Ajker Patrika

ডিমে জরিমানা

সম্পাদকীয়
ডিমে জরিমানা

চালের দামের অস্বাভাবিকতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের কয়েক দিনের মধ্যেই ডিমবিষয়ক দুটি মামলার রায় দেওয়া হলো ২২ জানুয়ারি। রায় দেখে মনে হলো, আশার জায়গা এখনো বোধ হয় খানিকটা আছে। বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন বা বিসিসি এদিন এ ব্যাপারে চূড়ান্ত রায় দিয়েছে। ডিমের দাম বাড়ানোর সঙ্গে জড়িত থাকায় দুটি কোম্পানিকে এখন নগদ সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা গুনতে হবে।

স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ২০২২ সালে পোলট্রি ফার্ম ও পোলট্রি-সংশ্লিষ্ট সংগঠনের বিরুদ্ধে ডিমের দাম অস্বাভাবিক বাড়ানোর অভিযোগে মামলা করা হয়েছিল। সে রকম দুটি মামলার রায় হয়েছে ২২ জানুয়ারি। জরিমানার টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তা আদায়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে কথাও রয়েছে মামলার রায়ে। অন্য মামলাগুলোর রায়ও সামনে আসবে।

২০২৩ সালের বাজারও ছিল অস্থিতিশীল। চাহিদা-জোগানের চিরাচরিত নিয়ম মেনে চলেনি বাজার। একদিকে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফার লোভ, অন্যদিকে সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা দেখেছে দেশবাসী। যাঁরা দাম বাড়িয়েছেন, যাঁরা সাধারণ মানুষের জীবনকে চরম বিপদে ফেলেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকি তখনকার মন্ত্রীও এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যাতে মনে হয়েছে সিন্ডিকেটের হাত এত বেশি লম্বা যে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন।

ফলে সবকিছু নিয়তির ওপর ছেড়ে দিতে হবে কি না, সেটা নিয়েই ভেবেছে মানুষ এবং হতাশ হয়েছে। মনে করিয়ে দিই, এই সময়টায় কোনো কার্যকারণ ছাড়াই ডিম, পেঁয়াজ, আলু, গরুর মাংসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। আরবীয় ঘোড়ার বেগে ধাবমান অস্বাভাবিক দামের লাগাম টেনে ধরার কোনো লক্ষণও দেখা যায়নি। আশাহত মানুষ হাল ছেড়ে দিয়েছিল বললে খুব একটা ভুল বলা হবে না। এ সময় ডিমের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলার কুশীলবদের বিরুদ্ধে কোটি টাকার জরিমানা সিন্ডিকেট ব্যবসা ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একটি বড় পদক্ষেপ বললে বাড়িয়ে বলা হবে না।

আমরা লক্ষ করেছি, নির্বাচনের কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই গরুর মাংসের কেজি ৮০০ থেকে নেমে ৬৫০ টাকা হয়েছিল। যাঁরা বহুদিন গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন, তাঁরাও আবার নতুন করে গরুর মাংস কিনতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের রেশ কাটার আগেই গরুর মাংসের দাম ৭০০ টাকা হয়ে গেছে এবং ৬৫০ টাকা হওয়ার পর যেভাবে মাংসের সঙ্গে আলাদা চর্বি দেওয়া শুরু হয়েছিল, সেটাও বহাল আছে। ফলে, গরুর মাংসের ক্ষেত্রে ‘যেই লাউ সেই কদু’ই যেন বহাল থাকল।

আশঙ্কার এই জায়গাটাকেও আমরা ভুলতে চাই না। ডিমের দাম নিয়ে কারসাজি করা ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি এখন গরুর মাংস, পেঁয়াজ, আলুসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া সিন্ডিকেটগুলোর গলায়ও আইনের ফাঁস পরানো জরুরি। প্রধানমন্ত্রী যখন চালের দামের অস্বাভাবিকতার কারণ চিহ্নিত করেছেন, তখন অন্য পণ্য বা খাদ্যসামগ্রীর দামের বিষয়টিও নিশ্চয়ই তাঁর দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। আমরা আশা করব, বাজারে ‘জাদুমন্ত্র’ করে যাঁরা পণ্যদ্রব্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেন, একে একে তাঁদের সবাইকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত