Ajker Patrika

বাড়ি আছে, নেই জমিদারি

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ২৭
বাড়ি আছে, নেই জমিদারি

প্রাচীন কারুকার্যমণ্ডিত ভবন। পলেস্তারা উঠে শেওলা জমেছে। পুকুর, রামধন দিঘি, বাড়ির সামনে তোরণ, আনন্দমহল, নাচখানা ও মন্দির সবই আছে। তবে একসময়ের কর্মচাঞ্চল্যভরা বাড়িটির জৌলুশ হারিয়ে গেছে অনেক আগেই। তবুও ঐতিহ্য ধরে রেখে কালের সাক্ষী হয়ে টিকে আছে চট্টগ্রামের রাউজানের ডাবুয়া এলাকার রামধন জমিদারবাড়িটি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রিটিশ শাসনামলে এই বাড়ির কর্তাদের আধিপত্য ছিল এলাকাজুড়ে। এলাকার জমিদারি ছিল বাড়িটির কর্ণধার রামধনের হাতেই। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নানা শ্রেণিপেশার মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকত বাড়িটিতে। তবে সেগুলো এখন শুধুই অতীত।

ডাবুয়া জগন্নাথ হাট, ডাবুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, চিকদাইর পুলিশ ফাঁড়িসহ রাউজান আরআরএসি মডেল হাইস্কুল প্রতিষ্ঠায় এ জমিদার বংশের বিশেষ অবদান রয়েছে বলে স্বীকৃতি আছে।

জমিদার রামধন ধরের বংশের অনেকেই চট্টগ্রাম শহর ও ঢাকায় বসবাস করেন এখন। আর জমিদারবাড়িটির কিছু অংশ সংস্কার করে রামধনের নাতি-নাতনিসহ কয়েকজন এখনো সেখানে বসবাস করেন। পূজার সময় কিংবা পারিবারিক অনুষ্ঠানে একত্র হন জমিদারের পরিবার।

সম্প্রতি কথা হয় রামধন জমিদারের নাতনি ৮২ বছরের বৃদ্ধা ছবি ধরের সঙ্গে। পুরোনো দিনের কথা মনে করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘একসময় আমাদের বাড়িতে লোকে গিজগিজ করত। আমাদের জন্মের পর থেকে দেখেছি ঠাকুর দার (রামধন জমিদার) জমিদারি শাসন। তিনি মারা যাওয়ার পর বাবা কেশব চন্দ্র ধন জমিদারির হাল ধরেন। ১৯৫৫ সালের ৬ জুন বাবার মৃত্যুর পর আমাদের জমিদারি ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।’

জমিদারদের নাতি তীর্থ ধর বলেন, ‘আমাদের বাড়িটি প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো। আমাদের দাদারা জমিদারি করেছেন। জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর পরিবারের সদস্যরা গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে গেছেন। এতে জমিদারির জৌলুশ হারিয়েছে। আমরা এখানেই বসবাস করছি। প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ছুটে আসে বাড়িটি দেখতে। ভালোই লাগে আমাদের।’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জমিদার বাড়িটি রুপার থালা, বালতি, কেটলি ব্যবহারসহ অভিজাত বিলাসিতায় ভরপুর ছিল। এলাকার মানুষদের কাছ থেকে রুপার টাকায় খাজনা আদায় করত জমিদার। যারা খাজনা আদায় করতে আসত, তাদের জমিদার বাড়ি থেকে দেওয়া হতো এক জোড়া নারকেল, এক বিড়া পান আর বাতাসা।

জমিদারবাড়ি দেখতে আসা কদলপুরের বাসিন্দা কলেজশিক্ষার্থী ওয়াহিদ মুরাদ বলে, ‘রাউজানের রামধন জমিদারবাড়ি সম্পর্কে অনেকের কাছে শুনেছি। তাই বন্ধুকে নিয়ে ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি দেখতে এসেছি। বাড়িটি ভুতুড়ে পরিবেশের হলেও আশপাশের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছি। বাড়িটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হলে ঐতিহ্য ধরে রাখা যেত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘বিচারপতি খায়রুলকে হাতকড়া পরানো মানে পুরো বিচার বিভাগকে হাতকড়া পরানো’

কোথাও ঘুরতে ইচ্ছা করলে আমাকে জানাবে—ছাত্রীকে খুবি অধ্যাপক

মোবাইলে সর্বত্র ইন্টারনেট সংযোগ দেবে স্টারলিংকের ডাইরেক্ট-টু-সেল

আগামী সপ্তাহের মধ্যে ৫ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু: গভর্নর

মৌচাকে হাসপাতালের পার্কিংয়ে প্রাইভেট কার থেকে উদ্ধার দুই মরদেহের পরিচয় মিলেছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত