Ajker Patrika

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ১২
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার নেই। সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ২৭১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৩৯টিতেই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। পুরো উপজেলার মাত্র ৩২টি প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় শহীদ মিনার রয়েছে। ২১টি মাধ্যমিক, তিনটি উচ্চ মাধ্যমিক ও দুটি কামিল মাদ্রাসার একটিতেও শহীদ মিনার নেই। এ কারণে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব হচ্ছে না।

উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ উপজেলায় ১২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র পাঁচটিতে শহীদ মিনার রয়েছে। ৬৪টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (কিন্ডারগার্টেন) চালু থাকলেও একটিতেও শহীদ মিনার নেই। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে ৫৫টি। এগুলোর মাত্র ২৩টিতে শহীদ মিনার রয়েছে। মাধ্যমিক সমমানের ২১টি দাখিল মাদ্রাসার কোনোটিতেই শহীদ মিনার নেই।

রায়পুর সরকারি কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে। অন্য চারটি বেসরকারি কলেজের মধ্যে তিনটিতে থাকলেও নেই রুস্তম আলী ডিগ্রি কলেজে। রায়পুর কামিল মাদ্রাসা (আলিয়া) ও হায়দরগঞ্জ টিআরএম কামিল (আলিয়া) মাদ্রাসায়ও শহীদ মিনার নেই। একই চিত্র অন্য পাঁচটি ডিগ্রি সমমানের ফাজিল মাদ্রাসায়।

রায়পুর পাইলট বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মোতালেব বলেন, ‘জমি ও প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে আমরা শহীদ মিনার নির্মাণ করতে পারিনি। এ জন্য উপজেলা সদরের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাই। এবার শহীদ মিনার না থাকা প্রতিষ্ঠানের তালিকা চাওয়া হলে আমাদের বিদ্যালয়ের নাম তালিকাভুক্ত করে দিয়েছি।’

রায়পুর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখনো অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করি। স্থায়ী ক্যাম্পাস হলে সেখানে শহীদ মিনার স্থাপন করা হবে।’

রায়পুর রুস্তম আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাইফ উদ্দিন বলেন, ‘আমি কয়েক মাস আগে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছি। বিভিন্ন কারণে প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। একটি শহীদ মিনার স্থাপনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

হায়দরগঞ্জ টিআরএম কামিল (আলিয়া) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুল আজিজ মজুমদার বলেন, অর্থ ও পরিকল্পনার অভাবে মাদ্রাসা আঙিনায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায়নি। সরকারি বরাদ্দ পেলে দ্রুত নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল হক বলেন, সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে নিজ আঙিনায় শহীদ মিনার নির্মাণ করতে বলা হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান জায়গা ও অর্থের অভাবে তা করতে পারেনি। মাদ্রাসাগুলোতেও নিজস্ব প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার নেই। সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন করতে তাগাদা দেওয়া হবে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, সরকারি বরাদ্দ না পাওয়ায় সব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় নির্মাণের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। শহীদ মিনার না থাকা বিদ্যালয়ের তালিকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অন্জন দাশ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার না থাকাটা দুঃখজনক। উপজেলার সবগুলো প্রতিষ্ঠানে যাতে শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায় সে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত