আজাদুল আদনান, ঢাকা

কোভিড মহামারিকালে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সুবিধাসংবলিত আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সের অপরিহার্যতা ও অভাব ভালোভাবে টের পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ঘাটতি মেটাতে এগিয়ে আসে ভারত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০৯টি বিশেষায়িত অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেয় দেশটি। কিন্তু বেশির ভাগ অ্যাম্বুলেন্স একবারের জন্যও কাজে লাগায়নি কর্তৃপক্ষ দক্ষ জনবলের সংকটসহ নানা কারণ দেখিয়ে। সেগুলো পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম অ্যাম্বুলেন্সগুলো পড়ে থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ উপহার দিয়েছে, কিন্তু সেগুলোতে নানা সমস্যা। আমাদের ব্যবস্থাপনায় এগুলো পরিচালনা করা কঠিন। এর জন্য আলাদা লোকবল লাগবে। এগুলো সচল রাখতে অস্থায়ী চালক ও তেলের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদা পাঠানো হয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে (সিএমএসডি) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের হাতে অ্যাম্বুলেন্সগুলোর চাবি তুলে দিয়েছিলেন ভারতের হাইকমিশনার। তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সগুলো নিঃসন্দেহে দেশের হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে।’ চাবি হস্তান্তরের পর চার দফায় অ্যাম্বুলেন্সগুলো দেশে আসে। ৬১টি অ্যাম্বুলেন্স সিএমএসডির মাধ্যমে এবং ৪৮টি সরাসরি বিতরণ করে ভারতীয় হাইকমিশন। সিএমএসডি রাজধানীর ১০টি সরকারি হাসপাতালকে দিয়েছে একটি করে। দুটি করে দেওয়া হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও হজযাত্রীদের ব্যবহারের জন্য। পড়ে থেকে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় অধিদপ্তর সম্প্রতি দুটি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সগুলো দিয়ে দেয়। আর হজযাত্রীদের জন্য বরাদ্দ অ্যাম্বুলেন্স পড়ে আছে সিএমএসডিতে।
রাজধানীর ১০ হাসপাতাল এবং ৮ জেলায় সরেজমিনে দেখা যায়, বেশির ভাগ স্থানে অ্যাম্বুলেন্স খোলা জায়গায় ফেলে রাখায় ধুলাবালির স্তর জমছে। কিছু অ্যাম্বুলেন্স মাঝেমধ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে সাধারণ রোগী বহন করার কাজে।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) অ্যাম্বুলেন্স পায় গত বছরের ১৩ অক্টোবর। কিন্তু একবারের জন্যও সেবার কাজে ব্যবহৃত হয়নি। গত ১৭ নভেম্বর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের সামনের ভবনের বারান্দায় দুই দেশের পতাকাখচিত অ্যাম্বুলেন্সটি ধুলা-ময়লায় ঢাকা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলোর যথাযথ ব্যবহার না হলে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিএমএসডির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, অ্যাম্বুলেন্সগুলোতে অধিকাংশ সুবিধাই নেই। বিশেষ করে ভ্যান্টিলেশন, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মনিটর পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভারতীয় হাইকমিশন কিছু অ্যাম্বুলেন্স আমাদের মাধ্যমে আর বাকিগুলো নিজেরাই বিতরণ করেছে। কোথায়, কীভাবে পড়ে আছে, তা দেখে বলতে হবে। চালক-সংকট হলে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে পরিচালকেরা নিয়োগ দিতে পারবেন। অব্যবহৃত থাকার কথা নয়।’
ব্যবহারের নীতিমালা হয়নি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল অ্যাম্বুলেন্স বুঝে পেয়েছে গত বছরের ১ নভেম্বর। গত ১৫ নভেম্বর গিয়ে সেটি ক্যাফেটেরিয়ার পাশে খোলা জায়গায় অযত্নে পড়ে থাকতে দেখা যায়। অ্যাম্বুলেন্স বুঝে পাওয়ার সময় হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ছিলেন অধ্যাপক ডা. নাজমুল করিম। সম্প্রতি তিনি অবসরে গেছেন। ডা. নাজমুল করিম বলেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলো ব্যবহারের কোনো নীতিমালা হয়নি। চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার ও আলাদা চালক লাগবে, যার কোনোটাই নেই। এভাবে পড়ে থাকলে দ্রুত নষ্ট হয়ে যাবে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রেজাউর রহমান গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্বে এসেছি, এ ব্যাপারে এখনো কিছু জানি না।’
শুধু ইঞ্জিন চালু করা হয়
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭ নভেম্বর গিয়ে দেখা যায়, গ্যারেজে অ্যাম্বুলেন্সটি ধুলোবালিতে ভরা। একাধিক কর্মকর্তা জানান, ব্যাটারি ঠিক রাখতে মাঝেমধ্যে ইঞ্জিন চালু করা হয় শুধু। পরিচালক অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমান বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সটিতে যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার, তার অনেকগুলো নেই। একজন কনসালট্যান্ট ও নার্স দরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো নীতিমালা ঠিক না হওয়ায় কাজে লাগানো যাচ্ছে না।’
একই দিনে জাতীয় নাক কান ও গলা ইনস্টিটিউটে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিচালকের কক্ষে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাঁকেও। কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষী জানান, জায়গা না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি স্থানান্তর করা হয়েছে অন্য প্রতিষ্ঠানে। ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু হানিফকে একাধিক দিন ফোন করে, এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
উত্তরায় বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে খোলা জায়গায় এবং সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে টিনের চালার নিচে দেখা যায় অ্যাম্বুলেন্স। পরদিন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েও টিনের চালার নিচে দেখা যায়। কর্মকর্তারা জানান, এক দিনের জন্যও ব্যবহার হয়নি এসব অ্যাম্বুলেন্স। মাঝেমধ্যে শুধু ইঞ্জিন চালু করা হয়।
ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৯ মাসে একবারের জন্যও কাজে লাগানো হয়নি অ্যাম্বুলেন্স। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ফিরোজ জামান বলেন, ‘চলতি বছর অ্যাম্বুলেন্স গ্রহণ করি। কিন্তু পরিপূর্ণ একটি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্সে যেসব ইকুইপমেন্ট দরকার, তার সবকিছু দেওয়া হয়নি।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এ এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্স বিতরণের আগে সেগুলোতে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা আছে, তা দেখেনি কেউই। বিভিন্ন হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ ব্যবহারের নীতিমালা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বারবার চিঠি দিয়েও কোনো সদুত্তর পায়নি।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল অনুবিভাগ) নাজমুল হক খান বলেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলো এভাবে পড়ে থাকার কথা নয়। আউটসোর্সিং চালকদের মাধ্যমে চালু রাখার কথা। যেকোনো লজিস্টিক সাপোর্ট লাগলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেখবে।
মাঝেমধ্যে সাধারণ রোগী বহন
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মহাখালী ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল, জাতীয় নিউরোসায়েন্সেস ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, বিশেষায়িত অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে মাঝেমধ্যে সাধারণ রোগী বহন করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক শেখ দাউদ আদনান কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
অ্যাম্বুলেন্স বুঝে পাওয়ার সময়কার পরিচালক ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞা বলেন, ভারত যখন অ্যাম্বুলেন্সগুলো দেয়, ভেতরে ভেন্টিলেশনসহ অন্যান্য সুবিধা আছে কি না, দেখা হয়নি। তাই সাধারণ রোগীর জন্যই এগুলো ব্যবহার করতে হচ্ছে। কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বেশির ভাগ সময় রাষ্ট্রপতি এলে ব্যবহার হয়। মাঝেমধ্যে রোগী আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করি। তবে তেল খরচ বেশি হওয়ায় অধিকাংশ সময় পড়েই থাকে।’
সব সুবিধা নেই
বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শজিমেক) এবং ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে দুটি অ্যাম্বুলেন্সই পড়ে আছে। শজিমেক হাসপাতালে মাঝেমধ্যে সাধারণ রোগীদের জন্য বহন করা হয়, আর কেবল ব্যাটারি ঠিক আছে কি না, চেক করতে স্টার্ট দিয়ে দেখা হয়।
উপপরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘এসব অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের জন্য যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার, তা নেই। লাইফ সাপোর্টের অ্যাম্বুলেন্স হলেও অনেক কিছুই ঘাটতি আছে। তাই মাঝেমধ্যে সাধারণ রোগীর জন্য ব্যবহার হলেও অধিকাংশ সময়ই পড়ে থাকে।’
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মুমিনুর রহমান বলেন, ‘লাইফ সাপোর্ট বলা হলেও যে ধরনের ফ্যাসিলিটিজ থাকা দরকার, তার কিছুই নেই। বিষয়টি নিয়ে সিএমএসডিকে ছয় মাস আগে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কিছু জানায়নি। তাই অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে আছে।’
সিএমএসডির পরিচালক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকারও বলেন, ‘যেকোনো যন্ত্র কেনার আগে তাতে সুযোগ-সুবিধা কি থাকে, সেটি দেখা হয়। কিন্তু উপহারের হওয়ায় এ ক্ষেত্রে আমরা দেখিনি। এ বিষয়ে আগের পরিচালক আরও ভালো বলতে পারবেন।’
তিন জেলায় ব্যবহার
সাধারণ রোগীদের জন্য ব্যবহার হচ্ছে জামালপুরে দেওয়া দুটি অ্যাম্বুলেন্স। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বুঝে পাওয়ার পর থেকে বেশির ভাগ সময় ব্যবহার করছি। কিন্তু অন্যান্য অ্যাম্বুলেন্সের চেয়ে তিন গুণ তেল বেশি লাগে।’
জামালপুরে গান্ধী আশ্রমের পরিচালনা কমিটির সদস্য হিল্লোল সরকার বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সটি আমাদের জন্য আশীর্বাদ। সাধারণ রোগী থেকে শুরু করে গুরুতর রোগীদের জন্যও ব্যবহার করা হচ্ছে।’
জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রাশেদ মোবারক জুয়েল বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সটি কেবল ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের সেবায় ব্যবহৃত হচ্ছে। উত্তরা মোটর্স সার্ভিসিং সেন্টার রাজশাহী শাখা থেকে একবার ফ্রি সার্ভিসিং করে নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ফ্রি সার্ভিসিংয়ের জন্য উত্তরার বগুড়া শাখায় নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।’
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্সটিতে নিয়মিত রোগী আনা-নেওয়া হচ্ছে।
যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার তাগিদ
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘এসব অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারে অভিজ্ঞদের নিয়ে একটা টিম করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে না দিয়ে টারশিয়ারি পর্যায়ে কাজে লাগানো দরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের পরিচালনায় একজন কনসালট্যান্ট ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারের মাধ্যমে এগুলো খুব ভালোভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।’ বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে ভারত সরকার অ্যাম্বুলেন্সগুলো দিয়েছে। আর কিছু না হোক তাদের সম্মানার্থেই এগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। নতুবা ভারতসহ বহির্বিশ্বে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে।’
প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন সাদ্দাম হোসেন (ঠাকুরগাঁও), সাজন আহম্মেদ পাপন (কিশোরগঞ্জ), মেহেরাব্বিন সানভি (চুয়াডাঙ্গা), শাপলা খন্দকার (বগুড়া), মো. আতাউর রহমান (জয়পুরহাট), জাহাঙ্গীর আলম (জামালপুর), মাইনউদ্দিন হাসান শাহেদ (কক্সবাজার) ও মো. শামীম রেজা (রাজবাড়ী)।

কোভিড মহামারিকালে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সুবিধাসংবলিত আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সের অপরিহার্যতা ও অভাব ভালোভাবে টের পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ঘাটতি মেটাতে এগিয়ে আসে ভারত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০৯টি বিশেষায়িত অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেয় দেশটি। কিন্তু বেশির ভাগ অ্যাম্বুলেন্স একবারের জন্যও কাজে লাগায়নি কর্তৃপক্ষ দক্ষ জনবলের সংকটসহ নানা কারণ দেখিয়ে। সেগুলো পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম অ্যাম্বুলেন্সগুলো পড়ে থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ উপহার দিয়েছে, কিন্তু সেগুলোতে নানা সমস্যা। আমাদের ব্যবস্থাপনায় এগুলো পরিচালনা করা কঠিন। এর জন্য আলাদা লোকবল লাগবে। এগুলো সচল রাখতে অস্থায়ী চালক ও তেলের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদা পাঠানো হয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে (সিএমএসডি) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের হাতে অ্যাম্বুলেন্সগুলোর চাবি তুলে দিয়েছিলেন ভারতের হাইকমিশনার। তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সগুলো নিঃসন্দেহে দেশের হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করবে।’ চাবি হস্তান্তরের পর চার দফায় অ্যাম্বুলেন্সগুলো দেশে আসে। ৬১টি অ্যাম্বুলেন্স সিএমএসডির মাধ্যমে এবং ৪৮টি সরাসরি বিতরণ করে ভারতীয় হাইকমিশন। সিএমএসডি রাজধানীর ১০টি সরকারি হাসপাতালকে দিয়েছে একটি করে। দুটি করে দেওয়া হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও হজযাত্রীদের ব্যবহারের জন্য। পড়ে থেকে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় অধিদপ্তর সম্প্রতি দুটি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সগুলো দিয়ে দেয়। আর হজযাত্রীদের জন্য বরাদ্দ অ্যাম্বুলেন্স পড়ে আছে সিএমএসডিতে।
রাজধানীর ১০ হাসপাতাল এবং ৮ জেলায় সরেজমিনে দেখা যায়, বেশির ভাগ স্থানে অ্যাম্বুলেন্স খোলা জায়গায় ফেলে রাখায় ধুলাবালির স্তর জমছে। কিছু অ্যাম্বুলেন্স মাঝেমধ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে সাধারণ রোগী বহন করার কাজে।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) অ্যাম্বুলেন্স পায় গত বছরের ১৩ অক্টোবর। কিন্তু একবারের জন্যও সেবার কাজে ব্যবহৃত হয়নি। গত ১৭ নভেম্বর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের সামনের ভবনের বারান্দায় দুই দেশের পতাকাখচিত অ্যাম্বুলেন্সটি ধুলা-ময়লায় ঢাকা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলোর যথাযথ ব্যবহার না হলে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিএমএসডির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, অ্যাম্বুলেন্সগুলোতে অধিকাংশ সুবিধাই নেই। বিশেষ করে ভ্যান্টিলেশন, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মনিটর পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভারতীয় হাইকমিশন কিছু অ্যাম্বুলেন্স আমাদের মাধ্যমে আর বাকিগুলো নিজেরাই বিতরণ করেছে। কোথায়, কীভাবে পড়ে আছে, তা দেখে বলতে হবে। চালক-সংকট হলে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে পরিচালকেরা নিয়োগ দিতে পারবেন। অব্যবহৃত থাকার কথা নয়।’
ব্যবহারের নীতিমালা হয়নি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল অ্যাম্বুলেন্স বুঝে পেয়েছে গত বছরের ১ নভেম্বর। গত ১৫ নভেম্বর গিয়ে সেটি ক্যাফেটেরিয়ার পাশে খোলা জায়গায় অযত্নে পড়ে থাকতে দেখা যায়। অ্যাম্বুলেন্স বুঝে পাওয়ার সময় হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ছিলেন অধ্যাপক ডা. নাজমুল করিম। সম্প্রতি তিনি অবসরে গেছেন। ডা. নাজমুল করিম বলেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলো ব্যবহারের কোনো নীতিমালা হয়নি। চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার ও আলাদা চালক লাগবে, যার কোনোটাই নেই। এভাবে পড়ে থাকলে দ্রুত নষ্ট হয়ে যাবে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রেজাউর রহমান গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্বে এসেছি, এ ব্যাপারে এখনো কিছু জানি না।’
শুধু ইঞ্জিন চালু করা হয়
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭ নভেম্বর গিয়ে দেখা যায়, গ্যারেজে অ্যাম্বুলেন্সটি ধুলোবালিতে ভরা। একাধিক কর্মকর্তা জানান, ব্যাটারি ঠিক রাখতে মাঝেমধ্যে ইঞ্জিন চালু করা হয় শুধু। পরিচালক অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমান বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সটিতে যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার, তার অনেকগুলো নেই। একজন কনসালট্যান্ট ও নার্স দরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো নীতিমালা ঠিক না হওয়ায় কাজে লাগানো যাচ্ছে না।’
একই দিনে জাতীয় নাক কান ও গলা ইনস্টিটিউটে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিচালকের কক্ষে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাঁকেও। কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষী জানান, জায়গা না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি স্থানান্তর করা হয়েছে অন্য প্রতিষ্ঠানে। ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু হানিফকে একাধিক দিন ফোন করে, এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
উত্তরায় বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে খোলা জায়গায় এবং সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে টিনের চালার নিচে দেখা যায় অ্যাম্বুলেন্স। পরদিন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েও টিনের চালার নিচে দেখা যায়। কর্মকর্তারা জানান, এক দিনের জন্যও ব্যবহার হয়নি এসব অ্যাম্বুলেন্স। মাঝেমধ্যে শুধু ইঞ্জিন চালু করা হয়।
ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৯ মাসে একবারের জন্যও কাজে লাগানো হয়নি অ্যাম্বুলেন্স। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ফিরোজ জামান বলেন, ‘চলতি বছর অ্যাম্বুলেন্স গ্রহণ করি। কিন্তু পরিপূর্ণ একটি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্সে যেসব ইকুইপমেন্ট দরকার, তার সবকিছু দেওয়া হয়নি।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এ এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্স বিতরণের আগে সেগুলোতে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা আছে, তা দেখেনি কেউই। বিভিন্ন হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ ব্যবহারের নীতিমালা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বারবার চিঠি দিয়েও কোনো সদুত্তর পায়নি।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল অনুবিভাগ) নাজমুল হক খান বলেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলো এভাবে পড়ে থাকার কথা নয়। আউটসোর্সিং চালকদের মাধ্যমে চালু রাখার কথা। যেকোনো লজিস্টিক সাপোর্ট লাগলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেখবে।
মাঝেমধ্যে সাধারণ রোগী বহন
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মহাখালী ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল, জাতীয় নিউরোসায়েন্সেস ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, বিশেষায়িত অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে মাঝেমধ্যে সাধারণ রোগী বহন করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক শেখ দাউদ আদনান কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
অ্যাম্বুলেন্স বুঝে পাওয়ার সময়কার পরিচালক ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞা বলেন, ভারত যখন অ্যাম্বুলেন্সগুলো দেয়, ভেতরে ভেন্টিলেশনসহ অন্যান্য সুবিধা আছে কি না, দেখা হয়নি। তাই সাধারণ রোগীর জন্যই এগুলো ব্যবহার করতে হচ্ছে। কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বেশির ভাগ সময় রাষ্ট্রপতি এলে ব্যবহার হয়। মাঝেমধ্যে রোগী আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করি। তবে তেল খরচ বেশি হওয়ায় অধিকাংশ সময় পড়েই থাকে।’
সব সুবিধা নেই
বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শজিমেক) এবং ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে দুটি অ্যাম্বুলেন্সই পড়ে আছে। শজিমেক হাসপাতালে মাঝেমধ্যে সাধারণ রোগীদের জন্য বহন করা হয়, আর কেবল ব্যাটারি ঠিক আছে কি না, চেক করতে স্টার্ট দিয়ে দেখা হয়।
উপপরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘এসব অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের জন্য যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার, তা নেই। লাইফ সাপোর্টের অ্যাম্বুলেন্স হলেও অনেক কিছুই ঘাটতি আছে। তাই মাঝেমধ্যে সাধারণ রোগীর জন্য ব্যবহার হলেও অধিকাংশ সময়ই পড়ে থাকে।’
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মুমিনুর রহমান বলেন, ‘লাইফ সাপোর্ট বলা হলেও যে ধরনের ফ্যাসিলিটিজ থাকা দরকার, তার কিছুই নেই। বিষয়টি নিয়ে সিএমএসডিকে ছয় মাস আগে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কিছু জানায়নি। তাই অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে আছে।’
সিএমএসডির পরিচালক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকারও বলেন, ‘যেকোনো যন্ত্র কেনার আগে তাতে সুযোগ-সুবিধা কি থাকে, সেটি দেখা হয়। কিন্তু উপহারের হওয়ায় এ ক্ষেত্রে আমরা দেখিনি। এ বিষয়ে আগের পরিচালক আরও ভালো বলতে পারবেন।’
তিন জেলায় ব্যবহার
সাধারণ রোগীদের জন্য ব্যবহার হচ্ছে জামালপুরে দেওয়া দুটি অ্যাম্বুলেন্স। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বুঝে পাওয়ার পর থেকে বেশির ভাগ সময় ব্যবহার করছি। কিন্তু অন্যান্য অ্যাম্বুলেন্সের চেয়ে তিন গুণ তেল বেশি লাগে।’
জামালপুরে গান্ধী আশ্রমের পরিচালনা কমিটির সদস্য হিল্লোল সরকার বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সটি আমাদের জন্য আশীর্বাদ। সাধারণ রোগী থেকে শুরু করে গুরুতর রোগীদের জন্যও ব্যবহার করা হচ্ছে।’
জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রাশেদ মোবারক জুয়েল বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সটি কেবল ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের সেবায় ব্যবহৃত হচ্ছে। উত্তরা মোটর্স সার্ভিসিং সেন্টার রাজশাহী শাখা থেকে একবার ফ্রি সার্ভিসিং করে নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ফ্রি সার্ভিসিংয়ের জন্য উত্তরার বগুড়া শাখায় নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।’
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্সটিতে নিয়মিত রোগী আনা-নেওয়া হচ্ছে।
যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার তাগিদ
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘এসব অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারে অভিজ্ঞদের নিয়ে একটা টিম করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে না দিয়ে টারশিয়ারি পর্যায়ে কাজে লাগানো দরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের পরিচালনায় একজন কনসালট্যান্ট ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারের মাধ্যমে এগুলো খুব ভালোভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।’ বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে ভারত সরকার অ্যাম্বুলেন্সগুলো দিয়েছে। আর কিছু না হোক তাদের সম্মানার্থেই এগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। নতুবা ভারতসহ বহির্বিশ্বে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে।’
প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন সাদ্দাম হোসেন (ঠাকুরগাঁও), সাজন আহম্মেদ পাপন (কিশোরগঞ্জ), মেহেরাব্বিন সানভি (চুয়াডাঙ্গা), শাপলা খন্দকার (বগুড়া), মো. আতাউর রহমান (জয়পুরহাট), জাহাঙ্গীর আলম (জামালপুর), মাইনউদ্দিন হাসান শাহেদ (কক্সবাজার) ও মো. শামীম রেজা (রাজবাড়ী)।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

কোভিড মহামারিকালে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সুবিধাসংবলিত আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সের অপরিহার্যতা ও অভাব ভালোভাবে টের পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ঘাটতি মেটাতে এগিয়ে আসে ভারত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০৯টি বিশেষায়িত অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেয় দেশটি।
১৮ ডিসেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

কোভিড মহামারিকালে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সুবিধাসংবলিত আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সের অপরিহার্যতা ও অভাব ভালোভাবে টের পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ঘাটতি মেটাতে এগিয়ে আসে ভারত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০৯টি বিশেষায়িত অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেয় দেশটি।
১৮ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

কোভিড মহামারিকালে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সুবিধাসংবলিত আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সের অপরিহার্যতা ও অভাব ভালোভাবে টের পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ঘাটতি মেটাতে এগিয়ে আসে ভারত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০৯টি বিশেষায়িত অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেয় দেশটি।
১৮ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

কোভিড মহামারিকালে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সুবিধাসংবলিত আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সের অপরিহার্যতা ও অভাব ভালোভাবে টের পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ঘাটতি মেটাতে এগিয়ে আসে ভারত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০৯টি বিশেষায়িত অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেয় দেশটি।
১৮ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫