Ajker Patrika

দুদকের অভিযানে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
দুদকের অভিযানে তোলপাড়

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে  অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঘণ্টাব্যাপী এই অভিযানে তোলপাড় সৃষ্টি হয় পাশাপাশি দুটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে।

সরকারি দায়িত্ব পালনে অবহেলা, ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী নিয়ে ব্যস্ত থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে দুদক এই অভিযান চালিয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযানকালে দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ। এদিকে বরিশাল মেডিকেল কলেজে দুদকের অভিযান এবং অধ্যক্ষের সঙ্গে অসদাচরণের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষক এবং মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি দিয়েছে চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। গতকাল দুপুরে বিএমএ’র জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।  

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল সোয়া ৯টা থেকে সোয়া ১০টা পর্যন্ত দুদক বরিশাল কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাজকুমার সাহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে পৃথক অভিযান চালায়। চিকিৎসকদের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে ভুক্তভোগীরা সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দেন। এর প্রেক্ষিতে গতকাল প্রথমে হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে দুদকের একটি দল। পরে মেডিকেল কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষ অধ্যাপক মনিরুজ্জামান শাহিনের কক্ষে গিয়ে তাঁকে পাননি দুদকের দল। এমনকি শিক্ষকতায় নিয়োজিত চিকিৎসকসহ কলেজের স্টাফদেরও পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে ছুটে আসেন অধ্যক্ষ।

দুদক সদস্যরা অধ্যক্ষের কাছে চিকিৎসকদের এক সপ্তাহের বায়োমেট্রিক হাজিরার তালিকা দেখতে চান। তা দিতে অস্বীকৃতি জানান অধ্যক্ষ। এ নিয়ে দুদক সদস্যদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন অধ্যক্ষ। সকাল সোয়া ১০টার দিকে চিকিৎসকেরা এসে অধ্যক্ষের কক্ষে বায়োমেট্রিক হাজিরা দিতে শুরু করেন। ততক্ষণে গোটা মেডিকেল কলেজে হইচই পড়ে যায়।

হাসপাতাল এবং কলেজে হঠাৎ এমন অভিযান প্রসঙ্গে দুদকের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে বরিশাল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অভিযোগ করেন, দুদকের দলটি কক্ষে ঢুকে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। তিনি জেনেছেন, দুদকের কেউ ডাক্তার দেখাতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে। এ জন্য তাঁরা এসেছেন চিকিৎসকেরা কখন আসেন তা দেখার জন্য। দুদক টিম বায়োমেট্রিক হাজিরার তালিকা চাইলেও স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের অনুমতি ছাড়া সেগুলো দেওয়া হয়নি।

অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান চিকিৎসকদের বিলম্বে আসার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘তা ঠিক আছে। আবার অনেক সময় চিকিৎসকেরা দেরিতে এসে দায়িত্ব পালন করে পাঁচটার সময়ও যান; তা কিন্তু কেউ বলেন না।’ সরকারি দায়িত্বে অবহেলা করে ব্যক্তিগত চেম্বারে সময় দেওয়া প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বলেন, ‘সরকার থেকে ব্যক্তিগত চেম্বার করা যাবে না এমন কোনো নির্দেশনা আছে বলে জানা নেই। যদি থাকে তা হলে চিকিৎসকেরা ব্যক্তিগত চেম্বার করবেন না।’

এর আগে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন দুদকের টিম। তাঁরা বিভিন্ন বহির্বিভাগ পরিদর্শন শেষে হাসপাতাল পরিচালকের কার্যালয়ে যান। সেখানে অনেক নার্স এবং স্টাফকে তখন তাঁরা পাননি।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, ‘বরিশাল মেডিকেলের চিকিৎসকেরা বরাবরই হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন না। হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তো আসেনই না। মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরাও অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের পান না। এ অবস্থায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এ ধরনের অভিযানকে বরিশালবাসী সাধুবাদ জানাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত