Ajker Patrika

সেঞ্চুরিয়নই সাহস দিচ্ছে বাংলাদেশকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২২, ১৫: ৪৪
সেঞ্চুরিয়নই সাহস দিচ্ছে বাংলাদেশকে

ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে যদি প্রশ্ন রাখা হতো, ১–১ সমীকরণের পর তৃতীয় ম্যাচে কি সিরিজ জয়ের সুযোগ থাকবে বাংলাদেশের? উত্তরটা মোটেও সহজ হতো না বাংলাদেশ-সমর্থকদের। তখন অনেকে হয়তো চোখ বুজে ‘না’ ঘরের পাশেই টিক চিহ্ন দিতেন।

এখন চিত্রটা ভিন্ন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। আজ সেঞ্চুরিয়নে নতুন এই সুখকর ভাবনা নিয়ে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নামার অপেক্ষায় তামিমরা। এ মাঠেই প্রথম ওয়ানডে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় স্বপ্নের দুয়ারটা খুলেছে বাংলাদেশের। তবে সর্বশেষ ম্যাচে জোহানেসবার্গে তামিমদের মুদ্রার উল্টো পিঠটাও দেখিয়ে দিয়েছেন কাগিসো রাবাদারা।

বাংলাদেশের ব্যাটারদের অস্বস্তি বুঝে লাগাতার বাউন্সারে কাবু করেছেন প্রোটিয়া বোলাররা। যদিও বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম যুক্তি দেখিয়েছেন, তাঁরা আসলে পরাস্ত অসম বাউন্সে।

গতকাল দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা মেহেদী হাসান মিরাজ আরও যুক্তি দিয়ে বললেন, ‘আমরা শর্ট বলে দুর্বল, তা নয়। যখন উইকেটে অসম বাউন্স থাকেন, তখন বিভ্রান্ত হতে হয়। একই লেংথ থেকে উঠে আসা বল যদি বাউন্সার হয়, পরেরটি নিচু হয়, তখন আসলে দ্বিধায় পড়ে যেতে হয়।’

উইকেটে বাউন্স যেমনই থাক, ঘটনা হচ্ছে, বাংলাদেশ ম্যাচটা বাজেভাবে হেরেছে। আজ শেষ ম্যাচের আগে পাওয়া দুই দিনে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠার সময় পেয়েছে বাংলাদেশ। এ সময়ে তবে কতটা হারের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা গেল, সেই সংশয় থেকেই যাচ্ছে। গত দুই দিনে যে বেশ ঝক্কি-ঝামেলার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে দলকে।

দেশে পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতা, ক্ষণে ক্ষণে উৎকণ্ঠার মাঝে দেশে ফেরা না ফেরা নিয়ে সাকিবকে নিয়ে অনিশ্চয়তা। সেটার রেশ না কাটতেই তাসকিন আহমেদের আইপিএলে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে আরেক আলোচনা। তবে আশার ব্যাপার হচ্ছে, শঙ্কা-সংশয় দূরে ঠেলে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন করেছে ফুরফুরে দল। তামিমদের এ ছবি অনেকটা গতকালের সেঞ্চুরিয়নের ঝকঝকে আকাশের মতোই।

জোহানেসবার্গ রাবাদা-এনগিডিদের বাউন্সের সামনে ব্যাটাররা যেভাবে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন, সেঞ্চুরিয়নের উইকেট নিয়ে তাই জল্পনা থাকাটা স্বাভাবিক। তবে উইকেট নিয়ে কিছুটা আশ্বস্ত করেছেন হাবিবুল, ‘উইকেট খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। আশা করছি, ওয়ান্ডারার্সের চেয়ে এখানে (সেঞ্চুরিয়ন) ভালো উইকেট হবে।’

আশ্বস্তের উল্টো পিঠে ভয়ও থাকছে। উপমহাদেশের ব্যাটাররা দক্ষিণ আফ্রিকা-নিউজিল্যান্ডে বাউন্সের সামনে অস্তিত্বসংকটে ভোগেন, দেশের বাইরে নিয়মিত না খেলা বাংলাদেশের ব্যাটারদের জন্য তো আরও কঠিন। কতটা কঠিন, সেঞ্চুরিয়নে না পারলেও জোহানেসবার্গে সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রোটিয়া পেসাররা। ‘সামর্থ্য অনুযায়ী আপনার কৌশলের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারেন। উপমহাদেশের দলগুলো আমাদের মতো বাউন্সের সঙ্গে সেভাবে মানিয়ে নিতে পারে না। ঘরের মাঠে আমরা আমাদের শক্তি কাজে লাগানোর চেষ্টা করি, যেটা আমরা জানি যে আমরা কাজে লাগাতে পারি’—হুংকার না হলেও রাবাদার কথাগুলো কিন্তু বাংলাদেশের জন্য ভয়ের নামান্তর।

তবে বাংলাদেশকে সাহস দিচ্ছে সুপারস্পোর্ট পার্কের পরিসংখ্যান। আগে ব্যাটিং করে ৩০০-এর ওপরে রান করে ১২ বারের মধ্যে এখানে হারের ঘটনা মাত্র দুবার। প্রথম ম্যাচে সেটার প্রমাণও পেয়েছে বাংলাদেশ। জয়ের অভিজ্ঞতা যেহেতু হয়ে গেছে, আজ নির্ভার মনে খেলাটাই হতে পারে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের সবচেয়ে বড় টোটকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত