Ajker Patrika

বলেশ্বরের দুই পাড়ে স্বস্তি

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ০৭
বলেশ্বরের দুই পাড়ে স্বস্তি

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নভেম্বরে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ও বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদের মাছুয়া-রায়েন্দা ফেরি চালু হওয়ায় সুফল পাচ্ছেন যাত্রীরা। এর আগে প্রায় চার দশক ধরে এই দুই উপজেলার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা ছিল খেয়া।

গত ১০ নভেম্বর শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ঘাটে পিরোজপুর-৩ মঠবাড়িয়া আসনের সাংসদ ডা. রুস্তম আলী ফরাজী ও বাগেরহাট-৪ আসনের সাংসদ আমিরুল আলম মিলন এই ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন করেন। এ সময় দুই পাড়ে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন।

জানা গেছে, খেয়ায় ইজাদাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করতেন। জনপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা এবং মোটরসাইকেল পারাপারে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হতো যাত্রীদের কাছ থেকে। এদিকে ফেরি কর্তৃপক্ষ মানুষের টোল ফ্রি করে তাঁদের রেট ঘোষণা করেছেন। এতে সাইকেল, ভ্যান ও রিকশা ৫ টাকা, মোটরসাইকেল ১০ টাকা, ইজিবাইক, সিএনজি, মাহিন্দ্রা ১৫ টাকা, ছোট পিকআপ ৫০ টাকা, বড় পিকআপ ১১৫ টাকা, বড় ট্রাক ২৫০ টাকা, মিনিবাস ৬৫ টাকা ও বড় বাস ১১৫ টাকা। সরকার নির্ধারিত এ টোলকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দুই উপজেলার সাধারণ মানুষ।

এদিকে শরণখোলা ও মঠবাড়িয়াবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা বলেশ্বর নদে ফেরি চালু হওয়ার খবরে আনন্দে ভাসছেন এই অঞ্চলের মানুষ। ফেরি চালুর ফলে দুই আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর মোংলা ও পায়রার সঙ্গে সড়কপথে দূরত্ব কমেছে ৭০ কিলোমিটার। ফলে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হচ্ছে।

মাছুয়া ফেরিঘাটের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে খেয়াঘাটের ইজারাদাররা একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাছুয়া-রায়েন্দা নদ পারাপারে যাত্রীদের জিম্মি করে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ফেরি চালুর মধ্য দিয়ে তাঁদের এ হয়রানি থেকে সাধারণ মানুষ মুক্তি পেয়েছেন।’

এদিকে বড়মাছুয়া এবং রায়েন্দায় ফেরি চালুর ফলে পায়রা থেকে মোংলা বন্দরের দূরত্বও প্রায় ৭০-৮০ কিলোমিটার কমে যাওয়া এবং সাগরকন্যা কুয়াকাটাসহ মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা, বামনা, বরগুনা, আমতলী, তালতলীসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের খুলনার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে।

বাগেরহাট সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বলেশ্বর নদের দুই তীরের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ ও দ্রুততর করতে রায়েন্দা-বড় মাছুয়া ফেরিঘাট নির্মাণ করা হয়। চলতি বছরের মার্চ মাসে রায়েন্দার পাশে রাস্তা নির্মাণ শুরু হয়। অক্টোবরের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হয়। এই কাজে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। মো. মাহফুজ খান প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি সম্পন্ন করেছে। ফেরি চলাচল শুরু হওয়াতে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ এই ফেরিতে পার হবে। সহস্রাধিক যানবাহনও চলাচল করবে এই ফেরিতে। প্রতিদিন মাছুয়া থেকে সকাল ৮টা, রায়েন্দা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা, মাছুয়া থেকে ১১টা, রায়েন্দা সাড়ে ১২টা, মাছুয়া থেকে বেলা ২টা, রায়েন্দা থেকে বিকেল ৪টায় ফেরি চলাচলের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে প্রতি ঘণ্টায় ফেরি চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ফেরিচালক আব্দুর রউফ বলেন, ‘মাছুয়া থেকে রায়েন্দা ঘাটে ভিড়তে এখন ৪০ মিনিট সময় লাগে। অন্যান্য সময় হয়তো ৪০ থেকে ৫০ মিনিট লাগতে পারে।’

বাগেরহাট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘ বলেশ্বর নদের দুই তীরের মানুষ স্বল্প সময় এবং অল্প ব্যয়ে তাঁদের প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবেন। ফেরির সুবিধা থাকাতে দুই পাড়ের মানুষের জন্য যাত্রীবাহী পরিবহনও চালু হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত