Ajker Patrika

কৃষিজমি খনন করে ঘের

হিজলা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২২, ০৯: ২৭
কৃষিজমি খনন করে ঘের

বরিশালের হিজলা উপজেলায় সরকারি খাল বন্ধ করে খননযন্ত্রের মাধ্যমে কৃষিজমি খনন করা হচ্ছে। জমি থেকে তোলা মাটি আশপাশের মানুষের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। সেখানে প্রায় চার একর জমিতে শহীদ মোল্লা নামের এক ব্যক্তি এই মাছের ঘের করছেন। উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নের বারুইয়া গ্রামে শাল বিলের মাঝখানে চলছে এই খননকাজ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, ‘সরকারি খালটি বন্ধ করে মাছের ঘের করা হলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হবে আমাদের এলাকার কৃষকদের। বর্ষা মৌসুমে এই খাল দিয়ে পানি নিচে নামতে পারবে না। এতে এই এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। কৃষকেরা তাঁদের জমিতে ফসল ফলাতে পারবেন না। তা ছাড়া বিলের কৃষিজমি খনন করে সেখানে মাছের ঘের করা হচ্ছে। কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে হলে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। আমার ধারণা, এ ক্ষেত্রে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। এভাবে কৃষিজমি খনন করলে চাষাবাদের জায়গা কমে যাবে।’

১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ কাজে জড়িত ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকা জরিমানা ও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। একই কাজ দ্বিতীয়বার করলে দায়ী ব্যক্তির ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। কিন্তু এই আইনের তোয়াক্কা না করে চলছে কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বিলের মাঝখানে বিশাল জায়গায় এই ঘের করা হচ্ছে। এ জন্য কৃষিজমির মাটি ড্রেজারের মাধ্যমে তোলা হচ্ছে। পরে এই মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এলাকায় বসতভিটা তৈরির জন্য অনেকে এই মাটি কিনে নিচ্ছেন। তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, খালটি বন্ধ করায় অনেক সমস্যা হবে। এই খাল বৃষ্টির পানি নিচে নেমে যায়। খালটি বন্ধ থাকলে বর্ষাকালে তাঁদের এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেবে। প্রশাসনের উচিত খালটি উন্মুক্ত রাখতে অভিযান চালানো।

এ বিষয়ে জমির মালিক শহীদ মোল্লা, ‘আমি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে চাই না।’

মেমানিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এলাকায় একাধিক স্থানে ড্রেজিং চলছে। তবে কোন এলাকায় খাল বন্ধ করে কে ড্রেজিং করছে, তা আমার জানা নাই।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘অবৈধভাবে খাল বন্ধ করে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে কৃষিজমি নষ্ট করে ঘের নির্মাণের কিছু তথ্য আমার কাছে আসছে। এ ব্যাপারে মেমানিয়া ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’

মেমানিয়া ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমাকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে অবৈধ ড্রেজিংয়ের বিষয়ে জানতে বলেছেন। আমি জানার চেষ্টা করছি।’

এ বিষয়ে ইউএনও বকুল চন্দ্র কবিরাজ বলেন, ‘অবৈধ ড্রেজার দিয়ে কৃষিজমি ধ্বংস করে এবং সরকারি খাল বন্ধ করে মাছের ঘের করার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত