Ajker Patrika

শঙ্কায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

এম. কে. দোলন বিশ্বাস, ইসলামপুর (জামালপুর)
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ০৫
শঙ্কায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে স্থগিত হওয়া তিনটি কেন্দ্রের ভোট আজ। ভোটকেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর, ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনায় এই তিন কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছিল গত ২৮ নভেম্বর।

আজ বৃহস্পতিবার সেখানে ভোট সুষ্ঠুভাবে হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য সব ধরনে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ নভেম্বর উপজেলার ৬টি ইউপিতে নির্বাচন হয়। ওই দিন ভোটকেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর, ব্যালট ছিনতাই ও সহিংসতার ঘটনায় চরপুটিমারী ইউপির সাজালেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আগ্রাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং চার নম্বর চর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করে প্রশাসন। ওই ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ৫ জন। এ ছাড়া একজন আওয়ামী লীগের এবং অন্য জন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের।

চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন-আওয়ামী লীগ মনোনীত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সামছুজ্জামান সুরুজ মাস্টার, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলীম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইন বিষয় সম্পাদক শাজাহান মোল্লা, আওয়ামী লীগ সমর্থক বেলায়েত হোসেন, ইউনিয়ন বিএনপির নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়া, বিএনপি নেতা সুজাউদ্দৌলা সাদা এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আব্দুস সুবহান।

আরও জানা গেছে, ইউপির ৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬টি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৪ হাজার ২৫৪। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা সুজাউদ্দৌলা সাদা চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৫৮৩ ভোট এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল আলীম ঘোড়া প্রতীক পেয়েছে ২ হাজার ২১৬ ভোট।

উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ইতিমধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীদের আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অভিযোগ, নৌকা প্রতীকের কর্মীরা নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকদের।

সাজালের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটার সুলতান আলী বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোট নিয়ে আমরা শঙ্কায় রয়েছি। নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা নানা ভয়ভীতি দিচ্ছে।’

আগ্রাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটার সিরাজুল হক বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোট হলে এ কেন্দ্রে নৌকার ভরাডুবি হবে। এটা নিশ্চিত জেনে নৌকার সমর্থকেরা ভোটারদের নানা ভয়ভীতি দিয়ে আসছে।’ চার নম্বর চর উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটার লুৎফর রহমান বলেন, ‘নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা একচেটিয়া ভোট ভাগিয়ে নিতে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।’

চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সুজাউদ্দৌলা সাদা জানান, ‘আমার নির্বাচনী প্রচারে বাধা দিচ্ছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন। এতে ভোটারেরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা করছেন। সুষ্ঠু ভোট হলে চশমা প্রতীকে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হবো।’

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সামছুজ্জামান সুরুজ মাস্টারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেছেন ঘোড়া প্রতীকের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল আলীম। তিনি বলেন, নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা আমার নির্বাচনী প্রচারণা কাজে নিয়মিত বাধা দিচ্ছে।

নিরপেক্ষ ভোট নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। এলাকাবাসী এবার আমাকেই ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান বানাতে চান।’

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অভিযুক্ত সামছুজ্জামান সুরুজ মাস্টারের বলেন, ‘আমরা অন্যের প্রচারে বাধা দেবো কেন? আমাদের বিরুদ্ধে অযথা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমরা কাউকে প্রচারে বাধা দিচ্ছি না।’

ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত খোঁজ খবর নিচ্ছি। ভোটগ্রহণে কারোর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলেই আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সহিংসতা প্রতিরোধে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত