Ajker Patrika

পাহাড়ে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশের কারুশিল্প

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই (রাঙামাটি)
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৩: ৩২
পাহাড়ে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশের কারুশিল্প

পাহাড়ি জনজীবনে অন্যতম অনুষঙ্গ বাঁশ। মাচা ঘর তৈরি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসে তৈরিতে ছিল বাঁশের ব্যবহার। তবে বাঁশের সেই কারুশিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের কারুশিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে এই অবস্থা জানা গেছে।

উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের পাগলি নিচের পাড়ার বাসিন্দা অশীতিপর সুরেন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘৫০ বছর ধরে আমি বাঁশের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কাল্লং, মোড়া, গোলা, দিঁরা (বড় তুরং), হাত পাখা, কুরুম, দোলনা, ডুলা তৈরি করে আসছি। এক সময় এই কারু শিল্পের কদর থাকলেও বর্তমানে এর আর চাহিদা নেই। তাই এখন এই সব আর তৈরি করছি না।’

রাইখালী ইউনিয়নের তিনছড়ি এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ কারুশিল্পী সাবেক ইউপি সদস্য ক্যসাউ মারমা বলেন, বর্তমানে বাঁশ ধ্বংসের কারণে বাঁশের কারুকাজ বা নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আগে ভালো আয় করতে পারতেন তিনি, আর এখন সপ্তাহে এমন কাজ করে এক-দেড় হাজার মতো টাকা আয় করে থাকেন বলে তিনি জানান।

উপজেলার রাইখালি ও ওয়াগ্গা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামের কয়েকজন কারুশিল্পীর সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এখন আগের মতো পাহাড়ে বাঁশ উৎপাদন হয় না। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষ বন-জঙ্গ-বাঁশের ঝাড় কেটে ঘরবাড়ি তৈরি করছে। তা ছাড়া এখন প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষ প্লাস্টিক, মেলামাইন, স্টিলের তৈরি গৃহস্থালি জিনিসপত্র ব্যবহার করছে।

মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থার (মাসস) কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক মংসুইপ্র মারমা বলেন, ‘বাঁশের তৈরি কারু শিল্প পাহাড়িদের জীবনাচরণের একটি অনুষঙ্গ। আমরা যতই আধুনিক হচ্ছি, ততই আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে হারাতে বসেছি। তাই আজ সময় এসেছে এই শিল্পকে বাঁচানোর।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত