কম থাকলে ৮টি নেবুলাইজার দিয়েই মোটামুটি কাজ চালানো যায়। কিন্তু এখন শীতকাল। ফলে মাঝে মাঝে রোগীর চাপ খুব বেড়ে যায়। বিশেষ করে শৈত্যপ্রবাহ চললে পরিস্থিতি অনেকটা নাজুক হয়ে পড়ে। এ সময়ে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। সবগুলো নেবুলাইজার সচল থাকলে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ সহজ হতো।’

যশোর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আখতারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নষ্ট নেবুলাইজারের বিষয়টি আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। হাসপাতাল ও আবহাওয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে ইতিমধ্যে চাহিদাপত্রও দেওয়া হয়েছে। নতুন নেবুলাইজার মেশিন পাঠালে বা নষ্টগুলো সংস্কার করা হলে সমস্যা আর থাকবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

বিড়াল নির্যাতনের ঘটনায় গ্রামীণফোন ও অ্যারিস্টোফার্মা কেন আলোচনায়

বাগ্‌বিতণ্ডার মধ্যে সাম্যকে ইট ও ধারালো অস্ত্রের আঘাত করা হয়: ডিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত