Ajker Patrika

থেমেছে খুটখাট, নেমেছে নীরবতা

হোসাইন ময়নুল, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) 
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ০৮
থেমেছে খুটখাট, নেমেছে নীরবতা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের পাঁচলিয়া গ্রামটি একসময় গামছাশিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। এখন রং ও সুতার দাম বৃদ্ধির কারণে মালিকেরা তাঁত বন্ধ করে দিচ্ছেন। তাঁরা চড়া সুদে ঋণ নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকায়। আর এই শিল্পে জড়িতরা এখন কষ্টে দিন যাপন করছেন।

সাবেক তাঁতশ্রমিকেরা বলছেন, মহাজনদের থেকে নিয়মিত টাকা পেতেন না। সবকিছুর দাম বৃদ্ধি হলেও তাঁদের কাজের মূল্য বাড়েনি। তাই তাঁতের কাজ ছেড়ে রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করছেন।

এখানকার গামছার কদর বেশ ভালোই ছিল। সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই খটখট শব্দে মুখর হয়ে উঠত পুরো এলাকা। কিন্তু বর্তমানে এ শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। অধিকাংশ তাঁত কারখানা এখন বন্ধ হয়ে গেছে। তাঁত কারখানায় এখন সুনসান নীরবতা।

উল্লাপাড়া তাঁত বোর্ড অফিসের তথ্যমতে, পাঁচলিয়া গ্রামের ৮৩০টি পরিবারে প্রায় ৩ হাজার তাঁত রয়েছে। এর মধ্যে বন্ধ রয়েছে প্রায় ১ হাজার। এই তাঁতশিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১২ হাজার নারী-পুরুষ জড়িত।

হাটিকুমরুল ইউনিয়নের সাবেক তাঁতশ্রমিক হেলাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগে একসময় তাঁতের কাজ করতাম কিন্তু বর্তমানে এই শিল্পের দুরবস্থা। মহাজনেরা ঠিকমতো কাজের টাকা পরিশোধ করতে পারেন না। সবকিছুর দাম বৃদ্ধি হলেও আমাদের কাজের মূল্য বাড়ে নাই। তাই এখন তাঁতের কাজ ছেড়ে দিয়ে রাজমিস্ত্রির জোগালদার হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছি।’

এ বিষয়ে তাঁত মালিক রহিচ উদ্দিন বলেন, ‘এক সময় ৪২ টি তাঁত ছিল। বর্তমানে সব গুলো তাঁত বন্ধ রয়েছে। রংসহ সুতার দাম বৃদ্ধির কারণে এখন সব শেষ হয়ে গেছে। এই তাঁত শিল্প চালানোর জন্য বিভিন্ন সংস্থা থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে আমার ভাই বাড়িঘর ছেড়ে এখন ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছেন। তবে সরকার যদি আমাদের স্বল্প মূল্যে ঋণ দিত তাহলে এই শিল্পটা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতো।’

হাটিকুমরুল ২ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁতি সমবায় সমিতির সভাপতি আল-আমিন সরকার বলেন, ‘৪০টি তাঁতের মালিক ছিলাম। বর্তমানে ৬টি তাঁত চালু রয়েছে। সিন্ডিকেটের কারণে বাকিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। সেসঙ্গে ৭০ লাখ টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে এখন আমাকে ভুগতে হচ্ছে। পরিবারের দুঃখ-কষ্ট এখন দেখার কেউ নেই।’

উল্লাপাড়া তাঁত বোর্ডের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা জায়দুর রহমান বলেন, ‘পাঁচলিয়া গ্রামের গামছাশিল্পের সুনাম রয়েছে। তবে রং-সুতার দাম বৃদ্ধি হওয়ায় অনেক তাঁত কারখানা বন্ধ হয়েছে গেছে। তবে তাঁত মালিকদের তাঁতি কার্ড করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই তাঁদের সহযোগিতা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

১৯৪৭ থেকে ২০২৫: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ও ফলাফল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত