Ajker Patrika

হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে মারা যাচ্ছে অর্ধেক শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৩৪
হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে মারা যাচ্ছে অর্ধেক শিশু

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকা অঞ্চলে কয়েকটি রোগে মারাত্মক অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুদের প্রায় অর্ধেক মারা গেছে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর। আন্তর্জাতিক গবেষণার বরাতে প্রকাশিত চিকিৎসা সাময়িকী দা ল্যানসেট-এর মে ২০২২ সংখ্যায় এক নিবন্ধে এ কথা বলা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসপাতাল থেকে শিশুকে ছেড়ে দেওয়ার অল্প কিছু দিনের মধ্যে মৃত্যু এড়াতে হাসপাতাল ছাড়ার আগে রোগীর শারীরিক পরীক্ষা ও চিকিৎসাপত্র নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা, বাড়িতে শিশুর প্রয়োজনীয় যত্নের জন্য পরিবারের সামর্থ্য যাচাই করা, পরিবারের সদস্যদের মারাত্মক লক্ষণগুলো শনাক্ত করতে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং প্রয়োজনে চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা প্রয়োজন।

চাইল্ডহুড অ্যাকিউট ইলনেস অ্যান্ড নিউট্রিশন (চেইন) নেটওয়ার্কের আওতায় আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) ঢাকা ও চাঁদপুরে দুটি হাসপাতালসহ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার নয়টি হাসপাতালে মারাত্মক অসুস্থ তিন হাজার ১০১ শিশুর ওপর পরিচালিত এক সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গবেষণা নিবন্ধটি তৈরি করা হয়। দুই থেকে ২৩ মাস বয়সী তিন হাজার ১০১ জন মারাত্মক অসুস্থ শিশুর ওপর এই গবেষণা চালানো হয়।

সমীক্ষায় দেখা যায়, হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফেরা ৩৫০টি শিশুর ৪৮ ভাগের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতাল ত্যাগের পর। এসব শিশু ক্ষয়, ডায়রিয়া, মারাত্মক নিউমোনিয়া, ম্যালেরিয়া, অ্যানিমিয়া ও এইডস রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছিল। এর মধ্যে মারাত্মক রকমের কৃশকায় ছিল ৫৯ শতাংশ শিশু। আর মাঝারি রকমের কৃশকায় ছিল ৪৩ শতাংশ। মৃত শিশুর ৩৫ শতাংশ কৃশকায় ছিল না বলে জানা যায় গবেষণায়।

গবেষণায় আরও বলা হয়, কিছু অসুস্থ শিশুকে চিকিৎসকের পরামর্শ না মেনে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই ধরনের শিশুদের মৃত্যু ঝুঁকি যারা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে হাসপাতাল ত্যাগ করেনি, তাদের চেয়ে দ্বিগুণ। এ ছাড়া অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের হাসপাতালে থাকা অবস্থায় বা ছাড়া পাওয়ার পর মৃত্যুঝুঁকি পাঁচ গুণ বেশি।

যারা মারা গেছে, তাদের অনেকের পরিবার আর্থিকভাবে অসচ্ছল, এবং স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সম্পর্কিত বিষয়ে অসচেতন।

আইসিডিডিআরবি, বি’র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলছেন, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর এভাবে অনেক শিশুর মৃত্যু খুবই বেদনাদায়ক। দুর্ভাগ্যজনক এসব মৃত্যু ঠেকাতে চিকিৎসা ব্যবস্থার পর্যালোচনা এবং বাড়িতে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

চিকিৎসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুদের ফলোআপ জোরদার করা দরকার। এ ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় হলো-হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময় সংশ্লিষ্ট কমিউনিটি ক্লিনিক বা স্বাস্থ্যকর্মীকে জানিয়ে রাখা। যেসব শিশু সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে এবং যারা চিকিৎসকের পরামর্শ না মেনে হাসপাতাল ত্যাগ করেছে উভয় ক্ষেত্রেই জরুরি স্বাস্থ্যসেবা লাভের ব্যবস্থা করতে হবে। উচ্চ ঝুঁকির শিশুদের ক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কিছুদিন পর নিয়মিত ফলোআপের ব্যবস্থা করতে হবে।

এ ছাড়া শিশুদের নিউমোনিয়া এবং ডায়রিয়ার মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে হবে। এ জন্য ঠিকমতো বাড়ছে না এমন শিশুদের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত