Ajker Patrika

জোড়াতালির সেতু ভেঙে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ

হোসাইন আলী কাজী, আমতলী
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১২: ৪২
জোড়াতালির সেতু ভেঙে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ

আমতলীর চাওড়া নদীর মহিষডাঙ্গা এলাকার ভাসমান সেতুটি ভেঙ্গে গিয়েছে। গত রোববার রাতে একটি মোটরসাইকেল পারাপারের সময় এ সেতু ভেঙে মোটর সাইকেল নদীতে পড়ে যায়। সেতুটি ভেঙে পড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ ১০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ। দ্রুত গার্ডার সেতু নির্মাণের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।

আমতলী সদর ও চাওড়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে চলে গেছে চাওড়া নদী। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুই ইউনিয়নের সংযোগ স্থাপনে মহিষডাঙ্গা গ্রামের ঠিকাদার শামীম আহসান ম্যালাকার বাড়ির সামনে ২০০৬ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর লোহার সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ওই সেতুর কাজ পান বশির উদ্দিন সিকদার নামের এক ঠিকাদার। কিন্তু ওই ঠিকাদার শামীম আহসান ম্যালাকারের আত্মীয় হওয়ায় কাজটি তিনি করেন। ঠিকাদার নিজের ইচ্ছামত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সেতু নির্মাণ করেছেন এমন অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় অলিল খাঁন ও মাহাদী হাসান জানান নির্মাণের তিন বছরের মাথায় ২০০৯ ওই সেতুর মাঝখান দেবে যায়। বিষয়টি তৎকালীন উপজেলা প্রকৌশলীকে জানালেও লাভ হয়নি। ওই সময় ঠিকাদার দেবে যাওয়া সেতু রক্ষায় সেতুর সামনে পিলার পুতে দেন, যাতে বড় যানবাহন উঠতে না পারে। গত ১৫ বছরে ছোট যানবাহন ও মানুষ ছাড়া কিছুই ওই সেতুতে উঠতে পারেনি বলে জানান । ওই সেতুটিও গত বছরের জুন মাসে ভেঙ্গে পড়ে। তখন সেখানে ভাসমান সেতু নির্মাণ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গত পাঁচ মাস ধরে ওই ভাসমান সেতু দিয়ে মানুষ পারাপার হতো। কিন্তু গত রোববার রাতে একটি মোটর সাইকেল পার করতে গিয়ে এটিও ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যায়।

সেতু ভেঙ্গে পরায় আমতলী সদর ইউনিয়নের ভায়লাবুনিয়া, মহিষডাঙ্গা, পূর্ব মহিষডাঙ্গা, নাচনাপাড়া, হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া, তুজির বাজার ও চাওড়া ইউনিয়নের কাউনিয়া, চলাভাঙ্গা ও লোদা গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। ওই সেতু দিয়ে চলাচল সম্পুর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়াও কাউনিয়া ইব্রাহিম একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাউনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহিষডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শামিম আহসান দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং কাউনিয়া আশ্বেরদিয়া বায়তুল আমান জামে মসজিদের মুসুল্লিদের পারাপার বন্ধ হয়ে গেছে।

মহিষডাঙ্গা গ্রামের রুহুল আমিন ও সুমন মল্লিক বলেন, মানুষের চিৎকার শুনে এসে দেখি সেতু ভেঙে মোটর সাইকেল নদীতে পড়ে গেছে। দ্রুত এখানে একটি লোহার সেতু নির্মাণের দাবী জানাই। কাউনিয়া গ্রামের হেলাল মিয়া বলেন, ‘সেতু ভাইঙ্গ্যা পরায় মোরা ভোগান্তিতে পরেছি। এ্যাহন এপারের মানু ওপাড়ে যাইতে পারমু না।’ কাউনিয়া ইব্রাহিম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহনাজ পারভীন বলেন, সেতু ভেঙ্গে পরায় শিক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়েছে।

আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, সেতু নির্মাণ করা না হলে মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকবে না। দ্রুত সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন।

ঠিকাদার শামীম আহসান ম্যালাকার সেতু নির্মাণে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহারের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘সঠিক নিয়মে এটি বানানো হয়েছে। আমি নই, ঠিকাদার বশির উদ্দিন সিকদার এটি নির্মাণ করেছেন।’

ঠিকাদার বশির উদ্দিন শিকদার বলেন,‘ ওই সেতুটির কাজটি আমি করিনি। করেছে শামীম আহসান।’

আমতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ওই সেতু নির্মাণের জন্য বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরে প্রকল্প দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হেফাজতসহ ধর্ম ব্যবসায়ীরা নারীবিদ্বেষী প্রচারণা চালাচ্ছে: ৬৮ মানবাধিকার সংগঠন

মানিকগঞ্জে সালিসে বিএনপি নেতার নির্দেশে পাঁচ ভাইকে জুতাপেটা

রাখাইনে মানবিক করিডর: জান্তার আপত্তিতে সরকারে দ্বিধা

ভারতের ব্ল্যাকআউট মহড়া, সীমান্তে আটার মজুত বাড়াচ্ছে পাকিস্তান, যুদ্ধ কি লেগে যাচ্ছে

মানবিক করিডরে বাংলাদেশের ফায়দা কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত