Ajker Patrika

আসছে নুরের নতুন দল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭: ৫৮
আসছে নুরের নতুন দল

নির্বাচন কমিশনের তথ্যে দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪১টি। এ ছাড়া ১৮টি অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। তবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক (নুর) নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট ও শূন্যতার মধ্যে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভাবের কথা জানিয়েছেন তারা।

নতুন রাজনৈতিক দল সম্পর্কে নুরুল হক জানান, গণতন্ত্র ও দেশের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করে, আইনের শাসন নিয়ে সোচ্চার তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, ‘দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতার কারণেই স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যদি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা নিশ্চিত করতে চাই তবে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল দরকার।’ নতুন দলের নাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দুটি নাম আলোচনায় আছে। গণ অধিকার পরিষদ এবং বাংলাদেশ অধিকার পার্টি (বাংলাদেশ রাইটস পার্টি-বিআরপি)।’

নতুন দলের ব্যাপারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, ‘বিরোধিতার স্থান শূন্য হওয়ার কারণে রাজনৈতিক সংস্কৃতি গণতান্ত্রিক চেতনা হারিয়েছে। নতুন দল গঠন রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও অংশগ্রহণকে ত্বরান্বিত করবে। এ জন্য এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো উচিত।’ তিনি বলেন, ‘নতুন দলগুলোকে রাজপথে সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে জনসাধারণকে তুষ্ট করতে হবে। যৌক্তিক দাবি নিয়ে কাজ করতে হবে।’

দেশে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনতে আগে নিজ দল বা সংগঠনে গণতান্ত্রিকতার চর্চা করা দরকার জানিয়ে ভিপি নুর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, বিএনপির যে কার্যক্রম সেটা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এরা যে যখন ক্ষমতায় থাকে আইন, আদালত, প্রশাসনকে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করে, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে। কিন্তু এখন রাষ্ট্রের সংস্কার প্রয়োজন।’

দলে কারা থাকবেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে নুর বলেন, ‘অবশ্যই একটা বড় চমক দেখবেন। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরা এখানে থাকবেন। এখনই তাদের নাম সামনে আনতে পারছি না। অনেকেই প্রকাশ্যে কাজ করবে আবার কেউ কেউ এখনই সরাসরি যুক্ত হবেন না। তাদের মধ্যে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউ সামরিক কর্মকর্তা, পুলিশের কর্মকর্তা। যেহেতু সরকারের একটা ঝামেলা আছে এ কারণে অনেকেই এখন প্রকাশ্যে আসবেন না।’

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন বা পুরোনো কোনো দলের পক্ষেই নিজেদের মতো কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়াটা খুব একটা সহজ হবে না। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘নতুন দলগুলো ঢাকা কেন্দ্রিক কিছু তরুণদের উদ্যোগ। সারা দেশে পৌঁছাতে সময় লাগবে। তাদের কর্মসূচি কি হবে, সরকার তাদের দাঁড়াতে দেবে কিনা, তারা কাদের ওপর নির্ভরশীল, কোনদিকে আগাচ্ছে তা আগাম কিছু বলা যাবে না।’

নুরুল হক নুর জানান, সেপ্টেম্বর মাসের শেষে বা অক্টোবরের শুরুতেই দল গঠনের ঘোষণা আসবে। তিনি বলেন, ‘সামনে নির্বাচন কমিশন গঠনেরও বিষয় আছে। যদি নিবন্ধন না পাই তবে বিকল্প উপায়ে কীভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারব সে বিষয়েও চিন্তাভাবনা আছে। কিন্তু জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অবশ্যই আমরা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।’

রাজনৈতিক দলগুলোর বিকাশের ক্ষেত্রে যে ধরনের রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা উচিত তা বর্তমানে অনুপস্থিত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মো. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, ‘একটা কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থার মধ্যে একটা নতুন রাজনৈতিক দল এসে খুব বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারবে বা তার বিকাশ ঘটবে সেটা খুব সহজে বলা যায় না।’ বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারি অর্থায়নেও রাজনৈতিক দল গঠন হতে পারে বলেও তিনি মনে করেন। অধ্যাপক তানজিম বলেন, ‘বিএনপি-জামাতের রাজনৈতিক দুর্বলতা এবং তাদের প্রতি সরকারের কঠোর অবস্থানের ফলে বড় ধরনের রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এই শূন্যতায় দল গঠনের জন্য কেউ অর্থায়ন করতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘নতুন রাজনৈতিক দলগুলো কার দল, কারা এর পেছনে কাজ করছে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত